কালীপুজোয় উপোস করলে কী কী নিয়ম মানবেন? প্রতীকী ছবি।
কালীপুজো মানে অনেকের কাছেই উপোস করে সারা রাত জেগে থাকা। বাড়িতে পুজো হোক, পাড়ায় বা আবাসনে— যদি রাত জাগার পরিকল্পনা থাকে এবং উপোস করবেন বলেও ভাবেন, তা হলে কিছু নিয়ম মানতেই হবে। খালি পেটে সারা রাত পুজোর নানা কাজে অংশ নেওয়া খুব সহজ নয়। অভ্যাস না থাকলে শরীর খারাপ হবেই। যদি রক্তচাপের সমস্যা অথবা অন্য কোনও রোগ থাকে, তা হলে নিয়ম না মেনে রাত জাগলে এবং দীর্ঘ সময় না খেয়ে থাকলে অসুস্থ হয়ে পড়বেন সহজে।
মেডিসিনের চিকিৎসক অরুণাংশু তালুকদার বলছেন, ‘‘উপোস করা শুধু নয়, অনেকে জল তো খানই না, ওষুধও বাদ দেন। ফলে রক্তচাপ বেড়ে গিয়ে বিপত্তি বাধে।’’ চিকিৎসকের পরামর্শ, নির্জলা উপোস কিন্তু শরীরের জন্য একেবারেই ভাল নয়। তাই চেষ্টা করুন তা এড়িয়ে চলতে। উপোস করে রাত জাগলে পুজো শুরুর আগে একটু ঘুমিয়ে নিন। এতে শরীর একটু হলেও আরাম পাবে। সারা রাত ভারী খাবার খেতে পারবেন না, তাই ডাবের জল, লস্যি বা ফল খেতে পারেন। তবে চা-কফি বেশি না খাওয়াই ভাল।
উপোস করে জল কম খেলে গ্যাসের সমস্যা তো বাড়েই, সেই সঙ্গে পেশি থেকে প্রোটিন বেরিয়ে গিয়ে যে ক্ষতি হয়, তা আর সে ভাবে পূরণ হয় না। পুষ্টিবিদ শম্পা চক্রবর্তীর কথায়, “রাত জাগার ইচ্ছা থাকলে মদ্যপান একেবারেই নয়। বরং ঘণ্টায় ঘণ্টায় গ্লুকোজ় মেশানো জল খান। সুগার-প্রেসারের ওষুধ খেলে তা বন্ধ করবেন না। তা হলে রক্তে শর্করার মাত্রা আচমকা নেমে গিয়ে অন্য বিপত্তি ঘটতে পারে।”
উপোস ভাঙার পরে কী খাবেন?
পুষ্টিবিদের পরামর্শ, উপোস ভাঙার পর খিদে মরে গেলেও একেবারে খালি পেটে শুতে যাবেন না। সারা দিনের ধকলের পর কিছু না কিছু অবশ্যই মুখে দিয়ে শুতে যান। উপোসের পর ভাজাভুজি, বেশি তেলমশলা দেওয়া খাবার খাবেন না। এমন কিছু খেয়ে উপোস ভাঙুন, যাতে শর্করার পরিমাণ বেশি। খেজুর, কলা জাতীয় ফল খেয়ে উপোস ভাঙতে পারেন। এই জাতীয় ফল রক্তে শর্করার পরিমাণ বাড়িয়ে শক্তি জোগায়। এ ছাড়া খাবারের তালিকায় নারকেল, কাজুবাদাম, কাঠবাদাম, আখরোটও রাখতে পারেন।
উপোস ভাঙার পরে পর্যাপ্ত জল খেতেই হবে। প্রতি ১ ঘণ্টা অন্তর অল্প অল্প করে জল খান। বিভিন্ন রকম ফল কুচি কুচি করে কেটে জলে ভিজিয়ে ডিটক্স পানীয় তৈরি করে রাখতে পারেন। সেটি খেতে পারেন অল্প অল্প করে।
এখন অনেকেই ওট্স খান। উপোস ভাঙার পর খেতে পারেন ওট্স ক্ষীর। প্যানে সামান্য ঘি দিয়ে ওটস, দুধ এবং শুকনো ফল দিয়ে বানিয়ে ফেলুন ক্ষীর। তবে তা ঠান্ডা করে খেলেই ভাল।
মিষ্টি বা পায়েস খেয়েও উপোস ভাঙতে পারেন। তবে মিষ্টি বেশি খাবেন না। সারা দিন না খাওয়ার পর বেশি মিষ্টি খেয়ে ফেললেই গা গুলোতে পারে।
সাবুও খেতে পারেন। সাবুর সঙ্গে কলা ও কিছু ফল মিশিয়ে নিন। তা হলে শরীরের আর্দ্রতা বজায় থাকবে।