মিষ্টি কী ভাবে খেলে কোলেস্টেরল, ডায়াবিটিস সবই নিয়ন্ত্রণে থাকবে? ছবি: ফ্রিপিক।
মিষ্টি খাবেন, অথচ রক্তে শর্করা বশে থাকবে? এমনও হয় নাকি! বেশি মিষ্টি খেলে কোলেস্টেরল বাড়ার ঝুঁকি থাকে। মেদ তো বাড়বেই। ডায়াবিটিসের রোগী বা যাঁরা উচ্চ কোলেস্টেরলে ভুগছেন, তাঁদের এই সময়টাতে বড় সমস্যা। দীপাবলির সময় অথচ মিষ্টি খাওয়া যাবে না, তাই আবার হয় নাকি! বাড়িতে এই সময়ে দেদার মিষ্টির বাক্স আসছে। আবার সামনেই ভাইফোঁটা। সে দিনও নানা রকম মিষ্টি চোখের সামনেই থাকবে। তাই লোভ সামলানো সত্যিই মুশকিল। তা হলে উপায়?
মিষ্টি খান বা কেক, পেস্ট্রি, নিয়ম মেনে খেলে ক্ষতির আশঙ্কা কম। দীপাবলি বা ভাইফোঁটার দিনে এক-আধটা মিষ্টি খাওয়া যেতেই পারে, তবে তার আগে ও পরে কিছু নিয়ম মানতে হবে। কী কী সেই নিয়ম? এই বিষয়ে কিছু পরামর্শ দিয়েছেন পুষ্টিবিদ শম্পা চক্রবর্তী।
মিষ্টি কখন খাবেন
খালি পেটে কখনও মিষ্টি খাবেন না। ভরা পেটে খেতে হবে। সকালে উঠেই একথালা মিষ্টি দেখে তা খেতে শুরু করে দিলে রক্তে শর্করা বেড়ে যাবে। মিষ্টি খাওয়ার সময় হল দু’টি মিলের মাঝে। দুপুরে খেয়ে উঠে মিষ্টি খেলে তা দ্রুত হজম হবে। কারণ ওই সময়ে বিপাকক্রিয়ার হার ভাল থাকে। তবে ভুলেও রাতে মিষ্টি খাবেন না। অনেকেই রাতের খাওয়া সেরে গরম পান্তুয়া বা ভাজা মিষ্টি অথবা রাবড়ি খেয়ে ফেলেন। এই অভ্যাস ক্ষতিকর।
কতটা খাবেন
যে কোনও খাবারই পরিমিত খেলে ক্ষতি কম হয়। আর চিনি দেওয়া খাবার যতটা সম্ভব কম খাওয়াই উচিত। চেষ্টা করতে হবে সুগার ফ্রি মিষ্টি খেতে। না হলে পছন্দের মিষ্টিই খান, তবে পরিমিত। রসগোল্লা দু’টির বদলে একটি খান। লোভ সামলেও লাড্ডু বা পান্তুয়া একটিই খান। একই সময়ে দুই থেকে তিন রকম মিষ্টি খেয়ে ফেলবেন না। ধীরেসুস্থে সময় নিয়ে খান।
কী ভাবে খাবেন
পুষ্টিবিদের পরামর্শ, প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট, স্বাস্থ্যকর ফ্যাট এবং ফাইবারের মতো খাবারের সঙ্গে মিষ্টি খেলে ক্ষতির সম্ভাবনা কম। মিষ্টি খাবার পর এক মুঠো শুকনো ফল বা বাদাম খেয়ে নিন। অথবা ফ্রুট স্যালাডের সঙ্গে মিষ্টি খান। দুপুরে বা রাতে যদি বেশি ভাজাভুজি খেয়ে ফেলেন অথবা চর্বচোষ্য খাবার সাজিয়ে ভূরিভোজ খান, তা হলে শেষ পাতে মিষ্টিমুখ না করাই ভাল।
মিষ্টি খাওয়ার আগে ও পরে
মিষ্টি যে দিন খাবেন, সে দিন কোনও রকম নরম পানীয় বা প্যাকেটজাত ফলের রস খাবেন না। সকালে ঘুম থেকে উঠে মেথি ভেজানো জল খেয়ে নিন। এতে শরীর ‘ডিটক্স’ থাকবে। মিষ্টি খেলে আর দুধ-চিনি দিয়ে চা বা কফি খাবেন না। তার চেয়ে দারচিনির গুঁড়ো মিশিয়ে লাল চা বা কালো কফি খেতে পারেন। দারচিনি রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করবে, হজমশক্তি বাড়াবে। পুষ্টিবিদের পরামর্শ নিয়ে কোনও ডিটক্স পানীয় বানিয়ে রেখে দিতে পারেন। মরসুমি ফল বা সব্জি ভেজানো জল সারা দিন ধরে খেলে শরীর থেকে দূষিত পদার্থ বেরিয়ে যাবে।