গরমে বেশি ডিম খাওয়া আদৌ স্বাস্থ্যকর কি না, তা অনেকেই বুঝতে পারেন না। প্রতীকী ছবি।
পোচ, অমলেট কিংবা সেদ্ধ— ডিম যে রূপেই পাতে পড়ুক, বেশি ক্ষণ থালায় ফেলে রাখা যায় না। বাড়ির খুদে থেকে বয়স্ক সদস্য, ডিমের প্রতি সকলেরই অগাধ ভালবাসা। পাঁঠার মাংসের বদলে ডিম দিলে বেশি খুশি হবেন, এমন অনেকেই আছেন। চটজলদি কিছু বানিয়ে নেওয়ার দরকার হলে প্রথমেই মাথায় আসে ডিমের কথা। অনেকেই নিয়মিত একটি করে ডিম খান। শরীরে পুষ্টি জোগাতে ডিম খাওয়া জরুরি। একই মত চিকিৎসকেদেরও।
সকালের জলখাবারে ডিম থাকছে, সন্ধ্যায় প্রচণ্ড খিদের মুখে এগরোলে কামড় দেওয়া, আবার রাতে বাড়ি ফিরে রুটির সঙ্গে ডিম ভুজিয়া। রোজ না হলেও মাঝেমাঝে এক দিনে দু’-তিনটি ডিম খাওয়া হয়েই যায়। হজমশক্তি ভাল থাকলে একটার বেশি ডিম খেলে অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। তবে এখনও যে হেতু গরম যায়নি, ফলে এই মরসুমে বেশি ডিম খাওয়া আদৌ স্বাস্থ্যকর কি না, তা অনেকেই বুঝতে পারেন না।
গরমে এমনিতে হালকা খাবার খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকেরা। মাংসও ঘন ঘন খেতে বারণ করেন। পরিমাণেও রাশ টানার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। বরং সব্জি দিয়ে পাতলা মাছের ঝোল কিংবা ডাল খেতে বলেন। ডিমের বিষয়টি আলাদা। ডিম শরীরে তাৎক্ষণিক শক্তি জোগায়। চনমনে রাখে। প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়িয়ে তোলে। তাই বলে গরমে ইচ্ছেমতো ডিম খেয়ে যাওয়া কি ঠিক? পুষ্টিবিদ অর্পিতা দেব দত্ত বলেন, ‘‘গরমে ডিম খাওয়া যাবে না, এই ধারণা একেবারেই ভ্রান্ত। ডিম খেলে হজমের গোলমাল হওয়ার কোনও কারণ নেই। ভাল করে সেদ্ধ করে নিলে সালমোনেলা ব্যাক্টেরিয়া সংক্রমণেরও ভয় নেই। গরমের সঙ্গে ডিমের কোনও বিরোধ নেই।’’
গরমে ডিম খেলে যে ক্ষতির কোনও কারণ নেই, তা স্পষ্ট করলেন পুষ্টিবিদ। কিন্তু কী খাচ্ছি, তার চেয়েও কতটা খাচ্ছি, সে দিকে নজর রাখা জরুরি। গরমে ডিম খাওয়ার পরিমাণে কতটা রাশ টানা জরুরি? পুষ্টিবিদের কথায়, ‘‘আসলে পরিমাণটা অনেক কিছুর উপর নির্ভর করে। যাঁরা নিয়মিত শরীরচর্চা করেন, খেলাধুলোর সঙ্গে যুক্ত কিংবা অক্লান্ত শারীরিক পরিশ্রম করেন, তাঁদের পর্যাপ্ত প্রোটিন খাওয়া জরুরি সে ক্ষেত্রে। সেই প্রোটিনের চাহিদা পূরণ করতে দিনে দু’-তিনটি ডিম খান অনেকেই। কিন্তু অনেকের আবার শারীরিক পরিশ্রম কম। শরীরচর্চাও করেন না। সে ক্ষেত্রে দিনে একটির বেশি ডিম না খাওয়াই ভাল। বয়স, উচ্চতা, শারীরিক পরিশ্রমের পরিমাণ এবং আরও বেশ কয়েকটি বিষয় জড়িয়ে থাকে ডিম খাওয়ার সঙ্গে।’’