ডায়াবিটিস জব্দ হবে ফলের গুণেই। ছবি: সংগৃহীত।
গ্রীষ্মের বাজারে আমের মতোই জামেরও চাহিদা থাকে তুঙ্গে। জামের বীজ, পাতা এবং ছাল— সবটাই ব্যবহার করা হয় বেশ কিছু আয়ুর্বেদিক ওষুধ তৈরিতে। বিশেষ করে ডায়াবেটিকদের জন্য এই ফল কিন্তু দারুণ উপকারী। তাই ডায়াবিটিসকে জব্দ করতে গরমে ভরসা রাখুন জামেই। জাম খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে। শাঁস ছাড়াও এর বীজ ডায়াবিটিস রোগীদের জন্য ভীষণ উপকারী। আয়ুর্বেদ শাস্ত্র অনুযায়ী, জামের বীজের গুঁড়ো করে খেলে ডায়াবিটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে।
জামের বীজে জাম্বোলিন এবং জাম্বোসিন নামক যৌগ থাকে, যা রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। এই যৌগ ইনসুলিন হরমোনের ক্ষরণ বাড়ায়। জামের বীজে প্রোফাইল্যাকটিক ক্ষমতা রয়েছে, যা হাইপারগ্লাইসেমিয়া প্রতিরোধে সাহায্য করে। এই ফলের বীজ ঘন ঘন প্রস্রাবের বেগ কমাতেও সাহায্য করে। জামে ভরপুর মাত্রায় অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট থাকে, যা ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য উপকারী। এ ছাড়া জামের বীজে ভাল মাত্রায় ফাইবার থাকে। ফাইবার হজমের সমস্যা সমাধানে সাহায্য করে। হজমশক্তি ভাল হলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়ে, ফলে ডায়াবিটিসের কারণে শরীরের অন্যান্য অঙ্গ ক্ষতির হাত থেকে খানিকটা হলেও রেহাই পায়।
কী ভাবে ব্যবহার করবেন?
১) ফল থেকে বীজ আলাদা করে নিন।
২) এ বার বীজগুলিকে ভাল করে ধুয়ে শুকনো কাপড়ের উপর রেখে রোদে শুকোতে দিন। ৩-৪ দিন রাখুন।
৩) বীজগুলি সম্পূর্ণ শুকিয়ে যাওয়ার পর বাইরের খোলস ছাড়িয়ে ভিতর থেকে সবুজ অংশ সংগ্রহ করে নিন।
৪) বীজের ভিতরের অংশগুলিকে আবারও রোদে শুকতে হবে।
৫) শুকিয়ে গেলে ভাল করে পিষে নিন।
৬) রোজ সকালে খালি পেটে এক গ্লাস দুধ কিংবা জলের সঙ্গে মিশিয়ে খান।
বাজারে জামের বীজের গুঁড়ো কিনতেও পাওয়া যায়। সাধারণ বাজারে না পেলে অনলাইনে অর্ডার করতে পারেন।
জামে ভরপুর মাত্রায় অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট থাকে, যা ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য উপকারী।
কেবল ডায়াবেটিকদের জন্যই নয়, জাম খাওয়ার কিন্তু আরও অনেক গুণ রয়েছে। জাম কিন্তু ত্বকের জন্য বেশ ভাল। এতে পটাশিয়াম থাকে ভরপুর মাত্রায়, তাই হার্টের রোগীদের জন্যও জাম খাওয়া বেশ উপকারী। যাঁরা ওজন ঝরানোর ডায়েট করছেন, তাঁরাও জাম খেতে পারেন, জাম খেলে ওজন বাড়ে না।
উপরের প্রতিবেদনটি সচেতনতার উদ্দেশ্যে লেখা হয়েছে। ক্রনিক অসুখের ক্ষেত্রে ডায়েটে কোনও রকম বদল আনার আগে অবশ্যই চিকিৎসক ও পুষ্টিবিদের সঙ্গে পরামর্শ করে নিন।