ক্যামেরন ডিয়াজ় এবং তাঁর স্বামী বেনজি ম্যাডেন। ছবি: সংগৃহীত।
সন্তানধারণের ক্ষেত্রে মহিলাদের যে নির্দিষ্ট বয়স থাকে, সেই ছক ভাঙতে শুরু করেছিল অনেক আগেই। এ বিষয়ে অগ্রজ অবশ্যই হলিউড। মডেল নাওমী ক্যাম্পবেল, ব্রিজিট নিয়েলসন, গায়িকা ম্যাডোনা, অভিনেত্রী ডায়ান কিটোন, টেনিস তারকা সেরেনা উইলিয়াম্স— তালিকা দীর্ঘ। সেই তালিকায় এ বার নাম লেখালেন হলিউডের আরও এক প্রথম সারির অভিনেত্রী ক্যামেরন ডিয়াজ়। ৫১ বছর বয়সে পুত্রসন্তানের জন্ম দিয়েছেন ‘ভ্যানিলা স্কাই’-এর নায়িকা। পুত্র কার্ডিনালের জন্মের খবর নিজেদের সমাজমাধ্যমে জানিয়েছেন ক্যামেরন এবং তাঁর স্বামী বেনজি ম্যাডেন।
তবে সিনেমা হোক বা বাস্তব— বেশি বয়সেও যে মাতৃত্বের সুখ পাওয়া যায়, সেই প্রমাণ রয়েছে আমাদের দেশেও। কিছু দিন আগেই সে প্রমাণ দিয়েছেন প্রয়াত পঞ্জাবি গায়ক সিধু মুসেওয়ালার মা। অনেকেই জানেন, মেয়েদের স্বাভাবিক ভাবে সন্তানধারণের ক্ষমতা কমতে থাকে চল্লিশের পর থেকেই। পঞ্চাশের কাছাকাছি সময়টাতে সাধারণত মহিলাদের রজঃনিবৃত্তি হয়ে যায়। কারও ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম অবশ্যই থাকে। তবে অনেকেরই ধারণা রজঃনিবৃত্তি হয়ে গেলে স্বাভাবিক পদ্ধতিতে সন্তানধারণ করার ক্ষমতা থাকে না। তবে, বয়স্ক দম্পতিদের কাছে ইদানীং ইন ভিট্রো ফার্টিলাইজ়েশন (আইভিএফ) বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। যে সকল মহিলার স্বাভাবিক পদ্ধতিতে সন্তানধারণ করতে সমস্যা হয়, তাঁদের ক্ষেত্রে এই পদ্ধতি খরচসাপেক্ষ হলেও ফলদায়ক।
এই পদ্ধতি ঠিক কী রকম?
সকল মেয়েরই ঋতুস্রাবের নির্দিষ্ট আয়ুষ্কাল থাকে। সাধারণত ১৩-১৪ বছর বয়স থেকে শুরু করে ৪০ বা ৪৫ বছর পর্যন্ত ঋতুস্রাব চলার কথা। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, ৩৫ বছরের পর সন্তানধারণ বেশ ঝুঁকিপূর্ণ। চিকিৎসক সাত্যকি হালদার আনন্দবাজার অনলাইনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, “এই বয়সে প্রজননে সহায়ক হরমোনগুলির মাত্রা কমে যায়। তাই স্বাভাবিক নিয়মে সন্তানধারণ করা সম্ভব নয়। আইভিএফ পদ্ধতিতে ডিম্বাণু প্রতিস্থাপন করতে হয়। তার পর বাইরে থেকে কৃত্রিম ভাবে হরমোনের সাপোর্ট দিতে হয়।”
রজঃনিবৃত্তি হওয়ার পর কী কী পদ্ধতিতে মাতৃত্বের সাধপূরণ হতে পারে?
আইভিএফ
মেয়েদের ডিম্বাশয়ের মধ্যে হাজার হাজার ডিম্বাণু থাকে। প্রতি মাসে ঋতুস্রাবের সময়ে একটি করে শরীরে বাইরে বেরিয়ে আসে। রজঃনিবৃত্তি হওয়ার পরেও সেগুলি নিষ্ক্রিয় অবস্থায় ডিম্বাশয়ে থেকে যায়। তাই স্বাভাবিক পদ্ধতিতে ডিম্বাণু নিষিক্ত না হলেও কৃত্রিম পদ্ধতিতে তা জরায়ু থেকে সংগ্রহ করে আবার জরায়ুতে প্রতিস্থাপন করা হয়।
এগ ফ্রিজ়িং
আজকাল অনেকেই ডিম্বাণু সংরক্ষণ করে রাখেন। নির্দিষ্ট বয়সের মধ্যে সেই ডিম্বাণু জরায়ু থেকে সংগ্রহ করে বিশেষ পদ্ধতিতে তা হিমায়িত করে রাখা যায়। সময়-সুবিধা মতো সেই ডিম্বাণু নিষিক্ত করে পুনরায় তা জরায়ুতে প্রতিস্থাপন করানো হয়। সেই পদ্ধতি ব্যয়বহুল। বিদেশে মেয়েরা চাইলে নিজের ডিম্বাণু হিমায়িত রাখতে পারেন। এখন এই শহরেও সেই পরিকাঠামো আছে। তবে তা খরচসাপেক্ষ একটি পদ্ধতি। ফলে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে চিকিৎসকের সঙ্গে আলোচনা করা দরকার।