ফ্যাটি লিভারে আক্রান্ত? রোজের অভ্যাসে কোন বদলগুলি না আনলেই নয়। ছবি: শাটারস্টক।
জীবনযাত্রায় ব্যাপক অনিয়মের ফলে বিশ্ব জুড়েই ফ্যাটি লিভারে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। যকৃৎ বা লিভার আমাদের শরীরের ভিতরের অঙ্গগুলির মধ্যে সবচেয়ে বড়। আমরা যা খাই, তা হজম করতে, খাবার থেকে পাওয়া শক্তি সঞ্চয় করতে আর শরীর থেকে বর্জ্য পদার্থ বার করার মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজের দায়িত্ব থাকে লিভারের উপরেই। এই লিভারের কোষে নানা কারণে ফ্যাট জমে। খুব অল্পস্বল্প ফ্যাট জমলে তা স্বাভাবিক। কিন্তু চর্বির পরিমাণ বাড়লেই ঝামেলা।
ফ্যাটি লিভার দু’ধরনের হয়— অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার ডিজ়িজ় (এএফএলডি), যা মূলত মদ্যপানের কারণেই হয়। আর নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার ডিজ়িজ় (এনএএফএলডি), যা জীবনযাপনে অন্যান্য ভুলের কারণে হয়। তাই মদ্যপান না করলেই যে ফ্যাটি লিভার হবে না, এই ধারণা ভুল। অনেকেই আবার মনে করেন, মোটা হলেই বুঝি এই রোগ বাসা বাঁধে শরীরে। তবে এই ধারণাও ভুল, রোগারাও এই রোগে আক্রান্ত হতে পারেন। রোজের নানা অভ্যাসের জেরে অনেক অল্পবয়সিও এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন।
লিভার ভাল রাখতে কোন কোন নিয়ম মেনে চলতে হবে?
১) সপ্তাহে অন্তত ১৫০ মিনিট হাঁটাহাঁটি করুন। খুব ধীরে নয়, মাঝারি কিংবা দ্রুত গতিতে হাঁটতে হবে। খুব ভাল হয়, যদি একটু সময় বার করে জগিং বা রানিং করতে পারেন।
২) ধূমপান ও মদ্যপান বন্ধ করুন।
৩) চিনি খাওয়া কমিয়ে দিন। চিনিযুক্ত কোনও পানীয়, নরম পানীয় এড়িয়ে চলুন।
৪) উচ্চ তাপমাত্রায় ভাজা যে কোনও খাবার থেকে দূরে থাকুন। চিকেন পকোড়া, ফিশ ফ্রাই, ফুচকা— যে কোনও ধরনের বাইরের খাবার খাওয়ার আগে সতর্ক হোন। রান্নায় নুনের ব্যবহার কমিয়ে আনতে হবে। কাঁচা নুন খাওয়া যাবে না। প্রক্রিয়াজাত খাবারে অনেক বেশি মাত্রায় নুন থাকে । সুতরাং, সেই খাবারও এড়িয়ে চলুন।
৫) সাদা ভাত, ময়দার তৈরি রুটি, পাউরুটি ও পরোটা, নান, নুডলস, পাস্তা ইত্যাদি খাবার লিভারে ফ্যাটের মাত্রা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। তাই এগুলি খাওয়ার মাত্রাও কমিয়ে আনুন।
৬) রেড মিট, যেমন গরু, শুয়োর কিংবা খাসির মাংস খাওয়া কমিয়ে ফেলুন। মুরগির মাংস খেতে পারেন।
৭) ঘুম না হলে ওবেসিটির সমস্যা বাড়ে। আর ওবেসিটির হাত ধরেই ফ্যাটি লিভার বাসা বাঁধে শরীরে। তাই দিনে অন্তত ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা ঘুমোনোর অভ্যাস করুন।