গ্যাসের ওষুধ খেয়েই বাড়ছে বিশেষ রোগের ঝুঁকি। ছবি:সংগৃহীত।
ভোজনরসিক বাঙালির গ্যাস-অম্বলের সমস্যা লেগেই আছে। বুক জ্বালা, চোঁয়া ঢেকুর, বমি বমি ভাব হলেই গ্যাসের ওষুধ খেয়ে নেওয়ার প্রবণতা রয়েছে অনেকের। সাম্প্রতিক গবেষণা জানাচ্ছে, কথায় কথায় গ্যাসের ওষুধ খাওয়ার অভ্যাসেই বাড়ছে ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি। ‘আমেরিকান অ্যাকাডেমি অফ নিউরোলজি’ শীর্ষক গবেষণাপত্রে প্রকাশিত হয়েছে এই গবেষণা। অত্যধিক পরিমাণে গ্যাসের ওষুধ খাওয়ার ফলেই ডিমেনশিয়ার মতো রোগ বাড়ছে বলে মত গবেষকদের।
৪৫ থেকে ৫০ বছর বয়সি পাঁচ হাজার ব্যক্তির মধ্যে এই গবেষণাটি চালানো হয়েছিল। আগে থেকে ডিমেনশিয়ার কোনও লক্ষণ তাঁদের মধ্যে ছিল না। প্রায় পাঁচ বছর ধরে গবেষণাটি চলে। প্রত্যেকেরই গ্যাসের সমস্যা ছিল। প্রায় প্রতি দিন গ্যাসের ওষুধও খেতেন তাঁরা। দীর্ঘ সময় এমন চলার পরে অধিকাংশের মধ্যেই ডিমেনশিয়ার লক্ষণ দেখা দিতে শুরু করে বলে জানিয়েছেন গবেষকেরা। পরে এই বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত গবেষণা চালানো হয়। তার ফলাফল দেখেই মনে করা হচ্ছে, গ্যাসের ওষুধ খাওয়ার সঙ্গে ডিমেনশিয়ার সংযোগ আছে।
ডিমেনশিয়া হওয়ার মূল কারণ সম্পর্কে এখনও নিশ্চিত নন বিজ্ঞানীরা। তবে উচ্চ রক্তচাপ, শ্রবণের সমস্যা, ধূমপান, অতিরিক্ত ওজন, মানসিক অবসাদ, কায়িক শ্রমের অভাব, ডায়াবিটিস, অতিরিক্ত মদ্যপান, মস্তিষ্কের আঘাত ও বায়ুদূষণ— ডিমেনশিয়ার নেপথ্যে এই কারণগুলি ছিল বলে মনে করতেন চিকিৎসকেরা। সেই তালিকা নতুন একটি কারণ সংযোজন হল বলে জানাচ্ছেন গবেষকেরা।
অন্য দিকে, গ্যাসের ওষুধ খেয়েও ডিমেনশিয়ার কোনও লক্ষণ নেই, এমন উদাহরণও কিন্তু রয়েছে। ফলে গ্যাস-অম্বলের ওষুধ খেলেই যে ডিমেনশিয়ার শিকার হতে হবে, তেমন কিছু এখনই দাবি করছেন না গবেষকেরা। কিন্তু চিকিৎসকেরদের মতে, এ ধরনের ওষুধ যত কম খাওয়া যায়, ততই ভাল। কিডনিতেও প্রভাব পড়ে এর ফলে। ওষুধ খেয়ে গ্যাস-অম্বল কমানোর চেয়ে বরং স্বাস্থ্যকর খাওয়াদাওয়া এবং শরীচর্চার উপর ভরসা রাখা জরুরি। তা হলেই আর ওষুধ খাওয়ার প্রয়োজন পড়বে না।