শরীরে ভিটামিন বি১২-এর ঘাটতি হলেও স্বাদ ও গন্ধ চলে যেতে পারে।
ভিটামিন বি১২ দেহের জন্য অপরিহার্য উপাদানগুলির মধ্যে অন্যতম। রক্তের গঠন ও স্নায়ুতন্ত্র সঠিক ভাবে কাজ করার জন্য এই ভিটামিনের প্রয়োজন হয়। কিন্তু মানবদেহ এই ভিটামিন সরাসরি উৎপাদন করতে পারে না। এর জন্য আমাদের শরীরকে নির্ভর করতে হয় যথাযথ খাবার ও ফুড সাপ্লিমেন্টের উপর। বিশেষ করে নিরামিশাষীদের মধ্যেই এই ভিটামিনের ঘাটতি দেখা যায়, কারণ এটি ‘প্লান্ট বেসড ভিটামিন’ নয়। শরীরে ভিটামিন বি১২-এর ঘাটতি তৈরি হলে অ্যানিমিয়া, ডায়ারিয়া, পেপটিক আলসার, কোষ্ঠকাঠিন্যর মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। এই ভিটামিন মানসিক অবসাদ কমায়, চুল, নখ, ত্বক ও হাড়ের স্বাস্থ্য ভাল রাখতেও এই ভিটামিন সাহায্য করে।
এই ভিটমিনের অভাবে শরীরে বেশ কিছু উপসর্গ দেখা দিতে পারে। জেনে নিন সেগুলি কী কী।
১) সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, এই ভিটামিনের অভাবে শরীরের ‘আপার ট্রাঙ্ক’ অঞ্চলে অর্থাৎ মাথা থেকে বুকের মধ্যভাগ পর্যন্ত জ্বালা অনুভূত হয়।
২) স্বাদ ও গন্ধ না পাওয়া কোভিডের উপসর্গগুলোর মধ্যে অন্যতম। কিন্তু কেবল স্বাদ ও গন্ধ না পাওয়া মানেই যে করোনা হয়েছে, তা না-ও হতে পারে! শরীরে ভিটামিন বি১২-এর ঘাটতি হলেও স্বাদ ও গন্ধ চলে যেতে পারে।
প্রতীকী ছবি।
৩) ভিটামিন বি১২ শরীরে স্নায়ুর কার্যকারিতা বাড়ায়। তাই এই ভিটামিনের ঘাটতি হলে পায়ে ঝিঁঝি ধরার মতো সমস্যা হয়। দীর্ঘ ক্ষণ এক জায়গায় বসে থাকলে অনেকের পা অসাড় হয়ে যায়, এটিও কিন্তু শরীরে বি১২ ভিটামিনের ঘাটতির লক্ষণ।
৪) শরীরে ক্লান্তিভাব, যে কোনও কাজ করার প্রতি অনীহাও এই ভিটামিনের অভাবের কারণেও হতে পারে।
৫) এ ছাড়া নিশ্বাস নিতে অসুবিধা, ত্বক বিবর্ণ হয়ে যাওয়া, হৃদ্স্পন্দন বেড়ে যাওয়া, মুখে আলসার, দৃষ্টিশক্তি কমে যাওয়াও কিন্তু শরীরে ভিটামিন বি১২ এর অভাবের লক্ষণ।
৬) প্রায়শই কোনও জিনিস ভুলে যাওয়া বা কথা বলতে বলতে খেই হারিয়ে ফেলার মতো ঘটনা ঘটলে আগেই ডিমেনশিয়া ভেবে নেবেন না, এটি ভিটামিন বি ১২-এর অভাবেও কিন্তু হতে পারে।
কী খাবার খেলে শরীরে এই ভিটামিনের ঘাটতি পূরণ হবে?
নিরামিষ খাবারে এই ভিটামিনের পরিমাণ কিছুটা কম থাকে। প্রাণিজ খাবারে অপেক্ষাকৃত বেশি পরিমাণে ভিটামিন বি১২ থাকে। ডিম, বিভিন্ন ধরনের মাংস ও মেটে, সামুদ্রিক মাছের মতো খাবার ভিটামিন বি১২-এর সমৃদ্ধ উৎস। যাঁরা নিরামিষ খান তাঁরা মাশরুম, দুধ, দই, চিজ অনায়াসে খেতে পারেন।