বাচ্চারা কিন্তু টিকাপ্রাপ্ত নয়। ছবি: সংগৃহীত
প্রায় দু’বছর পর খুলেছে স্কুল। ২০২০ সালে কোভিড আবহে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল স্কুল-কলেজের দরজা। মাঝখানে পেরিয়ে গিয়েছে দুটো বছর। এই আবহে অনিশ্চয়তার মুখে এসে দাঁড়িয়েছিল ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যৎ। কোভিড পরিস্থিতি বর্তমানে কিছুটা হলেও থিতু হয়েছে। বাচ্চারাও হাসিমুখে আবার পা রাখছে স্কুলের গণ্ডিতে।
সাম্প্রতিকতম করোনা স্ফীতিতে শারীরিক উপসর্গ অনেক কম সক্রিয়। কোভিডের নয়া রূপ ওমিক্রন অনেক বেশি সংক্রামক হলেও শারীরিক সমস্যার দিক থেকে অনেকটাই মৃদু। গত তিন মাসে ওমিক্রন বিশ্বব্যাপী যে দ্রুতগতিতে ছড়িয়ে পড়েছিল তা নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন চিকিৎসকরা। বিগত কয়েক দিন দেশ জুড়ে ওমিক্রন আক্রান্তের সংখ্যা অনেকটাই হ্রাস পেয়েছে। তবে এখনও অনেকেই আক্রান্ত হচ্ছেন। এই পরিস্থিতিতে যে সব বাচ্চারা নিয়মিত স্কুলে যাচ্ছে তাদের দিকে বাড়তি নজর দেওয়া অবশ্যই প্রয়োজন। কারণ প্রাপ্তবয়স্কদের টিকা দেওয়ার প্রক্রিয়া চললেও বাচ্চারা কিন্তু টিকাপ্রাপ্ত নয়। ফলে বাড়ি থেকে অন্য পরিবেশে গিয়ে সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা থেকেই যায়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) জানাচ্ছে, প্রাপ্তবয়স্কদের তুলনায় শিশুদের মধ্যে কোভিডের উপসর্গ কম লক্ষণীয়। জ্বর, সর্দি, কাশি, ঠান্ডা লাগা, মাথা ব্যথা, নাক বন্ধ হওয়ার মতো কিছু কিছু উপসর্গ লক্ষণীয়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনাভাইরাসের সংস্পর্শে আসার প্রায় ছ’দিন পর বাচ্চাদের মধ্যে এই লক্ষণগুলি ফুটে ওঠে। প্রাথমিক ভাবে সাধারণ ঠান্ডা লাগার সঙ্গে এই উপসর্গগুলিকে গুলিয়ে ফেলেন অনেকেই। তবে স্কুল যাওয়া আসার এই সময়ে বাচ্চাদের যদি কোনও একটিও উপসর্গ দেখা দেয়, অভিভাবকদের উচিত তা হালকা ভাবে না নেওয়া।
বাচ্চাদেরকেই এই পরিস্থিতি সম্পর্কে অবগত করান। ছবি: সংগৃহীত
তবে কয়েকটি বিশেষ ক্ষেত্রে, যেমন শ্বাস নিতে অসুবিধা হওয়া বা ঠোঁট নীল হয়ে যাওয়ার মতো সমস্যা বাচ্চাদের মধ্যে দেখা দিলে নিজেরা কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে নেওয়া জরুরি।
আমেরিকার ‘সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন’-এর বিশষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, যে সব বাচ্চা অতিরিক্ত ওজন, ফুসফুস বা অপুষ্টিজনিত সমস্যা বা হাঁপানিতে দীর্ঘ দিন ধরে ভুগছে তাদের জন্য করোনা সংক্রমণ আশঙ্কাজনক হতে পারে। আপনার বাচ্চা যদি এর মধ্যে কোনও একটি সমস্যায় ভুগে থাকে সে ক্ষেত্রে কিন্তু বাড়তি সুরক্ষা নেওয়া প্রয়োজন।
স্কুলে অভিভাবকরা বাচ্চাদের সুরক্ষা নেওয়ার সুযোগ পান না। তাই বাচ্চাদেরকেই এই পরিস্থিতি সম্পর্কে অবগত করান। মাস্ক পরে থাকার গুরুত্ব বোঝান। বার বার স্যানিটাইজার ব্যবহার করার কথা বলুন। বাচ্চাদের পক্ষে স্কুলে গিয়ে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখাটা খুবই কঠিন একটি বিষয়। তবুও অন্তত স্কুল ঘরের মধ্যে না খেলাধুলা করে বাইরে মাঠে খেলার কথা বলে দিন। বদ্ধ পরিবেশে সংক্রমণের আশঙ্কা অনেক বেশি থাকে।