শরীরে ডায়াবিটিস বাসা বাঁধলে প্রথম অবস্থাতেই তা টের পাওয়া যায় না। ছবি: সংগৃহীত
ভারতে ডায়াবিটিসের প্রকোপ খুব বেশি। অনিয়মিত জীবনযাপনের ফলে ৩০ পেরোতে না পেরোতেই বহু মানুষ আক্রান্ত হন ডায়াবিটিসে। সমীক্ষা বলছে, প্রতি বছর প্রায় ১৫ লক্ষ মানুষ ডায়াবিটিসে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। শরীরে ডায়াবিটিস বাসা বাঁধলে প্রথম অবস্থাতেই তা টের পাওয়া যায় না। যে কোনও অসুখের ক্ষেত্রে যত আগে রোগের উপস্থিতি টের পাওয়া যায় ততই ভাল। এতে আগাম সতর্কতা নেওয়াটা সম্ভব হয়।
ডা়য়াবিটিসের ক্ষেত্রে ঘন ঘন প্রস্রাব পাওয়া, জল খাওয়ার পরেও জিভ তেষ্টায় শুকিয়ে আসা, চোখে ঝাপসা দেখা,ওজন হ্রাস, মাত্রাতিরিক্ত মিষ্টি খাওয়ার প্রবণতার মতো কিছু উপসর্গ দেখতে পাওয়া যায়। এগুলি ছাড়াও চিকিৎসকরা বলছেন, দুর্গন্ধযুক্ত নিশ্বাসও ডায়াবিটিসের লক্ষণ হতে পারে।
দুর্গন্ধযুক্ত নিশ্বাসও ডায়াবিটিসের লক্ষণ হতে পারে। ছবি: সংগৃহীত
রক্তে শর্করার মাত্রা বেশি থাকলে মুখের চারপাশের অংশে তার প্রভাব পড়ে। ডায়াবিটিসের প্রভাবে কি়ডনি, হৃদ্যন্ত্র, শরীরের অন্যান্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সঠিক জীবনযাপন, খাওয়াদাওয়ায় বিধিনিষেধ, নিয়ম করে শরীরচর্চা করার ফলেডায়াবিটিস নিয়ন্ত্রণে থাকলেওরক্তে শর্করার পরিমাণ বৃদ্ধি পেতে পারে। এই পরিস্থিতিতে সবার প্রথমে প্রস্রাব এবং দাঁতের পরীক্ষা করিয়ে নেওয়া প্রয়োজন।
নিশ্বাস থেকে দুর্গন্ধ বার হওয়ার সমস্যাকে চিকিৎসা পরিভাষায় বলা হয় ‘হ্যালিটোসিস’। যদি রক্তে শর্করার মাত্রা বেশ ঝুঁকিপূর্ণ হয় এবং তার সঙ্গে এই সমস্যাগুলি দেখা দিলে অতি অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
চিকিৎসকরা বলছেন, ডায়াবিটিক রোগীদের ক্ষেত্রে এই নিশ্বাস দুর্গন্ধজনিত সমস্যা, দাঁতের বিভিন্ন সমস্যা, প্রস্রাবের পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়ার মতোউপসর্গ দেখা দিতে পারে। এই সমস্যাগুলিকে ‘ ডায়াবিটিক কিটোঅ্যাসিডোসিস’-ও বলা হয়ে থাকে। রক্তে ইনসুলিনের অভাবে ডায়াবিটিক কিটোঅ্যাসিডোসিসের সৃষ্টি হয়। ইনসুলিনের ঘাটতির কারণে শরীর শর্করা বিপাকের মাধ্যমে শক্তি উৎপন্ন করতে না পারে না। ফলে শরীরে থাকা ফ্যাটি অ্যাসিডের মাধ্যমে শক্তি উৎপাদন করা শুরু করে। ফলশ্রুতি হিসাবে শরীরে ‘কিটোন ব়ডি’ তৈরি হয়। রক্তে শর্করার মাত্রা ২৫০ থেকে ৩০০-র বেশি হলে হলে এই ধরনের সমস্যাগুলি জন্ম নেয়।
শরীরে কিটোন আছে কি না তা জানতে রোগীর প্রস্রাব পরীক্ষা করাতে হয়। এই ‘হ্যালিটোসিস’ এবং ‘ডায়াবিটিক কিটোঅ্যাসিডোসিস’ ডা়য়াবিটিস আক্রান্ত রোগীদের জন্য অত্যন্ত উদ্বেগজনক হয়ে উঠতে পারে।