রাজকুমার রাও-পত্রলেখা পাল। ছবি: সংগৃহীত।
রাজকুমার রাও নাকি কখনও কখনও টানা ৪৮ ঘণ্টা জেগে থাকেন, সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে এমনই কথা ফাঁস করলেন তাঁর স্ত্রী অভিনেত্রী পত্রলেখা পাল। পত্রলেখা বলেন, ‘‘রাজকুমারের তাঁর কাজের প্রতি গভীর ভালবাসা ও নিষ্ঠা আছে। সকালে ঘুম থেকে ওঠা থেকে রাতে ঘুমোতে যাওয়া পর্যন্ত ও কাজ নিয়েই ভাবতে থাকে। রাতে অনেক ক্ষণ জেগে থাকে, কখনও কখনও টানা ৪৮ ঘণ্টাও ঘুমায় না। আমি ওকে বলি, এই অভ্যাস কিন্তু শরীরের ক্ষতি করছে, তবে ও যেটা ভাবে সেটাই করে।’’
কেবল রাজকুমার রাও নন, কাজপাগল এমন অনেকেই আছেন, যাঁরা কাজের জন্য ঘুমের সঙ্গে আপস করেন। রোজ রোজ কম ঘুমোনোর অভ্যাসের কারণে প্রতি দিনের শুরুটা হচ্ছে ক্লান্তির মধ্যে দিয়ে। ফলে সারা দিন শরীরে সেই ক্লান্তির ছাপ পড়ছে। তবে অনেকেই জানেন না, এই অভ্যাসকে প্রশ্রয় দিতে দিতে আসলে আয়ুক্ষয় করছেন তাঁরা। ডেকে আনছেন মৃত্যুর শঙ্কা। জানেন কি, নিয়মিত কম ঘুম কতটা ক্ষতি করছে আপনার, ঠিক কী কী বিপদ অপেক্ষা করছে আপনার জন্য—
রাতের ঘুম যেন অন্তত ৬ ঘণ্টার হয়, সে ব্যাপারে সতর্ক করেছেন চিকিৎসকেরা। চিকিৎসক শুভম সাহা বলেন, ‘‘এই একটি অভ্যাস শরীরে হাজার রোগ ডেকে আনার জন্য যথেষ্ট। শরীর চালনা করার জন্য প্রাপ্তবয়স্কদের দিনে ৭-৮ ঘণ্টার ঘুম প্রয়োজন। এর চেয়ে কম ঘুমের কারণে শরীরে মেদের পরিমাণ বেড়ে যেতে পারে। আর ওবেসিটির কারণে হানা দিতে পারে একাধিক অসুখ।’’
১. ঠিক মতো ঘুম না হলে আচমকাই বেড়ে যেতে পারে রক্তচাপ। যদি আপনার উচ্চ রক্তচাপজনিত কোনও অসুখ না থাকে, তা হলেও তা আচমকাই শরীরে বাসা বাঁধতে পারে। আর যদি এই অসুখ আপনার আগে থেকেই থেকে থাকে, তা হলে আরও বেড়ে যেতে পারে রক্তচাপের মাত্রা।
২. ঘুম ঠিক মতো না হলে বেড়ে যেতে পারে ওজনও। কেননা ঘুম না হলে খিদে বাড়ানোর হরমোনের মাত্রা শরীরে বেড়ে যায়। ফলে স্বাভাবিক ভাবেই অতিরিক্ত খাদ্যগ্রহণের ফলে ওজনের কাঁটা চড়চড়িয়ে বাড়তে থাকে। কম ঘুমের কারণে হজমজনিত সমস্যাও দেখা দিতে পারে।
৩. ঘুমের সময় কমে এলে তার চিহ্ন ফুটে ওঠে ত্বকে। মুখে গজায় অ্যাকনে। কারণ, ঘুম না হলে হরমোনের সমস্যা হতে থাকে। যার ফলে ত্বকের উপরে প্রভাব পড়া শুরু হয়।
৪. ঘুম কমে এলে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দেয়। ফলে ঠান্ডা লাগা ও সর্দিজ্বরে কাবু হওয়ার সম্ভাবনাও বেড়ে যাবে। আর সেই সংক্রমণও সহজে সারে না।
৫. রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়তে পারে কম ঘুমের কারণে। ঘুমের অভাবে হজমশক্তি কমে। তার প্রভাব পড়ে শরীরে ইনসুলিনের ভারসাম্যের উপরেও। তার জেরই দেখা দেয় শর্করার মাত্রা ওঠানামার মাধ্যমে। ফলে ডায়াবিটিক রোগীদের জন্য ভাল ঘুম খুব জরুরি।