দুপুরে খাওয়ার পর ২০-৩০ মিনিট ঘুমিয়ে নিলে উন্নত হয় স্মৃতিশক্তি। ছবি: সংগৃহীত
দুপুরে ভরপেট খাওয়ার পর কোথা থেকে যেন একরাশ ঘুম এসে ঘিরে ধরে। অফিসে থাকলে ঘুমানোর সুযোগ থাকে না। তবে বাড়িতে থাকলে ঘুম আটকায় কার সাধ্যি! বাঙালির কাছে ভাত ঘুমের একটা আলাদাই কদর আছে। আসলে শর্করাজাতীয় খাবার খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই অগ্ন্যাশয় গ্রন্থি রক্তে ইনসুলিন হরমোন ক্ষরণ করতে শুরু করে। ভাত শর্করাজাতীয় খাবার। ভাত খেলে ইনসুলিন ক্ষরণ হয়। রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা ছাড়াও ইনসুলিনের আরও একটি কাজ আছে। ইনসুলিনের প্রভাবে ‘ট্রিপটোফ্যান অ্যামাইনো অ্যাসিড’ মস্তিষ্কে ‘সেরোটোনিন’-কে সক্রিয় করে তোলে। সেরোটনিন এক প্রকার নিউরোট্রান্সমিটার। যা স্নায়ুর উপর কাজ করে। সেরাটোনিনের প্রভাবেই তাই ভাত খেলে ঘুম পায়।
অনেকের ধারণা ভাতঘুম দিলে বাড়তে পারে ওজন। দেখা দিতে পারে হজমের সমস্যা। তবে খাওয়ার পর কিছু ক্ষণ ঘুমিয়ে নিলে শরীরের উপকারই হবে।
১) গবেষণা বলছে ঘুম কম হলে শরীরে কর্টিসল হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে যেতে পারে। এই হরমোন মূলত স্ট্রেস হরমোন নামেই পরিচিত। এর প্রভাবে মানসিক চাপ গ্রাস করতে পারে। খাওয়ার পর ঘুম পেলে তা না আটকানোই ভাল। এতে মন ও মস্তিষ্ক দুই-ই স্থির এবং শান্ত থাকবে। মানসিক চাপও কমবে।
শরীর চাঙ্গা ও সতেজ রাখতে সমান উপকারী ভাতঘুম। ছবি: সংগৃহীত
২) যে কোনও কাজ করার ক্ষেত্রে মনোসংযোগ ভীষণ ভাবে প্রয়োজন। তার জন্য দরকার পর্যাপ্ত ঘুম। খাওয়ার পর ঘুম পেলে নির্দ্বিধায় ঘুমিয়ে পড়ুন। কিছু ক্ষণের এই ঘুম পরবর্তী সব কাজ করার ক্ষেত্রে মনোযোগী করে তুলবে। শরীর চাঙ্গা ও সতেজ রাখতে সমান উপকারী ভাতঘুম।
৩) দুপুরে খাওয়ার পর ২০-৩০ মিনিট ঘুমিয়ে নিলে উন্নত হয় স্মৃতিশক্তি। মন-মেজাজও ভাল থাকে।
৪) যাঁরা উচ্চ রক্তচাপের সমস্যায় ভুগছেন, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে দুপুরে খাওয়ার পর কিছু ক্ষণ বিশ্রাম নেওয়ার ছলে ঘুমিয়ে নিতে পারেন। তবে খাওয়ার পর কিছু ক্ষণ হাঁটাহাঁটি করা প্রয়োজন। এতে হজমও ভাল হয়।
৫) ডায়াবিটিস, থাইরয়েড, পিসিওডি-র সমস্যা থাকলেও দুপুরের ভাতঘুম শরীর ভাল রাখতে বেশ কার্যকরী হতে পারে।