মাথা যন্ত্রণা কমবে ঘরোয়া উপায়েই। ছবি: ফ্রিপিক।
অতিরিক্ত চিন্তাভাবনা করলেই মাথা যন্ত্রণা শুরু হয়? কপালের দু’পাশের রগ মনে হয় ছিঁড়ে যাচ্ছে ব্যথায়। অনেকের আবার ঘুম থেকে ওঠার পরেও মাথাব্যথা করে। এই সবেরই কারণ কম ঘুম, বেশি চিন্তা, মানসিক চাপ, অতিরিক্ত নেশার অভ্যাস। মাথা যন্ত্রণা সহ্য করা বড় কঠিন। তাই ব্যথা শুরু হলেই দেখবেন অনেকে মুঠো মুঠো ব্যথানাশক ওষুধ খেয়ে ফেলেন। অথবা দেদার চা-কফি খেতে শুরু করেন। তাতে ব্যথা আরও বেড়ে যায়। তা হলে মাথা যন্ত্রণা শুরু হলে কী করা উচিত?
চিকিৎসকেরা বলছেন, ওষুধ না খেয়ে বা জেল না লাগিয়ে, কিছু নিয়ম মানলেই কাজ হবে বেশি। প্রাকৃতিক উপায়েই যন্ত্রণা কমবে খুব তাড়াতাড়ি।
১) প্রাতরাশ বাদ দিলে চলবে না। অনেকেই রোজের তাড়াহুড়োয় প্রাতরাশ না খেয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান। তার পর সারা দিন কাজের মাঝে প্রচুর চা-কফি খেতে শুরু করেন। একেই কাজের চাপ, তার উপর কাজ সংক্রান্ত চিন্তাভাবনা, সব মিলিয়ে মাথা যন্ত্রণা শুরু হয়ে যায় অচিরেই। চিকিৎসকেদের পরামর্শ, নির্দিষ্ট সময়ে পরিমিত খেতে হবে, খাওয়া বাদ দিলে চলবে না।
২) সারা দিনে যদি বেশি করে জল খান, তা হলে মাথাব্যথা হবে না। এক জন প্রাপ্তবয়স্ককে দিনে তিন থেকে সাড়ে তিন লিটার জল খেতেই হবে। তবে ডায়াবিটিস ও অন্যান্য অসুখ থাকলে দিনে কতটা পরিমাণ জল খাবেন সেটা চিকিৎসকের থেকে জেনে নেওয়াই ভাল।
৩) অতিরিক্ত মানসিক চাপ, উদ্বেগ, অবসাদ থেকে মাথাব্যথার সমস্যা হতে পারে। মাইগ্রেন থাকলে এই সমস্যা আরও বাড়ে। মাথাব্যথা হলেই যাঁরা ঘন ঘন ওষুধ খান, তাদের এই সমস্যা হতে পারে। তাই আগে ব্যথানাশক ওষুধ খাওয়া বন্ধ করুন। অনেকেই মানসিক অবসাদের ওষুধ খান, রাতে ওষুধ খেয়ে ঘুমোতে যান। তাঁদেরও মাথাব্যথার সমস্যা বাড়তে পারে। প্রতি দিন তাই সকালে ঘুম থেকে উঠে কপালের দু’পাশ, ঘাড় ও কপালে হালকা হাতের মাসাজ করিয়ে নিন, অনেক আরাম পাবেন।
৪) ধূপধুনো, সুগন্ধির চড়া গন্ধেও মাথাব্যথা হতে পারে। এমন হলে সে সব গন্ধ থেকে দূরেই থাকুন।
৫) ঘুম ভাল না হলে মাথাব্যথা বাড়ে। বেশি ঘুম যেমন ভাল নয়, তেমনই কম ঘুমও ক্ষতিকর। টানা ঘুম জরুরি। ঘুমের সময় মোবাইল ঘাঁটাঘাঁটি করবেন না বা হেডফোনে জোরে গান শুনবেন না।
৬) অতিরিক্ত আওয়াজের মধ্যে থাকা, খুব জোরে গান শোনা ইত্যাদির কারণেও মাথাব্যথার সমস্যা হয়। যদি হেডফোনে কিছু শুনতেই হয়, তা হলে একটানা শুনবেন না। কিছুটা সময় বিরতি নিয়ে শুনুন। এতে কানের আরাম হয়।
৭) মাথা ধরলে বেশি আলোর মধ্যে থাকা উচিত নয়। পারলে ঘর অন্ধকার করে থাকুন। এতে মাথা যন্ত্রণা থেকে একটু আরাম পাওয়া যায়।
৮) শ্বাসের ব্যায়াম মাথাব্যথায় আরাম দিতে পারে। জোরে শ্বাস টানুন, কিছু ক্ষণ ধরে রেখে ধীরে ধীরে ছাড়ুন। ১০ মিনিট এই ব্যায়াম করতে পারেন। মাথাব্যথায় খুব আরাম দেয়।
৯) ধূমপানের অভ্যাস থাকলে ধীরে ধীরে কমিয়ে দেওয়াই ভাল।মনে রাখবেন, বেশি মাত্রায় নিকোটিন বিভিন্ন রোগের কারণ হতে পারে।