কী ভাবে কমবে মানসিক চাপ? ছবি: শাটারস্টক
সুস্থ জীবনযাপনের জন্য নীরোগ শরীরের পাশাপাশি প্রয়োজন সুন্দর মানসিকতার। কিন্তু প্রতি দিন ঘরে-বাইরে নানা রকমের সমস্যা সামাল দিতে উদ্বেগ বাড়ছে বই কমছে না। ব্যক্তিগত জীবনের কথা বাদ দিলেও প্রতিদিন কর্মক্ষেত্রে ইঁদুরদৌড়, প্রতিযোগিতা এবং কাজের পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে উঠতে না পারা, কাজ নিয়ে বেশি চিন্তা করার ফলে উদ্বেগ বাড়তে বাড়তে রীতিমতো ভয়ের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা এমন একটি জিনের খোঁজ পেয়েছেন, যা মূলত উদ্বেগজনিত অনুভূতির জন্য দায়ী। বিজ্ঞানীরা লক্ষ করেছেন যে, জিনের পরিবর্তনের মাধ্যমে উদ্বেগের মাত্রা কমানো সম্ভব। যাঁদের মানসিক স্বাস্থ্য ভাল নেই, তাঁদের জন্য বেশ লাভজনক হতে পারে এই আবিষ্কার।
ব্রিস্টল এবং এক্সেটার বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের নেতৃত্বে গবেষণাটি ‘নেচার কমিউনিকেশন’-এ প্রকাশিত হয়েছে। সাধারণত প্রতি চার জনের মধ্যে এক জন জীবনে কখনও না কখনও উদ্বেগজনিত ব্যাধি, মানসিক চাপে ভুগেছেন। গুরুতর মনস্তাত্ত্বিক আঘাত মস্তিষ্কের অ্যামিগডালায় নিউরনে জেনেটিক, জৈব রাসায়নিক এবং রূপগত পরিবর্তন ঘটাতে পারে। এর প্রভাবে প্যানিক অ্যাটাক এবং পোস্ট-ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিজ়অর্ডার-সহ উদ্বেগজনিত ব্যাধিগুলির সূত্রপাত ঘটায়।
গবেষকরা দেখেছেন এমআইআর ৪৮৩ ৫পি নামক অণুর মাত্রা মস্তিষ্কে বাড়াতে পারলে উদ্বেগ কমবে। ছবি: শাটারস্টক
উদ্বেগ কমানোর যে সব ওষুধ বাজারে পাওয়া যায়, সেগুলির কার্যকারিতা কম, ওষুধের প্রভাব পড়তে বেশ খানিকটা সময় লেগে যায়। এই গবেষণায় বিজ্ঞানীরা মস্তিষ্কের আণবিক অদল-বদলকে শনাক্ত করতে চেয়েছিলেন, যা উদ্বেগকে প্রভাবিত করে। তাঁরা এমআইআরএনএ নামে পরিচিত অণুর একটি গ্রুপের উপর পরীক্ষা চালান। মানব মস্তিষ্কে পাওয়া অণুর এই গুরুত্বপূর্ণ গ্রুপটি অ্যামিগডালায় সেলুলার প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করে এবং একাধিক লক্ষ্য প্রোটিনকেও নিয়ন্ত্রণ করে। গবেষকরা দেখেছেন এমআইআর ৪৮৩ ৫পি নামক অণুর মাত্রা মস্তিষ্কে বাড়াতে পারলে উদ্বেগ কমবে। এ বার কী ভাবে এই মস্তিষ্কের জিনে এই অণুর মাত্রা বাড়ানো যাবে, সে দিকেই গবেষণা এগোচ্ছেন। তাঁদের বিশ্বাস, এই অণুর খোঁজ পাওয়ার পর মনোবিদদের চিকিৎসা করতে বেশ সুবিধা হবে।