ঠান্ডা জল বা বরফের গোলা খেলে কী কী হতে পারে? ছবি: সংগৃহীত।
ব্যাগে সব সময়েই জলের বোতল থাকে। কিন্তু এই গরমে ব্যাগে রাখা জল ফুটন্ত বলে মনে হয়। বারে বারে জল খেয়ে গলা ভেজালেও যেন কিছুতেই শান্তি হয় না। রাস্তার পাশ দিয়ে আইসক্রিমের গাড়ি চলে গেলে কিংবা রাস্তার ধারের দোকানে ঠান্ডা জলের বোতল দেখলে প্রাণটা যেন আরও ছটফট করে ওঠে। কোনও মতে সেই লোভ সংবরণ করলেও বাড়ি ফিরে টেবিলে রাখা ঠান্ডা জল কিংবা ঠান্ডা শরবতে গলা ভেজানোর হাতছানি কিছুতেই এড়ানো যায় না। চিকিৎসকেরা বলছেন, যাঁদের ঠান্ডা লাগার ধাত রয়েছে, তাঁদের জ্বর-সর্দি-কাশির মতো সমস্যা হওয়া স্বাভাবিক। কিন্তু অনেকেই হয়তো জানেন না, অতিরিক্ত ঠান্ডা জল খেলে শরীরের স্বাভাবিক প্রক্রিয়াগুলিও ব্যাহত হতে পারে।
ফ্রিজ থেকে ঠান্ডা জল বার করে সরাসরি গলায় ঢাললে কী কী সমস্যা হতে পারে?
১) রোদ থেকে বাড়িতে ঢুকেই কনকনে ঠান্ডা জল গলায় ঢাললে আরাম হবে ঠিকই। কিন্তু, তা সাময়িক। চিকিৎসকেরা বলছেন, এই অভ্যাসে সংক্রমণজনিত জ্বর, সর্দি-কাশির সমস্যা দেখা দিতে পারে। গলায় ঘা-ও হতে পারে।
২) ঠান্ডা জল রক্তজালিকা, রক্তবাহিকাগুলির নমনীয়তা নষ্ট করে দেয়। ফলে সারা শরীরেই রক্ত চলাচল ব্যাহত হতে পারে। পেশিতে টান ধরা, পেটফাঁপা, কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যাও হতে পারে।
৩) গলায় সরাসরি ঠান্ডা জল ঢাললে তার সংলগ্ন পেশির নমনীয়তা নষ্ট হয়। খাবার গিলতে সমস্যা হয়। শ্বাসযন্ত্রের সমস্যা দেখা দিতে পারে। ঠান্ডা লাগার মতো সমস্যা তো আছেই, নাক বন্ধ, গলাব্যথা হতে পারে।
গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
৪) খুব ঠান্ডায় যেমন মাথাব্যথা হয়, তেমন খুব গরমেও মাইগ্রেনের সমস্যা বেড়ে যেতে পারে এই অভ্যাসে। ঠান্ডা জল খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সাইনাসের সমস্যাও বেড়ে যেতে পারে।
৫) যে হেতু ঠান্ডা জল খেলে রক্ত চলাচল ব্যাহত হয়, তাই খাবার হজম করতেও সমস্যা দেখা দিতে পারে। পুষ্টিবিদেরা তাই খাবার খাওয়ার পর ঠান্ডা জল খেতে বারণ করেন।
৬) হিমশীতল জল খাওয়ার অভ্যাস শরীরে মেদ জমার পরিমাণ বাড়িয়ে তুলতে পারে। যতই কসরত করুন না কেন, ক্যালোরি পোড়াতে বেশ বেগ পেতে হবে।
৭) ঠান্ডা-গরমে অনেকেরই দাঁত শিরশির করে। দাঁতের উপর যে এনামেলের পরত থাকে, তা অতিরিক্ত ঠান্ডায় নষ্ট হতে শুরু করে। তাই ঠান্ডা জল, আইসক্রিম খেলে সমস্যা আরও বাড়তে পারে।