নারীর ক্ষেত্রে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হওয়ার আগে বুকে ব্যথার মতো উপসর্গ দেখা যায় না। প্রতীকী ছবি।
হৃদ্রোগের সমস্যা ইদানীং বেড়ে গিয়েছে। একের পর এক হার্ট অ্যাটাকের ঘটনা ঘটেই চলেছে। যে কোনও বয়সেই হানা দিতে পারে এই রোগ। হালের কিছু গবেষণা জানাচ্ছে, পুরুষদের তুলনায় মহিলাদের হৃদ্রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি। মানসিক চাপ আর দৈনন্দিন যাপনের কিছু অভ্যাসের মধ্যে অনেক সময়ই নিহিত থাকে হৃদ্রোগের কারণ। ‘সেন্টার অফ ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন’ অনুসারে, আমেরিকায় প্রতি পাঁচ জন মহিলার মধ্যে এক জন হার্ট অ্যাটাকের কারণে মারা যান। গত বছর ‘দ্য ল্যানসেট’-এ প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনেও বলা হয়েছে, ভারত-সহ আরও কয়েকটি দেশে মহিলাদের মধ্যে কার্ডিয়োভাসকুলার রোগ বাড়ছে।
পুরুষ আর মহিলাদের মধ্যে হৃদ্রোগের উপসর্গগুলি অধিকাংশ ক্ষেত্রেই আলাদা হয়। বিভিন্ন সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, নারীর ক্ষেত্রে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হওয়ার আগে বুকে ব্যথার মতো উপসর্গ দেখা যায় না। এ ক্ষেত্রে মূলত ক্লান্তি, শ্বাসকষ্ট, কাঁধ ও ঘাড়ে ব্যথার মতো উপসর্গগুলিই প্রকট হয়। একটা বয়সের পর মহিলাদের ঋতুবন্ধ হয়। চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, ঋতুবন্ধের আগের এবং পরের উপসর্গের সঙ্গে হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণগুলি গুলিয়ে ফেলেন অনেকেই। এতেই বাড়ে বিপদের ঝুঁকি। বুকে ব্যথা, ঘাড়ে ব্যথা, দরদর করে ঘাম হওয়া, বদহজম এবং অম্বল, নিশ্বাস নিতে সমস্যা হওয়া, মাথা ঘোরা, চরম ক্লান্তি, রাতে বেশি মাত্রায় ঘাম হওয়া— মহিলাদের ক্ষেত্রে এগুলি মূলত হার্ট অ্যাটাকের প্রধান কিছু উপসর্গ। ঋতুবন্ধের উপসর্গগুলিও খানিকটা এমনই— ঠান্ডা লাগা, রাতে ঘাম হওয়া, বুক ধড়ফড় করা, হৃদ্স্পন্দন বেড়ে যাওয়া, বুকে ব্যথা। চিকিৎসকদের মতে, ঋতুবন্ধের পর হার্ট অ্যাটাক হওয়ার ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি থাকে। কারণ ঋতুবন্ধের পর উচ্চ রক্তচাপ, কোলেস্টেরলের আশঙ্কা অনেক বেশি। হৃদ্রোগের আশঙ্কা বাড়ায় এই সমস্যাগুলি। তাই ঋতুবন্ধের আগে কিংবা পরে, যখনই এই সব উপসর্গ অনুভব করবেন, ফেলে না রেখে অতি অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।