Late Pregnancy

সিনেমার পর্দায় হোক বা বাস্তবে, ৫০ পেরিয়েও মা হওয়া যায়! বেশি বয়সে সন্তানধারণের উপায় কী?

৫০ পেরিয়ে মা হওয়া সহজ নয়। একটা বয়সের পর আর স্বাভাবিক পদ্ধতিতে অন্তঃসত্ত্বা হওয়া সম্ভব নয়। কিন্তু তাই বলে যে কোনও আশার আলো নেই, এমনও নয়। এমন অসাধ্য সাধনের উদাহরণ রয়েছে বিস্তর।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ মার্চ ২০২৪ ১২:৫৪
Share:

বেশি বয়সেও শুরু হতে পারে নতুন অধ্যায়। ছবি: সংগৃহীত।

পুত্রসন্তানের জন্ম দিলেন প্রয়াত পঞ্জাবি গায়ক সিধু মুসেওয়ালার মা চরণ কউর। ২০২২ সালে দুষ্কৃতীদের গুলিতে প্রয়াত হন সিধু। ছেলের মৃত্যুর দু’বছরের মাথায় দ্বিতীয় বার মা হলেন তিনি। রবিবার সকালে পুত্রসন্তানের জন্ম দেন চরণ। গত মাসের শেষ দিকে প্রকাশ্যে আসে তাঁর অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার খবর। ৫৫ বছর বয়সে মা হওয়ার খবরে শুরু হয় জোর চর্চা। ৫০ পেরিয়ে মা হওয়া সহজ নয়। একটা বয়সের পর আর স্বাভাবিক পদ্ধতিতে অন্তঃসত্ত্বা হওয়া সম্ভব নয়। কিন্তু তাই বলে কোনও আশার আলো নেই, এমনও নয়। এর আগেও এমন অসাধ্য সাধনের উদাহরণ রয়েছে। ৫৩ বছর বয়সে সুপারমডেল নাওমি ক্যাম্পবেলের মা হওয়ার খবরে অনেকেই স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছিলেন। এমন উদাহরণ তো শুধু বাস্তবে নয়, রুপোলি পর্দাতেও রয়েছে। ‘বধাই হো’ ছবিতে নীনা গুপ্ত অভিনীত চরিত্রটি ৫০ পেরিয়েই মা হয়েছিল।

Advertisement

স্বাভাবিক পদ্ধতিতে সন্তানধারণের ক্ষেত্রে মহিলাদের নির্দিষ্ট একটা বয়স থাকে। ঋতুস্রাব বন্ধ হয়ে গেলে সন্তানধারণ করার কোনও সম্ভাবনা থাকে না। মেয়েদের ঋতুস্রাবের নির্দিষ্ট সময়সীমা থাকে। ১৩-১৪ বছর বয়স থেকে শুরু করে ৪০-৪৫ পর্যন্ত ঋতুস্রাব চলার কথা। ৫০ তো দূরের কথা, ৩৫ বছরের পর সন্তানধারণ বেশ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যায়। কিন্তু নাওমি বা সিধুর মা চরণ কী ভাবে পারলেন?

চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, আসলে এই বয়সে প্রজননে সহায়ক হরমোনগুলির মাত্রা কমে যায়। তাই স্বাভাবিক নিয়মে সন্তানধারণ করা সম্ভব হয় না। কিন্তু আইভিএফ পদ্ধতিতে ডিম্বাণু প্রতিস্থাপন করতে হয়। তার পর বাইরে থেকে হরমোনের সাপোর্ট প্রয়োজন হয়। ইস্ট্রোজেন এবং প্রজেস্টেরনের সহযোগিতা ছাড়া ৯ মাস পর্যন্ত সন্তানধারণ করা সম্ভব নয়। আসলে অনেকেরই ধারণা, ঋতুস্রাব বন্ধ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ডিম্বাশয়ে ডিম্বাণুও নিঃশেষিত হয়ে যায়। সত্যিই কি তাই?

Advertisement

প্রতি মাসে ঋতুস্রাবের সঙ্গে একটি করে ডিম্বাণু বেরিয়ে যায়। এই ভাবে প্রায় ৩০ বছর পর্যন্ত ৩৬০ থেকে ৩৭০টি ডিম্বাণু বেরিয়ে যায়। কিন্তু ডিম্বাশয়ে হাজার হাজার ডিম্বাণু থাকে। তার মধ্যে থেকে যদি ৩৭০টি বেরিয়েও যায়, তা হলেও অসুবিধা নেই। ফলে ঋতুস্রাব বন্ধ হওয়ার পরেও ডিম্বাশয়ে ডিম্বাণু থাকে। কিন্তু নিস্ক্রিয় অবস্থায় থাকে। তবে এ ক্ষেত্রে, একটি বিষয় মাথায় রাখা জরুরি। কেউ চাইলে নিজের ডিম্বাণু হিমায়িত অবস্থায় রাখতে পারেন। ডিম্বাণু ফ্রিজ় করে রাখা হয়। ৫০-এর পর স্বাভাবিক শারীরিক সম্পর্কের মাধ্যমে সন্তানধারণ একেবারেই সম্ভব নয়। হয় অন্য কারও থেকে ডিম্বাণু সংগ্রহ করতে হবে, না হয় বিশেষ পদ্ধতিতে তা নিজের শরীর থেকে ডিম্বাণু নিয়ে নিষিক্ত করার পরই প্রতিস্থাপন করা হয় জরায়ুতে। তবে এই চিকিৎসাপদ্ধতি যথেষ্ট ব্যয়বহুল।

৫০-এর পর মা হওয়ার কিছু ঝুঁকিও থাকে। অনেকে ক্ষেত্রেই অনিচ্ছাকৃত গর্ভপাতের মতো ঘটনা ঘটে। ডায়াবিটিসের সমস্যা দেখা দিতে পারে। প্রি-ক্ল্যাম্পসিয়া অর্থাৎ অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় রক্তচাপের মাত্রা বেড়ে যেতে পারে। যা অনেক সময় জীবনহানির কারণ হয়েও উঠতে পারে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement