রোদে বেরোলে রোদচশমা, টুপি, স্কার্ফ, ছাতা অবশ্যই সঙ্গে রাখুন। ফাইল চিত্র।
অসহ্য গরমে অতিষ্ঠ হলেও অফিসকাছারি-রান্না-খাওয়া কিছুই তো আর থেমে থাকবে না। কাজের প্রয়োজনে বাড়ির বাইরে যাওয়া তাই বন্ধ রাখা যাচ্ছে না। বাড়িতেও শিশু ও বয়স্করা গরমে কষ্ট পাচ্ছেন। গুমোট গরমে প্যাচপেচে ঘাম যেন অস্বস্তি আরও বাড়াচ্ছে। এই গরমে কারও হজম করতে অসুবিধা হচ্ছে, কেউ আবার রোদে বেরোলেই মাথাব্যথায় কষ্ট পাচ্ছেন। তার উপর গরমেও সর্দি-কাশি, জ্বর, পেটের সমস্যা ঘরে ঘরে লেগেই রয়েছে।
চিকিৎসকদের মতে, যাঁদের নিয়মিত উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ, হার্টের অসুখের ওষুধ কিংবা কোনও ক্রনিক অসুখের ওষুধ খেতে হয়, গরমে তাঁদের সমস্যা বেড়ে যেতে পারে। তাঁদের চড়া রোদ্দুরে না বেরোনোই ভাল। আর যদি একান্ত বেরোতেই হয়, তা হলে নিতে হবে বাড়তি সতর্কতা।
রোদে বেরোতে হলে চাঙ্গা থাকবেন কোন উপায়?
১) সঙ্গে জলের বোতল রাখতে ভুলবেন না। মাঝেমাঝেই জলে চুমুক দিতে থাকুন। জল ছাড়াও ডাবের জল, টাটকা ফলের রস, দইয়ের ঘোলের মতো পানীয়ও সঙ্গে রাখতে পারেন।
২) গাঢ় রঙের পোশাক এড়িয়ে চলুন। হালকা রঙের সুতির ঢিলেঢালা পোশাক পরুন। রোদচশমা, টুপি, স্কার্ফ, ছাতা অবশ্যই সঙ্গে রাখুন। লু থেকে রেহাই পেতে সাদা সুতির ওড়না দিয়ে মাথা ও মুখ ঢেকেই রাস্তায় বেরোন।
৩) গরমের দিনগুলিতে চা, কফি, নরম পানীয়, সোডাযুক্ত পানীয় এড়িয়ে চলুন। এই সব পানীয় শরীরে জলের ঘাটতির জন্য দায়ী হতে পারে। যাদের ক্রনিক কিডনির অসুখ বা হার্টের সমস্যা আছে, তাদের জল খেতে হয় মাপ অনুযায়ী। কষ্ট হলে চিকিৎসককে অসুবিধার কথা জানান। আর শসা, জামরুল, পাকা পেঁপে জাতীয় ফল খেয়ে জলের ঘাটতি মেটানোর চেষ্টা করুন।
৪) অতিরিক্ত প্রোটিন ও প্রক্রিয়াজাত খাবার গরমের দিনে বেশি না খাওয়াই ভাল। বাইরের তেল-মশলাদার খাবার একেবারে নয়, বাড়িতে হালকা পাতলা খাবার খান।
৫) গরমে ত্বকের সংক্রমণ থেকে রেহাই পেতে চাইলে সানস্ক্রিন না মেখে বাড়ির বাইরে বেরোবেন না।
শরীরে যেন ঘাম না বসে, সে বিষয়ে সতর্ক থাকুন। ছবি: সংগৃহীত।
৬) দুপুর দুটো পর্যন্ত তাপমাত্রা সবচেয়ে বেশি থাকে। এই সময়ে বাইরে গেলে অসুস্থ হয়ে পড়ার ঝুঁকি থাকে। খুব কষ্ট হয়। তাই চেষ্টা করবেন দুপুর বারোটা থেকে বিকেল তিনটের মধ্যে অফিসে বা কোনও ঘরে থাকার।
৭) গরমে ভয়ানক ঘাম হলে, চোখে অন্ধকার দেখলে অথবা শ্বাসের কষ্ট হলে দেরি না করে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। গরমে ভয়ানক বিপদে পড়তে হয় পার্ক করা গাড়ির মধ্যে বসে থাকলে। এর থেকে মারাত্মক বিপদের ঝুঁকি থাকে। বিশেষ করে পোষ্য আর শিশুকে গাড়িতে বন্ধ করে বেশি ক্ষণ রেখে দেবেন না।
৮) গরমে শরীর ঠান্ডা রাখতে দইয়ের জুড়ি মেলা ভার। সকাল হোক বা দুপুর— পাতে টক দই রাখতে ভুলবেন না।
৯) আচমকাই মাথা ঘোরা, মাথায় যন্ত্রণা, ঘন ও কড়া দুর্গন্ধযুক্ত প্রস্রাব, সময়বিশেষে প্রস্রাব বন্ধ হয়ে যাওয়া, মুখ ও নাক শুকিয়ে যাওয়া, ত্বকে সাড় না পাওয়া ও বমি বমি ভাব, সঙ্গে দুর্বলতা অনুভব করলেই বুঝতে হবে শরীর জলশূন্য হয়ে গিয়েছে। শরীর জলশূন্য হয়ে যাওয়ার উপসর্গগুলি যত তাড়াতাড়ি বুঝতে পারবেন, রোগীর পক্ষে ততই ভাল।
১০) গরমের সময়ে দিনে তিন থেকে চার বার স্নান করার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। শরীরে যেন ঘাম না বসে, সে বিষয়ে সতর্ক থাকুন। বাইরে বেরোলে সঙ্গে অবশ্যই ওয়েট টিস্যু রাখুন।