Root Canal Surgery

দাঁত ও মাড়ির যত্ন নেবে রোবট? রুট ক্যানাল করতে যন্ত্রণাহীন অস্ত্রোপচারের আশ্বাস!

রুট ক্যানালের গতানুগতিক পদ্ধতির বদলে রোবটিক্সের প্রয়োগ করতে চলেছেন গবেষকেরা। নতুন পদ্ধতি আবিষ্কার বেঙ্গালুরুর বিজ্ঞানীদের হাত ধরে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ জুন ২০২৪ ১১:২৭
Share:

রুট ক্যানালের আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতি আবিষ্কার করেছেন ভারতীয় গবেষকেরা। ছবি: ফ্রিপিক।

দাঁতের সমস্যায় রুট ক্যানালের অস্ত্রোপচার খুবই পরিচিত চিকিৎসা পদ্ধতি। তবে এই অস্ত্রোপচার সহজ নয়। রুট ক্যানাল করাতে হবে শুনলেই রোগীর ভয় ধরে যায় মনে।

Advertisement

অনেকেই ভাবেন, এই পদ্ধতি খুবই যন্ত্রণাদায়ক। গতানুগতিক পদ্ধতিতে চিকিৎসাটি জটিল ও সময়সাপেক্ষ। তবে এই চিকিৎসা পদ্ধতিকে অনেক সহজ ও যন্ত্রণাহীন করে দিতে পারে রোবট। শুনতে অবাক লাগলেও ঘটনাটি সত্যি।

আধুনিক চিকিৎসার জগতে রোবটিক্সের এখন খুবই রমরমা। রোবটিক্সের প্রযুক্তি ব্যবহার করে এখন অনেক জটিল অস্ত্রোপচারও হচ্ছে। হার্ট, কিডনির যে কোনও দুরারোগ্য ব্যাধির অস্ত্রোপচারেও রোবটিক্সের সাহায্য নিচ্ছেন চিকিৎসকেরা। দাঁতের যে কোনও সমস্যা ও তার সমাধানেও এই প্রযুক্তি ব্যবহারেরই পথে চিকিৎসক ও বিজ্ঞানীরা।

Advertisement

বেঙ্গালুরুর ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্স (আইআইএসসি)-এর গবেষকরা আধুনিক প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে রুট ক্যানালের চিকিৎসা করছেন। দাঁতের গোড়ায় সংক্রমণ হলে বা গভীর ক্ষত তৈরি হলে তখন রুট ক্যানালের চিকিৎসা করতে হয়।

দাঁতের দু'রকম সমস্যা বেশি দেখা যায়। দাঁতের ক্ষয়জনিত রোগ এবং মাড়ির সমস্যা। দাঁতের ক্ষয় হয় মূলত বিভিন্ন রকম খাবার বেশি সময় দাঁতে জমে থাকে বলে। খাবারে ব্যাক্টেরিয়া সংক্রমণের ফলে অ্যাসিড তৈরি হয় এবং দাঁতের উপরের অ্যানামেল অংশ ক্ষয় হতে শুরু করে। পরে সেখানে ক্যাভিটি বা গর্ত হয়ে যায়।

ক্যাভিটি যদি দাঁতের অনেক গভীর পর্যন্ত পৌঁছে যায়, তখন সেটিকে আর ফিলিং করে সারিয়ে তোলা সম্ভব হয় না। দরকার পড়ে রুট ক্যানালের। এই পদ্ধতিতে দাঁতের ক্ষতিগ্রস্ত অংশটি বার করে দিয়ে সেখানে একটা ‘ইনার ফিলিং মেটিরিয়াল’ দিয়ে দেওয়া হয়। শেষে ক্রাউন বা ক্যাপ পরানো হয়। বেঙ্গালুরুর গবেষকরা দাবি করেছেন, এই সম্পূর্ণ পদ্ধতিটাই রোবটিক্সের সাহায্যে করা যাবে। পদ্ধতির নাম ‘হেলিকাল ন্যানোবট।

গবেষকরা এমন জিনিস তৈরি করেছেন, যা সিলিকন ডাইক্সাইড দিয়ে তৈরি। যার বাইরেটায় আয়রনের আস্তরণ রয়েছে। এগুলির চুম্বকীয় শক্তি রয়েছে। মাড়ির অনেক গভীরে গিয়ে ফাঁকফোকর থেকে ময়লা টেনে বার করতে পারে এটি।

গবেষকরা বলছেন, আগে আলট্রাসাউন্ড দিয়ে দাঁতের সংক্রমণ সারানো হত। কিন্তু আলট্রাসাউন্ড বা লেজ়ার রশ্মি ৮০০ মাইক্রোমিটারের বেশি ঢুকতে পারত না। বেঙ্গালুরুর গবেষকদের তৈরি হেলিকাল ন্যানোবট সেখানে ২০০০ মাইক্রোমিটার অবধি চলে যেতে পারে। দাঁতের ক্ষয় হয়ে যাওয়া অংশে যে ব্যাক্টেরিয়া জন্মায়, সেগুলিকে নষ্ট করে দিতে পারে। আলাদা করে কোনও রাসায়নিক প্রয়োগ করার বা দাঁতের গোড়ায় গিয়ে খোঁচাখুঁচি করার দরকার পড়ে না। ফলে রোগীর যন্ত্রণাও কম হয় আর কোনও রকম পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ভয়ও থাকে না। সাধারণ রুট ক্যানাল করলে দাঁত দিয়ে খাবার খাওয়ার সময় সতর্ক থাকতে হয়। শক্ত খাবার ভাঙতে গেলে দাঁত ভেঙে যেতে পারে। কিন্তু এই পদ্ধতিতে দাঁতের চিকিৎসা করলে তেমন ভয় থাকবে না বলেই দাবি গবেষকদের। অস্ত্রোপচারের পরে দাঁতের ব্যথায় কষ্টও পেতে হবে না রোগীকে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement