যে ক্যানসারগুলির প্রকৃতি বিরল, তাদের লক্ষণগুলিও বিরল। ছবি: শাটারস্টক
ক্যানসারের উপসর্গ সম্পর্কে এখনও সম্যক ধারণা সাধারণ মানুষের মধ্যে কম। বিশেষত, ক্যানসারের ধরন যদি বিরল প্রকৃতির হয়, তখন অনেক দিন পর্যন্ত কেউ কেউ বুঝতেই পারেন না উপসর্গগুলির গুরুত্ব। কিছু উপসর্গ আবার এতই সাধারণ, তা যে ক্যানসারের ইঙ্গিত হতে পারে, সে কথা বোঝাও মুশকিল হয়ে যায়! ফলে পেরিয়ে যায় চিকিৎসার সময়। রোগটি এতটাই ভয়াবহ যে, তা ছড়াতে খুব বেশি সময় লাগে না।
ঠান্ডা-গরম লেগে অনেকেরই গলা বসে যায়, খাবার গিলতে অসুবিধা হয়। এই সাধারণ উপসর্গও কিন্তু ক্যানসারের ইঙ্গিত দিতে পারে। খাদ্যনালিতে ক্যানসার হলে এই লক্ষণ দেখা দিতে পারে শরীরে। মুখ, গলা ও খাদ্যনালিতে হওয়া ফুয়েল টিউমারই এই ধরনের ক্যানসারকে ডেকে আনে।
কোন কোন উপসর্গ দেখলে সতর্ক হবেন?
১) এই ক্যানসারের ক্ষেত্রে প্রাথমিক পর্যায় শক্ত খাবার গিলতে অসুবিধা হয়। পরবর্তীতে তরল খাবার খেতে, এমনকি, ঢোক গিলতেও কষ্ট হতে পারে। ঠান্ডা লাগলে এমন উপসর্গ দেখা যায়, তবে সেই উপসর্গ যদি অনেক দিন ধরে চলে, তা হলে সাবধান হন।
২) বদহজমের সমস্যা ঘরে ঘরে লেগেই থাকে। যদি এই সমস্যায় দীর্ঘস্থায়ী হয়, তা হলে চিচিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে নেওয়াই ভাল। বুকে জ্বালাভাব, বার বার ঢেকুর ওঠা, পেটে ব্যথা ইত্যাদি উপসর্গ দেখা দিতে পারে খাদ্যানালির ক্যানসারের ক্ষেত্রেও।
৩) হঠাৎ ওজন কমে যাওয়া, খাবারে অরুচিও এই রোগের উপসর্গ।
৪) দীর্ঘ দিন ধরে কাশি, রাতে শ্বাসকষ্ট, গলা ও বুকের মাঝখানে ব্যথা, বিশেষ করে খাবার গিলতে গেলে সমস্যা হলে সতর্ক হোন।
ধূমপান, মদ্যপান ও তামাক সেবন খাদ্যনালিতে ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ায়। ছবি: শাটারস্টক
৫) সারা ক্ষণ বমি বমি ভাব, ক্লান্তিবোধ, দুর্বলতা। খাওয়ার সময়ে দম বন্ধ হয়ে আসাও কিন্তু ভাল লক্ষণ নয়।
৬) এই রোগে আক্রান্ত হলে একটানা কোষ্ঠকাঠিন্য বা ডায়েরিয়ার সমস্যাতেও ভুগতে হয়।
৭) গলার স্বরে বদল এলেও সতর্ক হোন।
যে ক্যানসারগুলির প্রকৃতি বিরল, তাদের লক্ষণগুলিও বিরল। তবে সব সময়ে মনে রাখতে হবে, উপসর্গ আছে মানেই সেটা ক্যানসার নয়। সেটি অন্য কোনও রোগেরও লক্ষণ হতে পারে। কিন্তু এই উপসর্গগুলি থাকলে পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে যাচাই করিয়ে নেওয়া শ্রেয় যে, আদৌ ক্যানসারের আশঙ্কা আছে কি না।
এই প্রকার ক্যানসারের ঝুঁকি কী ভাবে এড়ানো যায়?
ধূমপান, মদ্যপান ও তামাক সেবন খাদ্যনালিতে ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ায়। ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা ভীষণ জরুরি। তাই পুষ্টিকর খাদ্যাভাস করতে হবে, সঙ্গে শরীরচর্চাও জরুরি। ফুটন্ত চা, কফি পানের অভ্যাস ভাল নয়।