ওট্স কী ভাবে কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে? ছবি: সংগৃহীত।
কোলেস্টেরল এক নীরব ঘাতক। এই রোগের হাত ধরেই শরীরে বাসা বাঁধে হৃদ্রোগ। কোলেস্টেরল আবার একা আসে না, নিজের সঙ্গে জমায় অন্যান্য স্নেহ পদার্থও। ফলে ক্ষতি হয়ে যায় রক্তবাহের। বিজ্ঞানের ভাষায় একে বলে ‘অ্যাথেরোস্ক্লেরোসিস’। হৃদ্যন্ত্রের সংলগ্ন শিরা বা ধমনীতে এই ধরনের অবরোধ দেখা দিলে তা যেমন হৃদ্রোগের কারণ হতে পারে তেমনই মস্তিষ্কে ঘটলে বাড়ে স্ট্রোকের আশঙ্কা। কোলেস্টেরল ধরা পড়লে খাওয়াদাওয়ায় অনেক বিধিনিষেধ চলে আসে। এই রোগ হলে কী কী খাওয়া যাবে না সেই তালিকা লম্বা, তবে কী খেলে এই রোগের সঙ্গে লড়াই করা সম্ভব, তা অনেকেই জানেন না। ওট্স কিন্তু কোলেস্টেরলের রোগীদের জন্য বেশ ভাল দাওয়াই। জেনে নিন কী ভাবে এই খাবার রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।
১) আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশন বলছে, নিয়ম করে ওট্স খেলে দেহে কোলেস্টেরলের সার্বিক পরিমাণ অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আসতে পারে। পাশাপাশি, ওট্স স্থূলতার সমস্যা কমাতেও কাজে আসে। যা পরোক্ষ ভাবে কমায় হৃদ্রোগের আশঙ্কা।
২) ওট্সে বিভিন্ন প্রকার ‘ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট’ থাকে। এই উপাদান স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। এমনই একটি ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট হল ‘অ্যাভেনানথ্রামাইড’। এটি এক ধরনের অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট। এই উপাদানটি প্রদাহ কমাতে কাজে আসে। এ ছাড়া, শিরা ও ধমনীর দেওয়ালে আটকে থাকা বিভিন্ন উপাদান সাফ করতেও সাহায্য করে এটি।
৩) ওট্স ভেজানো জলে বিটা গ্লুকান নামের একটি উপাদান থাকে। এটি এক ধরনের ফাইবার বা তন্তু জাতীয় উপাদান। দেহে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে কাজে আসে এই উপাদান।
ওট্স থেকে প্রাপ্ত ফাইবারে থাকে এমন কিছু উপাদান, যা রক্তনালির পুনর্গঠনে সহায়তা করে। ছবি: সংগৃহীত।
৪) ওট্স থেকে প্রাপ্ত ফাইবারে থাকে এমন কিছু উপাদান, যা রক্তনালির পুনর্গঠনে সহায়তা করে। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত রক্তনালিগুলি পুনরায় চাঙ্গা হয়ে ওঠে। রক্তবাহ ভাল থাকলে অক্সিজেনের আদানপ্রদান ভাল হয়। অ্যাথেরোস্ক্লেরোসিস রোগে রক্ত চলাচলেও সমস্যা দেখা দেয়। তাই রক্তে পর্যাপ্ত অক্সিজেন থাকলে বাঁচাতে পারে প্রাণ।
ডায়েটে কী ভাবে রাখবেন ওট্স?
সকালে প্রাতরাশে রাখতে পারেন ওট্স। তবে কোনও কিছুই বেশি খাওয়া ভাল নয়। তাই ডায়েটে পরিমিত মাত্রায় ওট্স রাখতে হবে। তবে বাজার থেকে মশলাদার ইনস্ট্যান্ট ওট্স কিনে সেটা খেলে চলবে না। স্টিল কাট কিংবা রোল্ড ওট্স খেতে হবে। ওট্স দিয়ে বাড়িতে চিলা, স্মুদি, খিচুড়ি বানিয়ে ফেলতে পারেন। এ ছাড়া সারা রাত দুধে ওট্স ভিজিয়ে রেখে ফল, কাঠবাদামের সঙ্গেও ওট্স খেতে পারেন।
প্রতিবেদনটি সচেতনতার জন্য লেখা হয়েছে। ডায়েটে কোনও রকম বদল আনার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের সঙ্গে পরমার্শ করুন।