Pet Cat

বিড়াল অতিমারি ছড়াতে পারে! ঘরের ভিতরে থাকা পোষ্যদের থেকে কি ভয় পাওয়া উচিত?

বিড়ালের শরীরে এমন এক বিশেষ ধরনের ‘সেলুলার রিসেপ্টর’ রয়েছে, যা বার্ড ফ্লু-র ভাইরাসের রূপান্তর ঘটিয়ে তাকে মনুষ্যকূলকে আক্রান্ত করার মতো ক্ষমতা জোগাতে পারে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৮:৪৯
Share:

ছবি: সংগৃহীত।

একই বিছানায় পোষ্য বিড়ালকে পাশে নিয়ে ঘুমোন বহু বিড়ালপ্রেমী। কারণ তাঁদের কাছে আদরের পোষ্য সন্তানের মতোই প্রিয়। তুলতুলে নরম, খানিকটা তুলোর বলের মতো দেখতে সেই পোষ্যেরাও আদুরে ভাবভঙ্গিতে আদর ফিরিয়ে দিতে দ্বিধা করে না। ‘মনিবে’র গায়ে, মাথায়, কাঁধে চেপে কিংবা পায়ে-পায়ে ঘুরে, আদুরে ডাকে, মান-অভিমানে ভালবাসা আদায় করে নেয় তারাও। এমন আদুরে সম্পর্ক এক বার তৈরি হলে, তা কোনও মূল্যেই ছাড়তে চাইবেন না বিড়ালের ‘বাবা-মা’য়েরা। কিন্তু সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে, বিড়াল, বিশেষ করে পোষ্য বিড়াল মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক হতে পারে। এমনকি, অতিমারি ছড়ানোর ‘কারখানা’ হিসাবেও কাজ করতে পারে বি়ড়াল।

Advertisement

টেলর অ্যান্ড ফ্রান্সিস অনলাইন নামে গবেষণা বিষয়ক একটি পত্রিকায় সম্প্রতি ওই গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, বার্ড ফ্লু-র ভাইরাসের রূপান্তর ঘটিয়ে তাকে মনুষ্যকূলকে আক্রান্ত করার মতো ক্ষমতা জোগাতে পারে বিড়াল। বিড়ালের শরীরে এমন এক বিশেষ ধরনের ‘সেলুলার রিসেপ্টর’ রয়েছে, যা পাখিদের এবং মানুষের ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসকে একসঙ্গে মিলিয়ে ভাইরাসের রূপান্তর ঘটাতে পারে। গবেষকেরা জানাচ্ছেন, যে সমস্ত বিড়াল এইচ৫এন১ বার্ড ফ্লুতে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছে, তাদের পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে শরীরে ভাইরাসের বিরল রূপান্তর ঘটেছে।

ছবি: সংগৃহীত।

পাখিদের শরীরে থাকা ভাইরাস রূপান্তরিত হয়ে মানুষকে আক্রান্ত করার ঘটনা আগে ঘটেনি তা নয়। এর আগে ২০০৮-২০০৯ সালে যে সোয়াইন ফ্লু অতিমারি শুরু হয়েছিল, তা কিছুটা ওই ভাবেই অতিমারির পর্যায়ে পৌঁছয়। বার্ড ফ্লু ভাইরাস রূপান্তরিত হয়ে শক্তিশালী হয়েছিল শূকরের কোষকে কাজে লাগিয়ে। গবেষণা বলছে, শূকরের মতোই সেলুলার রিসেপ্টর রয়েছে বিড়ালের। আর পরীক্ষায় দেখা যাচ্ছে, তাতে ভাইরাসের রূপান্তরও ঘটছে। আর এখানেই আশঙ্কা বেড়েছে গবেষকেদের। কারণ বিড়াল যেমন মানুষের কাছাকাছি থাকে, তেমনই অন্য পশু-পাখিদের আশপাশেও দেখা যায় তাদের। আর এই সর্বত্র বিচরণের স্বভাবই তাদের থেকে রোগ ছ়ড়ানোর ঝুঁকিও বাড়িয়ে দেয় অনেক বেশি।

Advertisement

গবেষণা চলাকালীন এইচ৫এন১ বার্ডফ্লু আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছে, এমন ১০টি বিড়ালের ময়নাতদন্ত করেন বিজ্ঞানীরা। এর মধ্যে আমেরিকার সাউথ ডাকোটার একটি ৬ মাসের বিড়াল ছানাও ছিল। গত এপ্রিলে একটি পাখির দেহাবশেষ খাওয়ার পরে মৃত্যু হয় ওই বিড়ালটির। পরীক্ষা করে দেখা যায় তার এবং বাকি বিড়ালগুলির শরীরে এইচ৫এন১-এর রূপান্তর ঘটেছে। যা চিন্তার কারণ, গবেষকেরা বলছেন, ‘‘ভাইরাসে আক্রান্ত বিড়াল তাদের শ্বাস প্রশ্বাসের মাধ্যমে এমনকি, মলমূত্রের মাধ্যমেও ওই ভাইরাস ছড়াতে পারে। যা থেকে তার সঙ্গে থাকা মানুষের শরীরে ওই ভাইরাস প্রবেশ করতে পারে এবং আরও ছড়িয়ে পড়তে পারে।’’

ছবি: সংগৃহীত।

কিন্তু তা যদি হবে, তা হলে এত দিন ধরে যারা বিড়ালের সঙ্গে থাকছেন, উঠছেন, বসছেন, ঘুমোচ্ছেন, তাঁরা কি এখনও পর্যন্ত ভাইরাসে আক্রান্ত হননি? নাকি ওই ভাইরাস ততটা ক্ষতিকর নয়? গবেষকেরা জানাচ্ছেন, তাঁদের গবেষণাপ্রাপ্ত ফলাফল আরও যাচাই করে দেখার কাজ চলছে। কিন্তু এ ব্যাপারে কোনও সন্দেহ নেই যে বিড়ালের শরীরে পাখির শরীরের ভাইরাসকে রূপান্তর ঘটিয়ে তা মানুষের শরীরে ছড়িয়ে দেওয়ার ক্ষমতা আছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement