জল না খেয়ে, শরীরে জলের চাহিদা কী ভাবে পূরণ হবে? ছবি: সংগৃহীত।
"অম্বল হচ্ছে? জল খা।"
"মাথা ব্যথা করছে? ঠিকমতো জল খাচ্ছিস না!"
সমস্যা যা-ই হোক, মা-ঠাকুমারা বলেই থাকেন, জল না খাওয়ার জন্যই যত বিপত্তি। পুষ্টিবিদ থেকে চিকিৎসকেরাও বলছেন, পর্যাপ্ত জল না খেলে শরীরে অনেক সমস্যা দেখা দিতে পারে। রূপ নিয়ে যাঁর চর্চা করেন, তাঁদেরও পরামর্শ, উজ্জ্বল ত্বক পেতে পর্যাপ্ত জল খাওয়া দরকার।
কিন্তু কতটা জল? আইসিএমআর-এর নির্দেশিকা বলছে, এক জন সুস্থ প্রাপ্তবয়স্কের সারা দিনে অন্তত ২ লিটার জল খাওয়া উচিত।
উচিত তো অনেক কিছুই। কিন্তু সারা দিনে ক’জন আর মেপে জল খান। রোদে বেরোলে তেষ্টা পায়। তখনই ঢকঢক করে জল খেলেও, সারা দিনে তেমন তেষ্টা না পেলে আর জল খাওয়াই হয় না।
জলের ঘাটতিতে কী সমস্যা?
শারীরবৃত্তীয় ক্রিয়াকলাপ সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের জন্য পর্যাপ্ত জল খাওয়া জরুরি। পুষ্টিবিদ বলছেন, শরীরে অক্সিজেন সরবরাহের জন্যেও জল খাওয়া জরুরি। শরীরের ক্ষতিকর পদার্থ প্রস্রাবের মাধ্যমে বেরিয়ে যায়। পর্যাপ্ত জল না খেলে, প্রস্রাবের পরিমাণ কমে যায়। এমনকি অস্থিসন্ধিতেও তরলের পরিমাণ কমে সমস্যা দেখা দিতে পারে।
জলের বদলে আর কী?
জল খেতে ভাল না লাগলেও, বিভিন্ন ফলের মাধ্যমে শরীরে জলের অভাব কিছুটা হলেও দূর হতে পারে।
শসা: এই ফলে জলের মাত্রা ৯৫ শতাংশ। ফল হিসেবে কাঁচা খাওয়া যায়। আবার কেউ কেউ শসা দিয়ে নানা পদ রান্নাও করে ফেলেন। শরীর ঠান্ডা রাখে, পেট ভর্তি করে। ত্বকের জন্যও এই ফল দারুণ উপকারী।
তরমুজ: প্রায় ৯২ শতাংশ জল থাকে তরমুজে। এতে রয়েছে ভিটামিন সি। ক্যালোরির মাত্রাও কম। তাই, তরমুজ খেলে শরীরে অনেকটাই জল যাবে। জল খেতে ভাল না লাগলেও, এই ফলে কামড় বসাতেই পারেন।
আনারস: এই ফলে জলের মাত্রা ৮৬ শতাংশের কাছাকাছি। টক-মিষ্টি স্বাদের এই ফলের মধ্যে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন সি। গ্রীষ্মের ফলটি শরীর চাঙ্গা রাখতে ও জলের অভাব দূর করতে খাওয়াই যায়।
পুষ্টিবিদের পরামর্শ, জলের পরিমাণ বেশি, এমন ফলের তালিকায় স্ট্রবেরি, কমলালেবু, আঙুর-সহ বিভিন্ন ফল রাখতে পারেন। জলের ঘাটতি পূরণে সব্জির তালিকায় রাখা যেতে পারে গাজর, টম্যাটো, সিলেরি ইত্যাদি।
কী ভাবে খাবারের মধ্যেই ফল ও সব্জিগুলি রাখতে পারেন?
সকালের খাবারে বেরি জাতীয় ফল দিয়ে ওট্স, স্মুদি বা রকমারি ফল রাখলে জল পাবে শরীর।
খাবারে টম্যাটো, শসা, লেটুসের মতো সব্জি যোগ করা যায়। স্যান্ডউইচে এই উপাদানগুলি ব্যবহার করা যেতে পারে।
এ ছাড়া, ডাবের জল, চিনি ছাড়া লিকার চা, স্যুপ এগুলিও খাওয়া যায়।