ভুঁড়ি কমবে সঠিক নিয়ম মেনে ডায়েট করলে। ছবি: সংগৃহীত।
ওজন কমানো নিয়ে অনেকের মধ্যেই অনেক ভ্রান্ত ধারণা কাজ করে। পুষ্টিবিদদের পরামর্শ ছাড়াই নেটমাধ্যমের উপর নির্ভর করেই ডায়েট করতে শুরু করেন কেউ কেউ। অনেকেই মনে করেন, এক বেলা না খেয়ে থাকলে বোধ হয় মেদ কিছুটা কমবে। আবার অনেকের ধারণা, চর্বিজাতীয় খাবার খেলেই পেটের আনাচকানাচে তা জমতে শুরু করে। বিষয়টা আসলে তেমন নয়। পুষ্টিবিদেরা বলেন, এমন ভুল ধারণা নিয়ে ডায়েট বা শরীরচর্চা, যা-ই করুন না কেন, মেদ ঝরবে না কোনও মতেই। তাই ওজন ঝরানোর কাজে নামার আগে শরীর এবং খাবারের বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা থাকা জরুরি।
১) কার্বোহাইড্রেট খেলেই ওজন বাড়ে, এমন ভুল ধারণায় অনেকেই বেশি। ভাত, রুটি খেলেই ওজন বাড়বে— এই ধারণা পুরোপুরি সত্য নয়। শরীরে পর্যাপ্ত পুষ্টির জন্য কার্বোহাইড্রেট, ফ্যাট ও প্রোটিনের সঠিক ভারসাম্য বজায় রেখে চলা ভীষণ জরুরি। কিন্তু কখন খাচ্ছেন এবং পরিমাণে কতটা খাচ্ছেন, সেই দিকে নজর দেওয়া জরুরি। খুব প্রয়োজন না হলে পুষ্টিবিদেরা নো-কার্ব ডায়েট করার পরামর্শ দেন না।
২) সারা দিনে তিনটি মূল খাবারে মধ্যে কোনও একটি বাদ দিতে পারলেই অনেকটা ক্যালোরি ঝরবে, এমন ধারণা থাকে অনেকেরই। তবে খালি পেটে দীর্ঘ ক্ষণ থাকলে ওজন কমবে না, উল্টে বেড়ে যেতে পারে। তাই অল্প হলেও যখন যে খাবার খাওয়ার কথা, তা খেতে হবে। রাতের বেলা খাবার যত হালকা খাবার খাবেন, ওজন ঝরার প্রক্রিয়া ততই তরান্বিত হবে।
৩) ফ্যাট মানেই খারাপ নয়। ফল, বাদাম বা বীজে পাওয়া যায় এমন স্বাস্থ্যকর ফ্যাট, যা শরীরের জন্যে ভাল। দীর্ঘ দিন ধরে অস্বাস্থ্যকর ফ্যাট খেলে তা দ্রুত মেদবৃদ্ধি ঘটায়।তবে শরীর চাঙ্গা রাখতে স্বাস্থ্যকর ফ্যাট পরিমিত মাত্রায় ডায়েটে রাখা জরুরি।
৪) ওজন ঝরাতে শরীরচর্চা করার পাশাপাশি অনেকেই কৃত্রিম ডায়েট ফুড খেয়ে থাকেন। অনেকেই মনে করেন, এই ধরনের খাবার স্বাস্থ্যকর। কিন্তু পুষ্টিবিদেরা বলছেন, এই ধরনের খাবারে কৃত্রিম চিনির পরিমাণ বেশি থাকে। এ ছাড়া এতে আরও কিছু রাসায়নিক উপাদান থাকে, যা শরীরে জন্যে আদৌ ভাল নয়।
৫) বেশির ভাগেরই ধারণা, শরীরচর্চা করলে সব ধরনের খাবার খাওয়া যায়। চাইলে রোজ বিরিয়ানি খেতে পারেন, যদি নিয়মিত জিমে গিয়ে গা ঘামান। তবে এই ধারণা একেবারেই ভিত্তিহীন। ওজন বশে রাখতে গেলে শরীরচর্চা এবং ডায়েট— দু’দিকেই নজর দিতে হবে। খাবারের মাধ্যমে কত ক্যালোরি শরীরে ঢুকছে আর কতটা ক্যালোরি শরীরচর্চার মাধ্যমে খরচ করছেন তার ভারসাম্য বজায় রাখা ভীষণ জরুরি।