ছবি : সংগৃহীত।
স্বাস্থ্যকর খাওয়াদাওয়ায় মন দিয়েছেন। ভাল থাকার জন্য গুরুত্ব দিচ্ছেন প্রোটিন এবং নানা রকম জরুরি ভিটামিনে। এগ হোয়াইট, গ্রিলড চিকেন আরও নানা স্বাস্থ্যসম্মত খাবারের সঙ্গে রোজ সকালে খাচ্ছেন এক গ্লাস করে তাজা ফলের রস। কখনও কমলালেবু, কখনও মুসাম্বি, আনারস, বেদানা মিক্সার বা জুসারে ব্লেন্ড করে সেই রস নিজে হাতে বানিয়ে নিশ্চয়ই ভাবছেন, দারুণ স্বাস্থ্যোদ্ধার হচ্ছে! চিকিৎসকেরা কিন্তু বলছেন, ফলের রস খেয়ে লাভের চাইতে ক্ষতিই হচ্ছে বেশি।
এক পডকাস্টে চিকিৎসক বিশাখা শিবদাসানি জানাচ্ছেন, এক গ্লাস ফলের রস খাওয়া আর এক গ্লাস সোডা জাতীয় নরম পানীয় খাওয়ার মধ্যে বিশেষ তফাৎ নেই। কারণ, ২৪০ মিলিলিটারের মিষ্টি নরম পানীয়ে থাকে ১১০ ক্যালোরি এবং ২০-২৬ গ্রাম পর্যন্ত চিনি। গবেষণা বলছে, ২৪০ মিলিলিটার ফলের রসেও ওই একই পরিমাণ চিনি থাকে। শুধু প্যাকেটজাত ফলের রস নয়, তাজা ফলের রসেও চিনির পরিমাণ ভালই।
ব্রিটেনে তাজা ফলের রস এবং দোকান থেকে কেনা ফলের রস দু’ক্ষেত্রেই চিনি আছে বলে ধরা হয়। ছবি: সংগৃহীত।
ফলের রসে চিনি থাকে কী ভাবে?
ফলে থাকে গ্লুকোজ়, ফ্রুকটোজ় এবং সুক্রোজ়। যা আদতে কার্বোহাইড্রেটেরই উপাদান। ফল খাওয়ার পরে আমাদের পাকতন্ত্র নানা ভাবে ভেঙে সেই সমস্ত উপাদান যথাস্থানে পৌঁছে দেয়। তার সঙ্গে পৌঁছয় ফলে থাকা উপকারী ফাইবারও। কিন্তু ফল থেকে ছেঁকে যখন শুধু রসটুকু বার করে নেওয়া হয়, তখন তাতে উপকারী ফাইবার থাকে না। বদলে পড়ে থাকে ফ্রুকটোজ়, গ্লুকোজ় আর সুক্রোজ়। যা চিনিরই সমান। ব্রিটেনে তাজা ফলের রস এবং দোকান থেকে কেনা ফলের রস দু’ক্ষেত্রেই চিনি আছে বলে ধরা হয়।
কী কী ক্ষতি হচ্ছে?
সকালে ছোট এক গ্লাস ফলের রস খাওয়া মানে ২৬ গ্রাম চিনি খাওয়া। যা ৬ চা চামচ চিনির থেকেও বেশি। স্বাস্থ্য ফেরাতে যেখানে পৃথিবী জুড়ে খাবারে চিনির পরিমাণ কমানোর পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে, সেখানে স্বাস্থ্যকর খাবার ভেবে সকাল সকাল এতটা চিনি খাওয়া অবান্তর, বলছেন বিশাখা। তাতে মোটা হওয়া থেকে শুরু করে রক্তে শর্করার মাত্রা বৃদ্ধি-সহ বেশি চিনি খেলে আর যা যা ক্ষতি হওয়ার, সবই হতে পারে।
ফলের রস আর নরম পানীয় সমান?
না, তা বলে ফলের রস আর নরম পানীয় এক নয়। নরম পানীয় আরও বেশি ক্ষতিকর। তার কারণ চিনি থাকলেও ফলের রসে নানা রকম ভিটামিন রয়েছে। যা সাধারণ নরম পানীয় বা মিষ্টি সোডায় থাকে না। তবে চিকিৎসকেরা বলছেন, ভিটামিন গোটা ফলেও পাওয়া যায়। তাই, ফলের রসটুকু ছেঁকে না নিয়ে পুরোটা ফলটাই খান।