প্রয়োজনের তুলনায় বেশি মাত্রায় প্রোটিন শরীরে গেলে বিভিন্ন ধরনের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হতে পারে। ছবি: সংগৃহীত
শরীর সুস্থ রাখতে রোজকার খাদ্যতালিকায় নির্দিষ্ট পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, ফ্যাট— দরকার হয় সব কিছুরই। দ্রুত ওজন কমানোর আশায় অনেকেই পুষ্টিবিদদের সঙ্গে পরামর্শ না করেই ডায়েট করতে শুরু করেন। আর এই ডায়েট করতে গিয়ে অনেকেই প্রয়োজনের চেয়ে বেশি প্রোটিন খেয়ে ফেলেন। তবে সাবধান! প্রয়োজনের তুলনায় বেশি মাত্রায় প্রোটিন শরীরে গেলে বিভিন্ন ধরনের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হতে পারে। পুষ্টিবিদদের মতে, প্রতি দিন আপনার শরীরে যতটা পরিমাণ প্রোটিন দরকার তার বেশি প্রোটিন না খাওয়াই ভাল।
শরীরে কতটা প্রোটিন দরকার তা নির্ভর করে আপনার বয়স, লিঙ্গ, এবং আপনি আদৌ শরীরচর্চা করেন কি না— তার উপর। চিকিৎসকদের মতে, একজন প্রাপ্তবয়স্কের প্রতি কেজি ওজনে ০.৮ গ্রাম প্রোটিনের দরকার হয়। যাঁরা ভারী শরীরচর্চা করেন, তাঁরা প্রতি কেজি ওজন পিছু ১.৩ গ্রাম থেকে ১.৬ গ্রাম প্রোটিন খেতে পারেন।
শরীরে প্রোটিনের মাত্রা বেশি হয়ে গেলে শরীর নিজেই জানান দেবে সে কথা। কী ভাবে?
১) অতিরিক্ত প্রোটিন শরীরে জলের চাহিদা বা়ড়িয়ে দেয়। প্রোটিনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে পর্যাপ্ত পরিমাণে জল না খেলে সারা দিন তৃষ্ণার্ত বোধ করতে পারেন। অতিরিক্ত প্রোটিন গ্রহণ করলে রক্তে নাইট্রোজেনের মাত্রা বেড়ে যায়। কিডনির উপর চাপ পড়ে। কিডনি প্রস্রাবের মাধ্যমে শরীর থেকে নাইট্রোজেন বার করে দেওয়ার চেষ্টা করে। ফলে শরীরে জলের ঘাটতি হয়।
প্রতীকী ছবি
২) পর্যাপ্ত পরিমাণে জলের অভাবে দুর্বলতা ও মাথাব্যথা হতে পারে। মাথা ঘোরাও অতিরিক্ত প্রোটিন খাওয়ার লক্ষণ। উচ্চমাত্রার প্রোটিন ডায়েট সাময়িক ভাবে আপনার ওজন কমাতে সাহায্য করলেও, পরে বাড়িয়ে দেবে আপনার ওজন যা আর কমতে চাইবে না!
৩) কার্বোহাইড্রেট কমিয়ে আপনি যদি অধিক মাত্রায় প্রোটিন খেতে শুরু করেন তা হলে শরীরে কিটোসিস দেখা দেবে। এর ফলে আপনার মুখে দুর্গন্ধ হবে। এই দুর্গন্ধ শরীরের ভিতর থেকে আসে তাই দাঁত মেজে বা মাউথ ফ্রেশনার ব্যবহার করেও গন্ধ সহজে দূর হয় না। যা আপনার জন্য অপ্রীতিকর হয়ে দাঁড়াবে।
৪) অতিরিক্ত প্রোটিন ও কম কার্বোহাইড্রেটযুক্ত খাবার খেলে শরীরে ফাইবারের পরিমাণ কমে যায়। কম ফাইবার শরীরে গেলে হজমের সমস্যা, কোষ্টকাঠিন্য দেখা যায়। প্রোটিন হিসেবে দুগ্ধজাতীয় খাবার অতিরিক্ত খেলে ডায়ারিয়াও হতে পারে।
৪) কম কার্বোহাইড্ৰেট এবং উচ্চ মাত্রায় প্রোটিন ডায়েটের ফলে কিডনির ক্ষতি হয়। হার্টের সমস্যাও বাড়াতে পারে প্রোটিন। বিশেষ করে রেড মিট, দুগ্ধজাতীয় খাবার অতিরিক্ত খেলে দেখা দেবে হার্টের সমস্যা।
৬) হাই প্রোটিন ডায়েট ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ায়। প্রসেসড মাংস অতিরিক্ত খেলে স্তন ক্যানসার, মূত্রথলিতে ক্যানসার হতে পারে।
৭) অত্যধিক প্রোটিন শরীরে গেলে আপনার ওজন বেড়ে যেতে পারে। তাই বুঝেশুনে প্রোটিন খাওয়াই ভাল।