দীপিকার টোটকা কি কাজে লাগবে হবু মায়েদের? ছবি: সংগৃহীত।
সব মেয়ের কাছে মা হয়ে ওঠার যাত্রাপথ খুব সহজ হয় না। ভ্রূণ আকারে বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে হবু মায়েদের শারীরিক-মানসিক নানা ধরনের পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। পুষ্টিকর খাওয়াদাওয়া, পর্যাপ্ত বিশ্রামের পাশাপাশি তাই নিয়মিত শরীরচর্চা করার পরামর্শ দেন চিকিৎসক, পুষ্টিবিদেরা। অনেকেই আবার অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় ব্যায়াম করতে ভয় পান, যদি হবু সন্তানের কোনও ক্ষতি হয়ে যায়, এই চিন্তাই মনে চলতে থাকে সর্ব ক্ষণ। যোগাসন প্রশিক্ষক অনুপ আচার্য বলেন, ‘‘অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় যোগাসন করা ভীষণ জরুরি। শরীর ও মনকে চাঙ্গা রাখার জন্য যোগাসনের বিকল্প নেই। তবে অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় কিন্তু সব যোগাসন করা যায় না। কিছু নির্দিষ্ট আসন আছে, যা এই সময়ে করা যেতে পারে। আবার সন্তান জন্মের পর শরীরকে দ্রুত স্বাভাবিক হয়ে উঠতে কিন্তু ভিন্ন যোগাসন করার প্রয়োজন আছে। তাই প্রশিক্ষকের নির্দেশ ছাড়া এই হবু মায়েদের যোগাসন না করাই ভাল।’’
আগামী সেপ্টেম্বর মাসে রণবীর সিংহ ও দীপিকা পাড়ুকোনের প্রথম সন্তান আসছে। সমাজমাধ্যমে গত মার্চ মাসেই এ কথা ঘোষণা করেছিলেন রণবীর। অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় দিব্যি ছবির শুটিং থেকে প্রচার কাজ— সবই সামলাচ্ছেন অভিনেত্রী। এরই মাঝে সময় পেলে রণবীরের সঙ্গে ‘বেবি মুন’-এও বেরিয়ে পরছেন তিনি। সম্প্রতি দীপিকা নিজের ইনস্টাগ্রামে একটি ছবি ভাগ করে নিয়েছেন, যেই ছবির ক্যাপশনে অভিনেত্রী নিজেকে ভালবাসার কথা বলেছেন।
দীপিকা ইনস্টাগ্রামে যে ছবি ভাগ করে নিয়েছেন, তাতে দেখা যাচ্ছে তিনি বিপরীত করণী আসন অভ্যাস করছেন। অভিনেত্রী লিখেছেন, ‘‘আমি ব্যায়াম করতে ভীষণ পছন্দ করি। আমি কেবল মাত্র ভাল দেখতে লাগবে বলে ব্যায়াম করি না, আমি ব্যায়াম করি ভিতর থেকে সুস্থ থাকার জন্য। ব্যায়াম-যোগাসন আমার জীবনের একটি অঙ্গ হয়ে গিয়েছে কবে থেকে, তা আমার নিজেরও মনে নেই। যে দিন ভারী শরীরচর্চা করার সময় পাই না, সে দিনও নিজের জন্য ৫ মিনিট বার করি, কিছু যোগাসন অভ্যাস করি। দীর্ঘ বিমানযাত্রার পর এই ৫ মিনিটের রুটিন মেনে চলা ভীষণ লাভজনক।’’
পোস্টে নিয়মিত বিপরীত করণী আসন করার কথা বলেছেন দীপিকা। তবে এই আসন কি আদৌ হবু মায়েদের জন্য উপকারী? যোগ প্রশিক্ষক অনুপ বলেন, ‘‘ঘুম থেকে ওঠা থেকে রাতে ঘুমোতে যাওয়া পর্যন্ত আামরা যে কাজ করি সেই সময় মাথা উপরে আর পা নীচেই থাকে। এর ফলে সারা শরীরে রক্তপ্রবাহ একই দিকে হয়, শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে রক্ত সঞ্চালন ভাল হয় না। বিপরীত করণী করার সময় রক্ত পা থেকে মাথার দিকে প্রবাহিত হয়। রক্তের পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের খনিজ, অক্সিজ়েন— এ সবের প্রবাহ সারা শরীরে সমান ভাবে হয়। এই আসনের ফলে সংবহনতন্ত্র ও প্রজননতন্ত্রের কর্মক্ষমতাও বাড়ে।’’
এই আসনের ক্ষেত্রে আপনার শরীরের অর্ধেক অংশ থাকে মাটিতে আর কোমর থেকে পা পর্যন্ত অংশ থাকে দেওয়ালে। এই আসনটি আপনার শরীর ও মন দুইয়ের জন্যই ভাল। রোজের ব্যস্ত জীবনে যখন মানসিক চাপ এত বাড়ছে, তখন নিয়ম করে ৫ মিনিট এই আসনটি করলেই আপনার শরীর চাঙ্গা থাকবে। স্নায়ুকে শান্ত রাখা থেকে রোগ প্রতিরোধ শক্তি বৃদ্ধি করা— সবেতেই এই আসনের জুড়ি মেলা ভার। অন্তঃসত্ত্বা অবস্থাতেও এই আসন নিয়মিত অভ্যাস করতে পারেন। তবে গ্লকোমা থাকলে কিংবা উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা থাকলে এই আসন করার আগে প্রশিক্ষকের পরামর্শ অবশ্যই নিতে হবে।
অনুপ বলেন কেবল বিপরীত করণীই নন, অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় সেতুবন্ধাসন, মালাসন, ভদ্রাসনের মতো ভঙ্গিও বেশ উপকারী। তবে সব ক্ষেত্রেই আগে প্রশিক্ষকের পরামর্শ ও নজরদারি জরুরি।