দিনে কত কাপ লিকার চা খাওয়া নিরাপদ? ছবি: ফ্রিপিক।
দুধ-চিনি দেওয়া চা খেলে গ্যাস-অম্বলের সমস্যা হয় অনেকের। অগত্যা লাল চা বা লিকার চা-ই ভরসা। অফিসে কাজের ফাঁকে বারে বারে চায়ের পেয়ালার দিকেই হাত চলে যায়। কাজের একঘেয়েমি কাটাতে, ক্লান্তি দূর করতে ঘন ঘন লিকার চা খাওয়ার অভ্যাস আছে অনেকেরই। দিনে পাঁচ থেকে ছ’কাপ বা তার বেশিও লিকার চা খেয়ে ফেলেন অনেকে। এই অভ্যাস কি আদৌ স্বাস্থ্যকর?
অনেকেই ভাবেন, দুধ-চিনি ছাড়া চা মানে তা খুবই স্বাস্থ্যকর। অতএব যত খুশি খেয়ে ফেললেও ক্ষতি নেই। তা কিন্তু একেবারেই নয়। পুষ্টিবিদ শম্পা চক্রবর্তীর মতে, লিকার চায়ের পুষ্টিগুণ অনেক। অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট সমৃদ্ধ লাল চায়ে ফ্ল্যাভোনয়েডস, ফাইটোকেমিক্যাল, অ্যান্টিইনফ্ল্যামেটরি উপাদান থাকে, যা শরীরের জন্য ভাল। যদি লিকার চায়ে আদা, দারচিনি বা মধু মিশিয়ে খাওয়া যায়, তা হলে এর পুষ্টিগুণ আরও বাড়ে। তবে এতে কিন্তু ক্যাফিনও থাকে। তাই অতিরিক্ত খেয়ে ফেললে তা শরীরে ক্ষতিই করবে।
পুষ্টিবিদের মতে, লিকার চা-ও খেতে হবে মেপেই। দিনে দু’বার যথেষ্ট। এর বেশি খেলেই তখন নানা সমস্যা দেখা দেবে। এক কাপ চায়ে ২ থেকে ৪ শতাংশ ক্যাফিন থাকে। দিনে ১০০-২০০ মিলিগ্রাম অবধি ক্যাফিন শরীরের জন্য সহনীয়। কিন্তু এর বেশি হয়ে গেলেই তা নানা অসুখবিসুখের কারণ হতে পারে।
দিনে যদি পাঁচ কাপ বা তার বেশি লিকার চা খেতে শুরু করেন, তা হলে প্রতি দিন শরীরে ২৮০-৩০০ মিলিগ্রাম বা তার বেশি ক্যাফিন ঢুকবে। তখন ক্লান্তি দূর হওয়ার বদলে তা আরও বাড়বে। পাশাপাশি উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা, মাথা যন্ত্রণা, অনিদ্রার সমস্যা দেখা দেবে। অতিরিক্ত ক্যাফিন হজমের সমস্যা, রক্তচাপ বাড়িয়ে দিতে পারে। এর প্রভাবে হৃৎস্পন্দনও বিগড়ে যেতে পারে।
সমস্যা কেবল লিকার চায়ে নয়। পুষ্টিবিদ জানাচ্ছেন, সারা দিনে আরও এমন অনেক খাবার ও পানীয় খাওয়া হয় যাতে ক্যাফিনের মাত্রা বেশি। কেউ দিনে চার থেকে পাঁচ কাপ লিকার চা খাচ্ছেন, আবার পরক্ষণেই ঠান্ডা পানীয় খাচ্ছেন, রাতে হয়তো মদ্যপানও করছেন, কাজেই সব মিলে শরীরে ক্যাফিনের মাত্রা বিপজ্জনক ভাবে বেড়ে যাচ্ছে। তাই যা-ই খান না কেন, তা পরিমিত মাত্রাতেই খেতে হবে।