কী বলছে হৃদ্স্পন্দনের হার? ছবি- সংগৃহীত
কোভিড হানার পর অনেকেই দেহে অক্সিজেনের মাত্রা মাপার জন্য ‘পাল্স অক্সিমিটার’ যন্ত্র কিনেছিলেন। এই যন্ত্রে যেমন বাড়ি বসেই মাপা যায় শরীরের অক্সিজেনের মাত্রা, তেমনই তাতে ধরা পড়ে হৃদ্স্পন্দনের হারও। হৃদ্স্পন্দনের অস্বাভাবিক হার হৃদ্রোগের প্রাথমিক লক্ষণ। ক্লান্তি, ঝিমুনি, বুক ধড়ফড় করা, শ্বাসকষ্ট— সবই এর লক্ষণ। তাই শরীর কেমন আছে তা বুঝতে অত্যন্ত কার্যকর হৃদ্স্পন্দনের হার। জানান দিতে পারে সুপ্ত কোনও শারীরিক অসুস্থতার কথাও।
বিশেষজ্ঞদের অনেকেই বলছেন, একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষের ক্ষেত্রে হৃদ্স্পন্দনের হার স্বাভাবিক অবস্থায় প্রতি মিনিটে ৭২ বারের মতো হয়। তবে হৃদ্স্পন্দনের হার কিছু ক্ষেত্রে বেশি-কম হতে পারে। ব্যক্তি ভেদে প্রতি মিনিটে হতে পারে ৬০ থেকে ১০০-বারও। যাঁরা পেশাগত ভাবে খেলাধুলা কিংবা শরীরচর্চা করেন তাঁদের হৃদস্পন্দনের হার সাধারণ ভাবে অপেক্ষাকৃত কম হয়।
স্বাভাবিকের তুলনায় কম বা বেশি হৃদ্স্পন্দনের হার একাধিক অসুস্থতার উপসর্গ হতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে হৃদ্স্পন্দনের হার কম হওয়ায় পিছনে একাধিক কারণ থাকতে পারে। হৃদ্যন্ত্রের যে অংশটি হৃদ্স্পন্দনের উৎস তাকে ‘সাইনো অ্যাট্রিয়াল নোড’ বলে। এই অংশটি ঠিক ভাবে কাজ না করলে হৃদ্স্পন্দনের হার কমে যেতে পারে। এটি হৃদ্রোগের অন্যতম লক্ষণ। ফলে যন্ত্রে যদি হৃদ্স্পন্দনের হার কম দেখা যায় তবে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে দেরি না করে।শুধু হৃদ্যন্ত্রের সমস্যাই নয়, টাইফয়েড রোগে কিংবা থাইরয়েড গ্রন্থির সমস্যাতেও এমন ঘটনা ঘটতে পারে। রক্তে পটাশিয়ামের পরিমাণ বেড়ে গেলেও হৃদ্যন্ত্রে এমন সমস্যা দেখা দিতে পারে।
হৃদ্স্পন্দনের হার কমে যাওয়ার মতোই তা স্বাভাবিকের থেকে বেড়ে যাওয়াও বিপদের সঙ্কেত। ছবি- প্রতীকী
হৃদ্স্পন্দনের হার কমে যাওয়ার মতোই তা স্বাভাবিকের থেকে বেড়ে যাওয়াও বিপদের সঙ্কেত। সাধারণত জ্বর হলে বেড়ে যায় হৃদ্স্পন্দনের হার। সংবহনতন্ত্রের একাধিক সমস্যাও বাড়িয়ে দিতে পাররে এই হার। রক্তাল্পতা ও হাঁপানির মতো সমস্যাতেও অনেক সময় একই লক্ষণ দেখা দিতে পারে।বিশ্বে প্রতি বছর সবচেয়ে বেশি মানুষের মৃত্যুর কারণ হল হৃদ্রোগ। কাজেই এই ধরনের সমস্যা উপেক্ষা করা একেবারেই অনুচিত। বর্তমানে হৃদ্স্পন্দন মাপার জন্য বিশেষজ্ঞ হওয়ায় প্রয়োজন হয় না। কাজেই যদি এই ধরনের সমস্যা দেখা দেয়, তবে অবিলম্বে নিতে হবে চিকিৎসকের পরামর্শ।