সুস্থ থাকতে হলে জলের সঙ্গে কোনও রকম আপস করলে চলবে না। ছবি: সংগৃহীত
আমাদের প্রত্যেকেরই দিনে কম-বেশি দু’ থেকে তিন লিটার জল খাওয়া উচিত, যাতে শরীর তার প্রয়োজনীয় জল পায় এবং দূষিত টক্সিন বেরিয়ে যায়। কিন্তু কর্মব্যস্ত জীবনে অত মেপে জল খাওয়া আর হয়ে ওঠে না! সুস্থ থাকতে হলে জলের সঙ্গে কোনও রকম আপস করলে চলবে না। এ ক্ষেত্রে অনেকেই ভরসা রাখেন ‘ডিটক্স ওয়াটার’-এর উপর।
এই জল হজম শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে, কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যার জন্যও এটি ভাল দাওয়াই। তা ছাড়া ভিটামিনে ভরপুর এই জল কিন্তু ত্বকেরও পরম বন্ধু। এই ফল ভেজানো জল খাওয়ার ফলে পেট ভর্তি থাকে, খিদেও কম পায়। ফলস্বরূপ ওজন ঝরে অনায়াসেই।
তবে কোনও কিছুই অতিরিক্ত খাওয়া শরীরের জন্য ভাল নয়। এমনকি জলও নয়। সঠিক নিয়ম মেনে এবং সঠিক মাত্রায় না খেলে ‘ডিটক্স ওয়াটার’-এও শরীরের ক্ষতি হতে পারে।
১) জল খাওয়া অবশ্যই ভাল। কিন্তু প্রত্যেকের ওজন আর কার্যক্ষমতার উপর নির্ভর করে শরীরে জলের চাহিদা। কে কতটুকু জল খাবেন, তা নির্ভর করবে ওই জলের চাহিদার উপরেই। বেশ কিছু অসুখে জলের পরিমাণ কমাতে হয়। বেশি জল সে ক্ষেত্রে শরীরেই জমে যায়।
প্রতীকী ছবি
২) প্রয়োজনের তুলনায় বেশি ডিটক্স ওয়াটার খেলে রক্তে সোডিয়ামের পরিমাণ কমতে থাকে। অতিরিক্ত প্রস্রাবের ফলে রক্তে সোডিয়ামের পরিমাণ কমে গেলে ক্লান্তি ভাব আসে। সারা দিন ঘুম ঘুম ভাব, বমি ভাব, মাথার যন্ত্রণা হতে থাকে। শরীরের কার্যক্ষমতাও কমে যায়।
৩) ওভারহাইড্রেশনের কারণে শরীরের কোষগুলি ফুলে যেতে থাকে। মস্তিষ্কের কোষও ফুলতে থাকে। এর থেকে স্ট্রোক পর্যন্ত হওয়ার আশঙ্কাও থাকে।
৪) ডিটক্স ওয়াটার অতিরিক্ত পান করলে শরীরে ভিটামিন ও খনিজের ঘাটতি হতে পারে। তাই রোজের খাদ্যতালিকায় যেন পর্যাপ্ত মাত্রায় ভিটামিন ও খনিজ থাকে সে দিকে বিশেষ নজর রাখুন।
৫) ডিটক্স ওয়াটার বেশি খেলে খিদে কম পায়। খাওয়ার ইচ্ছেও চলে যায়। তাই শরীর পর্যাপ্ত মাত্রায় পুষ্টি পায় না। খালি পেটে গ্যাসের সমস্যা বাড়ে, পেট ফুলে যায়। শরীরে অস্বস্তিবোধ হয়।
৬) ডিটক্স ওয়াটার সাময়িক ভাবে ওজন ঝরাতে সাহায্য করে। তবে এ ক্ষেত্রে বিপাকহার কমে যায়। শরীরে পেশিগুলি দুর্বল হয়ে পড়ে। এই ওজন হ্রাস দীর্ঘস্থায়ী নয়।
৭) পেশিতে ব্যথা, বুকে ব্যথা, লিভারের সমস্যা পর্যন্ত হতে পারে। প্রয়োজনের তুলনায় বেশি জল খেলে হার্টের উপরেও চাপ পড়তে থাকে। ফলে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে।