বর্ষায় রোগবালাই ঠেকিয়ে রাখতে কী কী খেতে হবে? ছবি: সংগৃহীত
রাস্তাঘাটের জল-কাদাকে যদি বাদ দেওয়া যায়, তা হলে বর্ষা অনেকেরই প্রিয় ঋতু। এই মরসুমে কখনও গুমোট গরম কখনও আবার ঝড়বৃষ্টি। তাই এই সময়ে সাবধানে থাকাও জরুরি। কারণ বর্ষার মরসুমে বিভিন্ন সংক্রমণ জাতীয় রোগবালাইয়ের প্রকোপ বাড়ে। বৃষ্টিতে ভিজে সর্দিকাশি হওয়া তো আছেই, সেই সঙ্গে পেটের গোলমালও লেগে থাকে। এ সময়ে সুস্থ থাকতে খাদ্যাভ্যাসে বদল আনা জরুরি। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে কী কী রাখবেন, রোজের খাদ্যতালিকায় রইল হদিস।
তেতো খাবার: বর্ষার মরসুমে ভাইরাস ও ব্যাক্টেরিয়ার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে প্রতি দিন খাবারের পাতে রাখুন তেতো। হয় নিমপাতা, নয়তো উচ্ছে। এ সবের অ্যান্টিভাইরাল ও অ্যান্টিব্যাক্টেরিয়াল উপাদান শরীর চাঙ্গা রাখে ও এ সময়ে বাতাসে ভেসে বেড়ানো রোগজীবাণুর সঙ্গে লড়তে সাহায্য করে।
লবঙ্গ-দারচিনি-কাঁচা হলুদ: রান্নায় লবঙ্গ ও দারচিনি বেশি করে ব্যবহার করুন। এই সব মশলার অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট গুণ ভাইরাস ও ব্যাক্টেরিয়ার বিরুদ্ধে বিরুদ্ধে শরীরের স্বাভাবিক প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বাড়িয়ে তোলে। এই মশলা দিয়ে চা করেও খেতে পারেন। প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সকালে খালি পেটে কাঁচা হলুদ খান। রাতে দুধে কাঁচা হলুদ গুলেও খেতে পারেন।
বেশ কিছু মশলার অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট গুণ ভাইরাস ও ব্যাক্টেরিয়ার বিরুদ্ধে বিরুদ্ধে শরীরের স্বাভাবিক প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বাড়িয়ে তোলে। ছবি: সংগৃহীত।
পর্যাপ্ত প্রোটিন: শরীর গড়তে গেলে প্রোটিন ছাড়া চলবে না। খাবার পাতে উদ্ভিজ্জ বা প্রাণীজ, যে কোনও রকমের প্রোটিন রাখুন রোজ। মাছ, মাংস, সয়াবিন, মুসুর ডাল, ডিম এ সব থেকে পাওয়া পুষ্টিগুণ শরীরকে ভিতর থেকে মজবুত করবে।
রসুন: সকালে খালি পেটে এক কোয়া রসুনও খেতে পারেন। অ্যান্টি-অক্সিড্যান্টে ভরা এই সব্জির অনেক গুণ রয়েছে। অনেকটা সময় পেট খালি থাকার পর এক কোয়া রসুন খেলে এর রস সহজে শরীর থেকে টক্সিন পদার্থ দূর করে, রক্তকে পরিশুদ্ধ রাখে। কিছু ভাইরাস ও সংক্রমণজনিত অসুখ— যেমন ব্রংকাইটিস, নিউমোনিয়া, হাঁপানি প্রতিরোধে রসুন খুব উপকারী।
সবুজ শাকসব্জি ও ফল: ডিহাইড্রেশন থেকে বাঁচতে, শরীরকে স্বাভাবিক শক্তির জোগান দিতে, ভিটামিন সি ও খনিজ পদার্থের জোগানে যাতে ঘাটতি না পড়ে, সে সবের দিকেও এ সময় নজর দিতে হবে। প্রতি দিন নিয়ম করে অন্তত একটা মরসুমি ফল খান। খাওয়ার পাতে সঙ্গে রাখুন পর্যাপ্ত সবুজ শাকসব্জি।
টক দই: টক দইয়ের ফারমেন্টেড এনজাইম খাবার হজমের জন্য ভীষণ উপযোগী। টক দইয়ের প্রোবায়োটিক উপাদান লিভারকে যেমন সুস্থ রাখে, তেমনই এর জেরে কোলেস্টেরলও নিয়ন্ত্রণে থাকে। অনেকেই দুধ খেতে পারেন না। সে ক্ষেত্রে ভরসা রাখতে পারেন দইয়ের উপর। দুধের তুলনায় দই অনেক বেশি সহজপাচ্য। শরীর থেকে দূষিত পদার্থ বার করার ক্ষেত্রেও দইয়ের জবাব নেই। শরীর যত টক্সিনমুক্ত হবে, ততই সুস্থ থাকবেন।