মাথা-গলার ক্যানসার বাড়ছে ক্রমশ। প্রতীকী ছবি।
বিশ্বজুড়ে নানা ধরনের ক্যানসারের প্রকোপ বেড়েই চলেছে। তবে ইদানীং ‘হেড অ্যান্ড নেক’ ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ছে। মাথা-গলার ক্যানসার শরীরের কোনও একটি অঙ্গে হয় না। শরীরের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ, বিশেষ করে গলার ও মাথা সংলগ্ন যতগুলি অঙ্গ, সর্বত্র এই ক্যানসার ছড়িয়ে পড়ে। মুখের ক্যানসার, গলার ক্যানসার, স্বরযন্ত্রের ক্যানসার, নাকের ক্যানসার, সাইনাসের ক্যানসার, থাইরয়েডের ক্যানসার— এই সবগুলির সমষ্টির নাম হল ‘হেড অ্যান্ড নেক’ ক্যানসার। পরিসংখ্যান জানাচ্ছে, সম্প্রতি এই ক্যানসারে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে গিয়েছে।
‘হেড অ্যান্ড নেক ক্যানসার’ কেন হয়?
মূলত অত্যধিক তামাক সেবনের ফলে এই ধরনের ক্যানসার হয়। ধূমপান তো বটেই, সেই সঙ্গে গুটখা, খৈনি খাওয়ার অভ্যাসও এই ধরনের ক্যানসারের নেপথ্যে রয়েছে। মাথা-গলার ক্যানসারে জিভ সবচেয়ে আগে আক্রান্ত হয়। খুব তাড়াতাড়ি ছড়ায় এটি। আগে জিভ বাদ দিতে হত। তবে চিকিৎসা বিজ্ঞান উন্নত হওয়ায় এখনও পুরোটা দিতে হয় না। চিকিৎসকের চেষ্টা করেন অঙ্গগুলি যতটা সম্ভব বাঁচানোর। রেডিয়েশনে পদ্ধতি এখন অনেক উন্নত। অস্ত্রোপচারের ধরনও অনেক পরিবর্তিত। তবে চিকিৎসকের জানাচ্ছেন, এটা সবটাই সম্ভব যদি ক্যানসার প্রাথমিক পর্যায়ে ধরা পড়ে। দেরি হয়ে গেলে এ ধরনের ক্যানসারের সঙ্গে লড়াই করা কঠিন হয়ে পড়ে। মাড়িতে ঘা, দাঁতে দীর্ঘ দিন ধরে ব্যথা, গলা ব্যথা, গলা জ্বালা— দীর্ঘ দিন ধরে এ ধরনের উপসর্গ দেখা দিলে ফেলে রাখা ঠিক হবে না।
দৈনন্দিন জীবনের কিছু অনিয়ম এই ক্যানসার ডেকে আনে। তাই ঝুঁকি কমাতে রোজের জীবনে কিছু বদল আনা জরুরি। তামাকজাত দ্রব্য, মদ্যপানের কারণে তো বটেই, সেই সঙ্গে অত্যধিক পরিমাণে বাইরের খাবার খাওয়ার ফলেও মাথা এবং গলার এই ক্যানসার হতে পারে। শরীরে ভিটামিন এ, সি, ই, আয়রন, সেলেনিয়াম, জিঙ্কের মতো উপাদানের ঘাটতি তৈরি হলেও ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়তে থাকে। সেই সঙ্গে প্রক্রিয়াজাত খাবারের প্রতি ঝোঁক, নিয়ম করে তেল-মশলা খাওয়ার ফলেও ক্যানসারের ঝুঁকি থেকে যায়। এই ক্যানসার থেকে দূরে থাকার অন্যতম উপায় হল, ধূমপান এবং তামাকজাত দ্রব্য সেবন বন্ধ করতে হবে। তা না হলে সুস্থ থাকা সম্ভব নয়। সেই সঙ্গে পরিবর্তন আনতে হবে খাদ্যাভ্যাসেও। ফলমূল এবং শাকসব্জি বেশি করে খেতে হবে। মদ্যপান করা বন্ধ করতে হবে। বাইরের প্রক্রিয়াজাত খাবারদাবার থেকেও দূরে থাকতে হবে।