অধিকাংশ মানুষেরই ইনসুলিন নিয়ে নানা সংশয় থাকে। তাঁরা ভাবেন, ইনসুলিন নেওয়া শুরু হয়েছে মানেই ডায়াবিটিস খারাপ পর্যায়ে চলে গিয়েছে। ছবি: সংগৃহীত
ডায়াবিটিস রোগে আক্রান্ত হলে নিয়ম মানার সতর্কতা তো রয়েছেই, তার সঙ্গে রয়েছে ইনসুলিনের খামখেয়ালিপনা নিয়েও চিন্তা। টাইপ ১ ডায়াবিটিসে ভুগলে ভয় পেয়ে কোনও লাভ নেই, কারণ তাঁদের শরীরে ইনসুলিন তৈরি হয় না বলে গোড়া থেকেই ইনজেকশন নিতে হয়। তবে ডায়াবেটিক রোগীদের মধ্যে ৯০–৯৫ শতাংশেরও বেশি ভোগেন টাইপ ২ ডায়াবিটিসে। বিভিন্ন ওষুধেও যখন নিয়ন্ত্রণে থাকে না রক্তের শর্করার মাত্রা, তখনই চিকিৎসকরা পরামর্শ দেন ইনসুলিন নিতে শুরু করার। কিন্তু অধিকাংশ মানুষেরই ইনসুলিন নিয়ে নানা সংশয় থাকে। তাঁরা ভাবেন, ইনসুলিন নেওয়া শুরু হয়েছে মানেই ডায়াবিটিস খারাপ পর্যায়ে চলে গিয়েছে। কারও কারও ভয় হয় এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে। কেউ আবার ইনসুলিন নিচ্ছেন বলে নিয়ম–কানুন ভুলে সব কিছু খেতে শুরু করেন। এ সবই ভ্রান্ত ধারণা৷
ডায়েট, ব্যায়াম ও ওষুধের নিয়ম মানার পরও যখন আর অগ্ন্যাশয় থেকে পর্যাপ্ত ইনসুলিন বেরোয় না, তখন বাইরে থেকে ইনসুলিন দিয়ে রক্তে শর্করার মাত্রা কমাতে হয়৷
ইনসুলিন সম্পর্কিত কিছু ভুল ধারণা শুধরে নিন:
১) ইনসুলিনে শরীরের কোনও ক্ষতি হয় না। প্রয়োজন সত্ত্বেও না নিলে রক্তচাপ, কোলেস্টেরল বাড়তে পারে। শুধু তা-ই নয়, হৃদ্যন্ত্র, কিডনি থেকে শরীরের সব প্রত্যঙ্গই খারাপ হতে শুরু করে৷
প্রতীকী ছবি
২) ইনসুলিন নিলেও খাবারে নিয়ন্ত্রণ রাখা দরকার৷ কারণ ইনসুলিনে রক্তে শর্করার মাত্রা কমে ঠিকই কিন্তু খাবারে রাশ না টানলে সেই মাত্রা আবারও বেড়ে যেতে পারে। ইনসুলিন নিলে ওজন তো আর কমে না, ডায়াবেটিস থাকলে এমনিতেই উচ্চ রক্তচাপ, কোলেস্টেরল ও হৃদ্রোগের আশঙ্কা বাড়ে। ওজন বাড়লে সেই ঝুঁকি আরও বেড়ে যায়৷
৩) ইনসুলিন নিলেও শরীরচর্চা বন্ধ করা উচিত নয়। অনেক সময়ে পর্যাপ্ত ইনসুলিন নেওয়া সত্ত্বেও রক্তে শর্করার মাত্রা ঠিক ভাবে কমে না। অর্থাৎ, ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স হয়৷ ব্যায়াম করলে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ইনসুলিনের কার্যকারিতা অনেক বেড়ে যায়।
৪) ইনসুলিন সব সময়ে ফ্রিজের রাখাই শ্রেয়। ১২ থেকে ১৪ ঘণ্টার বেশি ইনসুলিন ফ্রিজের বাইরে রাখলে তার কার্যকারিতা নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা প্রবল। তাই সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। ইনসুলিন নেওয়ার ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট সময় অন্তর সূচ বদলাতে হবে। না হলে কিন্তু সংক্রমণের ঝুঁকি থাকে।