থালায় কী ভাবে খাবার সাজাবেন? —প্রতীকী ছবি।
শারীরিক ও মানসিক ভাবে ভাল থাকতে গেলে জীবনে কিছু ভাল অভ্যাসের দরকার। তারই মধ্যে একটি হল, সঠিক খাওয়া-দাওয়া। বলতেই পারেন, নিয়ম করেই তো খান। সকালে উঠে একপ্রস্থ, তারপর দুপুরের খাবার, সঠিক সময়ে রাতের খাবার। পাতে থাকে ভাত, মাছ, রকমারি সব্জি।
কিন্তু এতেই কি সুস্থ থাকা যায়? পেট ভরে খেলেই কি শরীর সঠিক পুষ্টি পায়? প্রতিদিন সাজিয়ে গুছিয়ে খাবার পরিবেশনের আগে বুঝে নেওয়া দরকার, শরীর কী চায়।
প্রতিদিন শরীরের প্রয়োজন
শর্করা, প্রোটিন, ফ্যাট, ভিটামিন ও খনিজ এবং জল বা তরল জাতীয় খাবার শরীরের জন্য প্রয়োজন। এর মধ্যে কোনও একটি বেশি খেলে, পেট ভরতে পারে, তবে পুষ্টির ভারসাম্য রক্ষা হবে না।
শর্করা দ্রুত শরীরে শক্তি জোগাতে সাহায্য করে। তবে শরীর ভাল রাখতে শর্করা যুক্ত খাবারও সঠিক ভাবে বেছে নেওয়া জরুরি। বাজার চলতি চালের বদলে ব্রাউন রাইস, কিনোয়া, ওট্স খেলে শরীর ভাল থাকবে। বিশেষত ডায়াবেটিক রোগীদের শরীরে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকবে। প্রোটিন পেশি গঠনে, শারীরবৃত্তীয় ক্রিয়ার জন্য শক্তি জোগাতে সাহায্য করে। ওজন কমাতে চাইলেও শরীরে ভাল ফ্যাটের গুরুত্ব আছে। তা পাওয়া যায় আখরোট, কাঠবাদাম, পেস্তায়। এর সঙ্গে প্রয়োজন ভিটামিন ও খনিজ। যা শরীরকে সচল রাখতে, বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে কর্মক্ষমতা বৃদ্ধিতে, রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে। এর সঙ্গে প্রয়োজন জল বা তরল জাতীয় খাবার। নিয়মিত ২-৩ লিটার জল একজন প্রাপ্তবয়স্ক ও সুস্থ মানুষের শারীরবৃত্তীয় ক্রিয়াকলাপ সম্পাদনে জরুরি।
থালা কী ভাবে সাজাবেন?
সুস্থ থাকতে থালার অর্ধেকটা অংশে থাকা প্রয়োজন সব্জি, টাটকা ফল। অর্থাৎ খাবারের অর্ধেক থাকবে সব্জি ও ফল, যেখান থেকে শরীর ভিটামিন ও খনিজ পাবে। তাতে অন্তত দু’রকমের সব্জি ও ফল থাকা দরকার।
খালি থাকা বাকি অর্ধেকের অর্ধেকে রাখতে হবে দানাশস্য ও ফাইবার। যেমন কিনোয়া, ওট্স, মাল্টিগ্রেন পাঁউরুটি বা রুটি। দানাশস্য ও ফাইবার শরীরকে শক্তি জোগাবে ও রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করবে।
থালার বাকি অংশে রাখতে হবে প্রোটিন। প্রাণিজ প্রোটিন, উদ্ভিজ্জ প্রোটিন ইচ্ছামতো রাখা যেতে পারে।
জুড়তে হবে বিভিন্ন ধরনের বাদাম, যা ভাল ফ্যাটের জোগান দেবে।
সঠিক ভাবে থালা সাজানোর অর্থ হল পুষ্টিকর খাবারের সঠিক বণ্টন। খাবারে সমতাই সুস্থ থাকার অন্যতম চাবিকাঠি।
প্রতিবেদনটি সচেতনতার উদ্দেশ্যে লেখা। বয়স ও শরীর অনুযায়ী এই সমতা, বদলের প্রয়োজন হতে পারে। তাই কোন খাবার কতটা খাবেন, পুষ্টিবিদের পরামর্শ মেনে চললে আরও ভাল ফল পাবেন।