ঘুমের মধ্যে মুখ হাঁ হয়ে যায় কেন? ছবি: সংগৃহীত।
আপনার কি মুখ হাঁ করে ঘুমোনোর অভ্যাস আছে? রাতে ঘুমের মধ্যে মুখ দিয়ে শ্বাস নেন? তা হলে কিন্তু সমস্যা বাড়ছে। মুখ হাঁ করে ঘুমনোর অভ্যাস অনেকেরই আছে। ট্রেনে-বাসে অনেককেই দেখবেন মুখ হাঁ করে ঘুমোতে। তখন শ্বাস-প্রশ্বাস নাক দিয়ে নয়, মুখ দিয়ে চলে। চিকিৎসকেরা বলছেন, ঘুমের সময়ে মুখ দিয়ে শ্বাস নেওয়ার অভ্যাস বড় বিপদের কারণ হতে পারে।
ঘুমের সময়ে মুখ হাঁ হয়ে যায় কেন?
অনেক কারণ আছে, যেমন—
১) স্লিপ অ্যাপনিয়া: ঘুমের মধ্যে শ্বাসনালি হঠাৎ বন্ধ হয়ে যায়। তখন দমবন্ধ হয়ে আসতে থাকে। শ্বাসের গতি অনিয়মিত হয়ে যায়। শ্বাস নিতে ও ছাড়তে সমস্যা হয়। আর ঘুমিয়ে পড়ার পর এমনিতেই ঘাড় ও গলার পেশি শিথিল থাকে, সুতরাং হঠাৎ যদি শ্বাস প্রক্রিয়া বাধা পেয়ে শরীরে অক্সিজেন সরবরাহ কমে যায়, তা হলে হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কা থাকে।
২) হাঁপানি: অ্যাজমা বা হাঁপানি থাকলে শ্বাসকষ্ট হয়। সে ক্ষেত্রেও অনেকে মুখ দিয়ে শ্বাস নেন। তখন ঘুমের মধ্যে মুখ হাঁ হয়ে যায়।
৩) সর্দি-কাশি-সর্দি, জ্বর হলে বা গলায় কফ জমলে তখন শ্বাসনালি মিউকাস জমে অবরুদ্ধ হয়ে যায়। সে ক্ষেত্রেও মুখ দিয়ে শ্বাস নিতে দেখা যায় অনেককে।
আপনার কি মুখ হাঁ করে ঘুমোনোর অভ্যাস আছে? ছবি: সংগৃহীত।
চিকিৎসকেরা বলছেন, যাঁরা সব সময়েই মুখ হাঁ করে ঘুমোন, তাঁদের স্লিপ অ্যাপনিয়ার সমস্যা থাকতে পারে। রাতে ঘুমের মধ্যে মনে হয় শ্বাস আটকে গিয়েছে। আসলে শরীরে মেদ বেড়ে গেলে এই রোগের আশঙ্কা বাড়ে। ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপের রোগীদেরও ভয়ের কারণ আছে। যাঁদের থাইরয়েডের সমস্যা আছে, স্থূলত্ব বেশি, তাদের ক্ষেত্রে এই রোগের ঝুঁকিও বেশি। কারণ, শরীরের ভিতরে জমে ওঠা মেদের বাধায় বাতাস ভাল ভাবে ঢুকতে পারে না। শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা কমে যায়। তাই ঘুমন্ত অবস্থায় দম বন্ধ হয়ে আসতে থাকে। তখন মুখ দিয়ে শ্বাস নেওয়ার দরকার হয়। ঘুমের মধ্যে আপনা-আপনিই মুখ হাঁ হয়ে যায়।
কী কী রোগের ঝুঁকি থাকে?
একটানা মুখ দিয়ে শ্বাস নেন যাঁরা, তাঁদের অনেকেরই ঘুমের মধ্যে শ্বাস আটকে যায়। মাঝরাতে ঘুম ভেঙে বিষম খান অনেকে, বুক ধড়ফড় করে। অনেকে আবার বুকে চাপ অনুভব করেন। এই সবই হৃদ্রোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। সেই সঙ্গে রক্তচাপও বাড়তে থাকে। যদি দেখেন দিনের পর দিন একটানা ঘুম হচ্ছে না, মুখ দিয়ে শ্বাস নিতে হচ্ছে, তখনই বুঝতে হবে, সেটা অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়ার লক্ষণ। অতিরিক্ত ওজন, অধিক ধূমপান, মদের নেশা, টাইপ-২ ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ এই ধরনের স্লিপ অ্যাপনিয়ার ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। তাই রোগের লক্ষণ দেখে আগেভাগে সতর্ক হতে হবে।