কী ভাবে খুদের মগজ হবে ক্ষুরধার? ছবি: শাটারস্টক।
বুদ্ধিমানের কদর সর্বত্রই বেশি। এই দুনিয়ায় বুদ্ধি না থাকলে কেবল ক্লাসের পরীক্ষাতেই নয়, জীবনের পরীক্ষাতেও পিছিয়ে পড়তে হয়। বাবা-মা অঙ্কে ভাল নয় বলে খুদেও অঙ্কে পারদর্শী হবে না, বিষয়টা মোটেও সে রকম নয়। সৃজনশীল মনোভাবে জিনের ভূমিকা থাকলেও ছেলেবেলা থেকে শিশুর জীবনযাত্রায় কয়েকটি পরিবর্তন আনলেই কিন্তু তার বুদ্ধির বিকাশ সম্ভব।
সব অভিভাবকরাই চান তাঁর ছেলেমেয়ে দাবাড়ু বিশ্বনাথন আনন্দ কিংবা গণিতবিদ শকুন্তলা দেবীর মতো বুদ্ধিমান হোক। তবে তার উপর মানসিক চাপ বাড়িয়ে নয়, বরং খেলার ছলেই তার বুদ্ধিতে শান দেওয়া সম্ভব।
১) একে অপরের সঙ্গে কথা বললেও বুদ্ধি বাড়ে। এর জন্য ছোট থেকেই খুদের সঙ্গে ভাব বিনিময় এবং কথোপকথন জরুরি। বাচ্চার মনে প্রশ্ন জাগে এমন কাজ করুন। আপনিও ওকে নানা রকম প্রশ্ন করুন, যাতে ও মাথা খাটাতে শুরু করে। আশপাশে যা ঘটছে তাই নিয়ে ওর সঙ্গে কথা বলতে শুরু করুন। চারপাশ সম্পর্কে খুদে যত ওয়াকিবহাল থাকবে, বুদ্ধিও ততই ক্ষুরধার হবে। মেমোরি গেম খেলাও শিশুদের বুদ্ধির বিকাশে সহায়ক হতে পারে। এতে শিশুদের একাগ্রতা বাড়ে। সফ্ট টয়ের পাশাপাশি বুদ্ধি বাড়বে এমন খেলনাও খুদেকে উপহার দিতে পারেন।
২) খুদের স্ক্রিনটাইম যত কমাবেন, বুদ্ধির বিকাশ তত বাড়বে। একঘেয়ে রিল, ইউটিউব ভিডিয়ো দেখে ওর বুদ্ধির বিকাশ হবে না। বরং স্ক্রিনটাইম একেবারে বেঁধে দিন। মোবাইলের নেশায় তাদের মধ্যেই বই পড়ার প্রবণতা কমে যাচ্ছে। এমনটা হতে দেবেন না। পড়ার বইয়ের পাশাপাশি গল্পের ও ছড়ার বই পড়ার প্রতি তাদের উৎসাহী করে তুলুন। এই উপায়ে তাদের জ্ঞানের পরিধি বাড়বে। বুদ্ধিরও বিকাশ হবে।
ছোট থেকেই শিশুর খাদ্যতালিকায় এমন কিছু খাবার রাখা দরকার, যা শিশুর বুদ্ধির বিকাশে ঘটাতে পারে। ছবি: শাটারস্টক।
৩) চিন্তাশক্তি গড়ে তুলতে প্রয়োজন মজবুত স্মৃতিশক্তির। তার জন্য শিশুর মন শান্ত করা ও মনঃসংযোগ বাড়ানো দরকার। রোজ সকালে ধ্যান করতে শেখান, আপনিও করুন। আপনাকে দেখে খুদেও শিখবে। মনসংযোগ বৃদ্ধি করতে মিউজ়িক থেরাপি কার্যকর।
৪) অনেক শিশুর অভ্যাস থাকে মনে মনে পড়া। তবে পড়ার সময় জোরে জোরে পড়ার অভ্যাস করলে স্মৃতিশক্তি বাড়ে। কানে শুনলে সেই পড়া তাদের বেশি মনে থাকে।
৫) ছোট থেকেই শিশুর খাদ্যতালিকায় এমন কিছু খাবার রাখা দরকার, যা শিশুর বুদ্ধির বিকাশে ঘটাতে পারে। এই বয়সে শিশুদের পুষ্টিকর খাবার প্রয়োজন। জাঙ্ক ফুড বা প্রসেসড ফুড থেকে শিশুদের যতটা দূরে রাখতে পারবেন, ততই ভাল। শিশুদের রোজ অল্প করে আমন্ড খাওয়ার পরামর্শ দেন পুষ্টিবিদরা। এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ও খনিজ থাকে। বাদাম খেলে শরীরে উপকারী ফ্যাট যায়। স্মৃতিশক্তিও ভাল হয় আর মস্তিষ্কের কর্মদক্ষতাও বাড়ে। শিশুদের রান্নায় নুন, চিনি ব্যবহারের ক্ষেত্রেও সতর্ক থাকুন।