স্ক্রাব টাইফাস
করোনার আতঙ্ক গ্রাস করেছে গোটা বিশ্বকে। তার উপরে ক্রমাগত বদলাচ্ছে আবহাওয়া। ঘরে ঘরে শুরু হয়েছে সর্দি জ্বরের সমস্যা। এরই মধ্যে আরও এক অজানা জ্বর চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ধুম জ্বর, গা-হাত পা ব্যথা, অথচ কোনও টেস্টেই ধরা পড়েনি কিছু। এমন ঘটনা নিয়ে ডাক্তারের কাছে আসছেন বহু রোগী। যা দেখে অনেক ক্ষেত্রেই স্তম্ভিত হয়ে যাচ্ছেন তাঁরাও। দেশজুড়ে এই আতঙ্কের নাম স্ক্রাব টাইফাস, জানাচ্ছেন অ্যাপোলোর কনসাল্টিং ফিজিশিয়ান শিবব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়।
‘স্ক্রাব টাইফাস’ শব্দটি এসেছে গ্রিক শব্দ typhus থেকে যার অর্থ হল ধোঁয়াটে বা অস্পষ্ট। এঁটুলি পোকার মতো দেখতে ট্রম্বিকিউলিড মাইটস বা টিক-এর মতো পরজীবী পোকার কামড় থেকে এই রোগের জীবানু মানবদেহে ছড়ায়। এই পোকাগুলির আকার ০.২ মিলিমিটার থেকে ০.৪ মিলিমিটার পর্যন্ত হয়।
কোথায় থাকে এই পোকা?
সাধারণত গ্রাম বাংলার কৃষি জমিতে এই ধরনের পোকা দেখা যায়। যদিও শহুরে এলাকায় বাড়ি বা অ্যাপার্টমেন্টে ছোট বুশ, ঝোপ-ঝাড়, গাছপালা কিংবা পোষ্যের গায়ে এই ধরনের পোকার দেখা হামেশাই মেলে।
প্রাথমিকভাবে এই পোকা কামড়ালে তেমন কিছু ব্যথা অনুভব হয় না। তবে পরে তা শরীরের ভিতরে গিয়ে সমস্যার সৃষ্টি করে।
এই রোগের মূল লক্ষণগুলি কী কী?
সাধারণ জ্বরের মতোই এই রোগেও যে লক্ষণগুলি দেখা যায়, সেগুলি হল -
এগুলি ছাড়াও হার্টের সমস্যা, কিডনির সমস্যা, এমনকী পেটের সমস্যাও দেখা যায়।
কী ভাবে এই রোগ ধরা হয়?
উপরের লক্ষণগুলি থাকলেই চিকিৎসকেরা বেশ কিছু পরীক্ষা করাতে দেন। যদিও সমস্ত ক্ষেত্রেই পরীক্ষার ফলে সেভাবে কিছু ধরা পড়ে না। চিকিৎসক শিবব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় জানাচ্ছেন এই সমস্ত ক্ষেত্রে রোগীকে ভালভাবে নিরীক্ষণ করাটা খুব জরুরি। বেশ কিছু ক্ষেত্রে রোগীর শরীরে পোকা কামড়ানোর দাগ পাওয়া যায়। এগুলিকে বলে এসকার। যা দেখেই সাধারণত রোগীদের শণাক্ত করা হয়ে থাকে।
এই রোগের চিকিৎসার উপায় কী কী?
চিকিৎসক শিবব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতে, অ্যান্টিবায়োটিক ডক্সিসাইক্লিইন এই রোগের একমাত্র ওষুধ। ইতিমধ্যেই কোভিডের চিকিৎসায় এই ওষুধটি বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
সব শেষে চিকিৎসকের পরামর্শ, সতর্ক থাকুন। জ্বর হলেই চিকিৎসকের সঙ্গে আলোচনা করুন। মনে রাখবেন, স্ক্রাব টাইফাস কিন্তু মারণ রোগ নয়। সঠিক সময়ে সঠিক চিকিৎসা হলে রোগী সম্পূর্ণভাবে সেরে ওঠে।