দুধ সহ্য না হলে বিকল্প কী! ছবি: সংগৃহীত।
‘দুধ না খেলে হবে না ভাল ছেলে’। জনপ্রিয় এই গানের লাইন মনে করিয়ে দেয় ছোটবেলা। দুধ পানে যে সমস্ত খুদেদের অনীহা তাদের প্রত্যেককেই বোধহয় শুনতে হয়েছে, দুধ না খেলে বড় হওয়া যায় না। মানুষ থেকে বন্যপ্রাণ, ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর মাতৃদুগ্ধ পানেই তাদের জীবন এগোয়। পরবর্তীকালে অবশ্য মানুষের খাদ্য তালিকায় অন্যান্য প্রাণীর দুধও জুড়ে যায়।
কেন দুধ সুষম খাদ্য?
ক্যালসিয়াম-প্রোটিনে ভরপুর সাদা এই তরল, সুষম খাদ্য হিসেবেই বিবেচিত হয়। ২৫০ মিলিলিটার দুধে থাকে ২৫০ মিলিগ্রাম ফসফরাস। যা দেহের কোষে শক্তি জোগাতে, শরীরে অ্যাসিডের ভারসাম্য রক্ষা করতে সাহায্য করে। এছাড়াও থাকে পটাসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম। যা পেশির কার্যকারিতা অক্ষুন্ন রাখতে, প্রোটিন সংশ্লেষ সহ শারীরিক একাধিক কাজে সহায়তা করে। আর থাকে ভিটামিন এ, ভিটামিন বি২, ভিটামিন বি ১২।
ক্যালসিয়াম, প্রোটিন, ভিটামিনে সমৃদ্ধ দুধ। ছবি: সংগৃহীত।
দুধ বেশি পান কি আদৌ ভাল?
এত যার পুষ্টিগুণ, সেই দুধ যদি কেউ বেশি পান করেন তবে কিন্তু হিতে বিপরীত হতে পারে। তবে শরীরে সহ্য হলে নিয়ম করে পরিমিত দুগ্ধপানে উপকারই হবে। যদিও, অতিরিক্ত দুধ পান অনুচিত। এতে প্রথম সমস্যাই হতে পারে হজমের। দুধে থাকা ‘ল্যাকটোজ’ হজমের জন্য প্রয়োজন হয় ‘ল্যাকটেজ’ নামে একটি উৎসেচকের। কিন্তু শিশু থেকে বড়, অনেকের শরীরে এই উৎসেচক কম তৈরি হওয়ায় দুধ হজম করতে সমস্যা হয়। ফলে পেট ফাঁপা, পেটের খারাপের মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। অনেকের দুধ সহ্য হয় ঠিকই, কিন্তু বেশি পরিমাণ দুধ খেলে সমস্যা হতেই পারে।
আবার অনেক শিশু থাকে যাদের ছোট থেকেই দুধের ল্যাকটোজ হজমে সমস্যা হয়। একই সমস্যা হয় বড়দেরও। তাহলে বিকল্প কী! একদম ছোটদের জন্য অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোনও কিছুই করা উচিত নয়। তবে বড়দের ক্ষেত্রে কিছু বিকল্প হতে পারে।
আমন্ড দুধ-আমন্ড এক ধরনের বাদাম। ভিটামিন ও খনিজে পরিপূর্ণ। এই আমন্ড ও জল মিশিয়ে দুধ তৈরি করা যায়। এতে ল্যাকটোজ না থাকায় হজমে সমস্যা হওয়ার কথা নয়। একমুঠো আমন্ড কয়েক ঘণ্টা ভিজিয়ে খোসা ছাড়িয়ে বেশ কিছুটা পানীয় জল যোগ করে মিক্সিতে বেটে নিলেই তৈরি হয়ে যাবে আমন্ড দুধ। এতে অত্যন্ত কম ক্যালোরি থাকে। তাছাড়া ত্বকের জন্যও এই দুধ পান খুব ভাল। ফলে যাঁরা ডায়েট মেনে খাওয়া দাওয়া করেন ও রোগা হওয়ার চেষ্টা করছেন তাঁদের জন্যেও এই দুধ হতে পারে বিশেষ উপকারি।
সয়া দুধ-পুষ্টিগুণে ভরপুর সয়াবিনস থেকে তৈরি হয় এই দুধ। এর কার্যকারিতা অনেক। ল্যাক্টোজ মুক্ত এই দুধে থাকে প্রচুর প্রোটিন। ভিটামিন ও অনেকরকম খনিজ থাকায় শরীরের জন্য সয়া দুধ বিশেষ উপকারি। সয়া বীজ কয়েক ঘণ্টা ভিজিয়ে জলে ধুয়ে তার সঙ্গে পানীয় জল মিশিয়ে বেটে নিতে হবে। মিশ্রনটা ছেঁকে নিলেই মিলবে দুধ।
ওটস্ দুধ- স্বাস্থ্যকর খাবারের তালিকায় ওটস্ থাকেই। ফাইবারে পূর্ণ ওটস্ দিয়ে তৈরি দুধ কোলস্টেরল কমাতে সাহায্য করে। ওটস্ জলে ভিজিয়ে ভালো করে বেটে ছেঁকে নিলেই দুধ তৈরি হয়ে যাবে। ওজন নিয়ন্ত্রণেও এই দুধের কার্যকারিতা আছে।