হাঁপানির সঙ্গে স্থূলতার যোগ কী? ছবি: প্রতীকী
হাঁপানিতে আমাদের শ্বাসনালি ও তার বিভিন্ন শাখা-প্রশাখা সঙ্কুচিত হয়ে যায়। এতে শ্বাস নিতে এবং ছাড়তে বেশ কষ্ট হয়। হাঁপানির সঠিক কারণ কী, তা নিশ্চিত করে বলা সম্ভব নয়। তবে চিকিৎসকদের ধারণা, এর পিছনে রয়েছে জিনগত এবং পরিবেশগত কিছু কিছু বিষয়। পরিবারে কারও থাকলে পরবর্তী প্রজন্মের হাঁপানির আশঙ্কা বেশি। তা ছাড়া, অপরিচ্ছন্ন পরিবেশ, বিশেষ করে ধুলোবালি, ধোঁয়া, ফুলের রেণু, পোষ্যের লোম, অতিক্ষুদ্র মাইট জাতীয় পোকাও হাঁপানির কারণ। তবে এ সব ছাড়া আরও একটি কারণে বেড়ে যেতে হাঁপানি। তা হল স্থূলতা।
‘আমেরিকান লাং অ্যাসোসিয়েশন’-এর ‘এয়ারওয়েস ক্লিনিক্যাল রিসার্চ সেন্টার নেটওয়ার্ক’ হাঁপানি ও ‘ক্রনিক অবস্ট্রাক্টিভ পালমোনারি ডিজিজ’ বা ‘সিওপিডি’ নিয়ে গবেষণা করে। তাদের গবেষণা সাফ বলছে, স্থূলতার সঙ্গে যোগ রয়েছে হাঁপানির। হাঁপানির বিভিন্ন রিস্ক ফ্যাক্টরের মধ্যে অন্যতম ওবেসিটি বা স্থূলতা। চিকিৎসাক্ষেত্রে আমেরিকার সর্বোচ্চ নিয়ামক সংস্থা ‘সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল’-এর পরিসংখ্যান বলছে, হাঁপানি নেই এমন ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে স্থূলতায় আক্রান্ত মানুষ শতকরা ২৬.৮ জন। হাঁপানি রোগীদের মধ্যে এই সংখ্যা শতকরা ৩৮.৮ শতাংশ।
শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে মেদ জমে যাওয়ায় শ্বাস নেওয়ার সময় পেশির উপর চাপ পড়ে বেশি। —ফাইল চিত্র
স্থূল ব্যক্তিদের হাঁপানির সমস্যা কেন বেশি হয়, তার পিছনে একাধিক যুক্তি রয়েছে। শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে মেদ জমে যাওয়ায় শ্বাস নেওয়ার সময় পেশির উপর চাপ পড়ে বেশি। একে বিজ্ঞানের ভাষায় মেকানিক্যাল ফ্যাক্টর বলে।
ওবেসিটি বা স্থূলতায় আক্রান্ত ব্যক্তির দেহে বিভিন্ন প্রদাহ তৈরি হয়। হাঁপানির সমস্যা থাকলে অনেকেই বিভিন্ন ধরনের অ্যালার্জিতে আক্রান্ত হন। ফলে দ্বিমুখী সমস্যায় বেড়ে যায় প্রদাহের জ্বালা।
অতিরিক্ত ওজন বিভিন্ন ধরনের আনুষঙ্গিক রোগ ডেকে আনে। ফলে দেহের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাও দুর্বল হয়ে পড়ে। বেড়ে যায় হাঁপানির প্রকোপ।
তবে জীবনশৈলীতে বদল আনলে অনেকটাই কমানো যেতে পারে সমস্যা। ওজন নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে এবং ফলমূল ও শাকসব্জি সমৃদ্ধ সুষম খাবার খেতে হবে। প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ মতো হাঁপানি ও ওজন কমানোর ওষুধ খাওয়া যেতে পারে।