সোডিয়ামের মাত্রা কমে গেলে ভীষণ বিপদ ঘটতে পারে। ছবি: সংগৃহীত।
বহুদিন ধরেই উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা। নিয়মিত ওষুধও খেতে হয়। চিকিৎসকেরা মেপে নুন খাওয়ার কথা বললেও সব সময়ে যে দাঁড়িপাল্লায় মেপে তা ব্যবহার করা যায়, তা নয়। এ দিকে, উচ্চ রক্তচাপের জন্য দায়ী যে যৌগটি অর্থাৎ, সোডিয়াম, তা নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য ‘লো সোডিয়াম’ নুন ব্যবহার করা শুরু করেছেন। বাজারে ইদানীং এই ধরনের নুন বেশ সহজলভ্য। এই যৌগটি রক্তে বেশি মাত্রায় থাকলে কী হতে পারে, তা জানেন সকলেই। কিন্তু রক্তে সোডিয়ামের মাত্রা কমে গেলে কী বিপদ ঘটতে পারে, সে সম্পর্কে অনেকেরই স্পষ্ট ধারণা নেই। চিকিৎসকেরা বলেন পটাশিয়াম, সোডিয়াম, ক্যালশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম মিলেই তৈরি হয় মানবদেহের ইলেকট্রোলাইটস পরিবার। এ সব উপাদানের পরিমাণ কম-বেশি হলেই সৃষ্টি হয় ইলেকট্রোলাইটের ভারসাম্যহীনতা। সোডিয়াম বা পটাশিয়ামের যে কোনও একটি বা একসঙ্গে দু’টির অত্যধিক অসামঞ্জস্য হলে জীবনহানির মতো ঘটনাও ঘটতে পারে। স্নায়ুতন্ত্র, মাংসপেশি এবং হৃদ্যন্ত্র থেকে নানা শারীরবৃত্তীয় কাজ পরিচালনা করার গুরুভার থাকে এদের উপর। তাই সোডিয়ামের মাত্রায় একচুল এ দিক-ও দিক হলেই বিপদ ঘটে যেতে পারে।
সোডিয়াম কমে গেলে হতে পারে ‘হাইপোন্যাট্রিমিয়া’। ছবি: সংগৃহীত।
‘হাইপোন্যাট্রিমিয়া’-র লক্ষণগুলি কী কী?
রক্তে সোডিয়ামের মাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে কম বা ‘হাইপোন্যাট্রিমিয়া’ থাকলে কারও মাথাধরা, সিদ্ধান্তহীনতা, বমি ভাব, কাজ করার অনীহা বা ক্লান্তির মতো উপসর্গ দেখা দিতে পারে।
এই রোগে কী ধরনের সমস্যা দেখা যায়?
৪৮ ঘণ্টা বা তার বেশি সময় ধরে রক্তে সোডিয়ামের মাত্রা কম থাকলে মস্তিষ্কের কার্যকলাপে নানা ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। যেখান থেকে জ্ঞান হারিয়ে যে কেউ কোমায় চলে যেতে পারেন। এমনকি, সেখান থেকে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। মহিলাদের ঋতুবন্ধের সময়কালে মনে রাখতে না পারার মতো মস্তিষ্কের বহুবিধ সমস্যার কারণই হল এই ‘হাইপোন্যাট্রিমিয়া’।
প্রাকৃতিক ভাবে রক্তে সোডিয়ামের ভারসাম্য ঠিক রাখবেন কী ভাবে?
১) খাবারে নুনের মাত্রা ঠিক রাখা
রক্তচাপ বেশি থাকলে নুন কম খেতে হয়। কিন্তু তারও নির্দিষ্ট পরিমাণ আছে। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া নুনের মাত্রা কমিয়ে ফেলা উচিত নয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-র দেওয়া নির্দেশিকা অনুযায়ী, পূর্ণবয়স্ক এক জন মানুষের প্রতিদিন ৫ গ্রামের কম নুন খাওয়া উচিত।
২) সোডিয়ামযুক্ত খাবার খাওয়া
চিজ়, সামুদ্রিক খাবার, বিট, গাজর, সেলেরির মতো সোডিয়ামযুক্ত কিছু খাবার নিয়মিত খেতে পারলে রক্তে সোডিয়ামের ভারসাম্য বজায় থাকে।
৩) শরীরে জলের ঘাটতি না রাখা
অতিরিক্ত গরমে বা শরীরচর্চা করার সময়ে ঘাম হলে যে কেউ ‘হাইপোন্যাট্রিমিয়া’-র সমস্যায় আক্রান্ত হতে পারেন। রক্তে সোডিয়ামের মাত্রা ঠিক রাখতে জলের ভূমিকা অপরিসীম। তাই এই সময়ে বার বার জল বা ইলেকট্রলাইটজাতীয় পানীয় খাওয়া উচিত।