শরীর থেকে অতিরিক্ত জল বার করতে কী কী খাবেন? ছবি: ফ্রিপিক।
রাতে ভারী খাবার খেয়ে সকালে উঠে দেখলেন মুখ ফুলেছে, হাত-পা-গোড়ালিও ফোলা। শরীরে প্রচণ্ড অস্বস্তি। অথচ ভেবে পাচ্ছেন না, কেন এমন হল। শরীরে জল জমছে না তো? এমনিতেই মানবদেহে ৫০-৬০ শতাংশ জল থাকে। কিন্তু যদি শরীরে জলের পরিমাণ তার চেয়েও বেড়ে যায়, তখন বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা শুরু হয়। শরীরে থলথলে ভাব আসে, হজমে গোলমাল হয়, গা-হাত-পায়ে ব্যথাও হয়। এই সমস্যা প্রায়শই হতে থাকলে ডিপ ভেন থ্রম্বোসিস, ফুসফুসে জল জমার মতো জটিল রোগও দেখা দিতে পারে।
এই বিষয়ে মেডিসিনের চিকিৎসক অরুণাংশু তালুকদারের মত, “অনেক ক্ষণ এক জায়গায় বসে কাজ, অস্বাস্থ্যকর খাওয়ার অভ্যাস, শরীরচর্চা না করা এই সমস্যা বাড়িয়ে দিতে পারে। ঋতুস্রাব, গর্ভাবস্থা ইত্যাদির কারণেও দেহে জল জমতে পারে। তবে এই সব কারণ ছাড়াই যদি শরীরে জল জমার লক্ষণ দেখা দেয়, তা হলে হার্টের পরীক্ষা করিয়ে নেওয়া জরুরি। ফুসফুস বা কিডনি তার কর্মক্ষমতা হারাতে থাকলেও কোষে কোষে জলের আধিক্য হতে পারে। তাই স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো বিশেষ জরুরি।”
চিকিৎসকের কথায়, শরীরে জলের ভারসাম্য বিঘ্নিত হলে নুন খাওয়ায় রাশ টানতে হবে। বেশি নুন আছে, এমন খাবার এড়িয়ে চললে ভাল। ভাজাভুজি খেলেই বিপদ বাড়বে। পাস্তা, পিৎজ়া, বার্গার, আইসক্রিম খাওয়াও চলবে না। তা হলে কী কী খাওয়া উচিত, জেনে রাখুন।
১) শসা খাওয়া খুবই ভাল। শসায় ৯৫ শতাংশ জল থাকে। ওজন কমাতে সহায়ক কম ক্যালোরি ও উচ্চ ফাইবার সমৃদ্ধ শসা হার্টের জন্যও ভাল। পাতে রাখুন টম্যাটো, কলা, বাঁধাকপি, পালং শাক। কলাতে প্রচুর পরিমাণে ক্যালশিয়াম থাকে, যা হাড়ের স্বাস্থ্য ভাল রাখে। কোষে কোষে অতিরিক্ত জল বা ফ্লুইড জমতে দেয় না।
২) নিয়মিত শাকসব্জি খেতে হবে। শরীরে জল জমার হাত থেকে বাঁচতে দুগ্ধজাত দ্রব্য এড়িয়ে চলাই ভাল। বেশি চা বা কফি খাবেন না। অ্যালকোহল কম খেতে হবে।
৩) বেরি জাতীয় ফলও এ ক্ষেত্রে খুবই উপকারী। ক্র্যানবেরিতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি ও অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট থাকে। খেতে পারেন তরমুজ। এই ফলের ৯২ শতাংশ জল। ভিটামিন ও খনিজ উপাদানে সমৃদ্ধ তরমুজ কোষ থেকে দূষিত পদার্থ দূর করতে পারে।
৪) চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার খান। পাতে রাখুন ভিটামিন বি-৬ সমৃদ্ধ সোয়াবিন, ওট্স ও চিনাবাদাম।
৫) শরীর থেকে অতিরিক্ত জল ও ফ্লুইড বার করে দিতে পারে আদা। নিয়ম করে আদা দিয়ে চা খেলে উপকার পাবেন। আদার কুচি, পুদিনা পাতা দিয়ে ‘ডিটক্স পানীয়’ বানিয়েও খেতে পারেন। এতেও উপকার হবে।