Flesh Eating Bacteria

মাংসখেকো ব্যাক্টেরিয়ার সংক্রমণ জাপানে! শরীরে ঢুকলে ৪৮ ঘণ্টায় নিশ্চিত মৃত্যু

জাপানে এক হাজারের বেশি আক্রান্ত ভয়ানক ব্যাক্টেরিয়ার সংক্রমণে। প্রাণঘাতী এই ব্যাক্টেরিয়ার উপদ্রব নিয়ে উদ্বিগ্ন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ জুন ২০২৪ ১৬:৪২
Share:

সংক্রামক ব্যাক্টেরিয়া ছড়াচ্ছে জাপানে। ছবি: ফ্রিপিক।

মগজখেকো অ্যামিবার কথা আমরা শুনেছি। জল থেকে নাকেমুখে ঢুকে গিয়ে মস্তিষ্কে সংক্রমণ ছড়ায়। ভারতেও অ্যামিবার দাপট বেড়েছিল গত বছরে। কিন্তু মাংসখেকো ব্যাক্টেরিয়া?

Advertisement

হ্যাঁ, ঠিকই শুনছেন। এমন এক ধরনের ব্যাক্টেরিয়া, যা মানবশরীরে ঢুকলে মাংস একেবারে চিবিয়ে খাচ্ছে। জাপানে এমনই এক ব্যাক্টেরিয়া হানা দিয়েছে যার জ্বালায় অতিষ্ঠ হাজার হাজার মানুষ। শরীরে ঢুকলেই এই ব্যাক্টেরিয়া মারাত্মক সংক্রমণ ছড়াচ্ছে। এরই মধ্যে আক্রান্তের সংখ্যা এক হাজার ছাড়িয়ে গিয়েছে। চরম আতঙ্কে জাপানের মানুষজন।

মাংসখেকো ব্যাক্টেরিয়া যে সংক্রমণ ছড়াচ্ছে, তাকে চিকিৎসার পরিভাষায় বলা হয় ‘স্ট্রেপটোকক্কাল টক্সিক শক সিনড্রোম’। জাপানের ‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ইনফেকশিয়াস ডিজিজ়’-এর গবেষক কেন কিকুচি জানিয়েছেন, চলতি বছরের গোড়া থেকেই এমন ব্যাক্টেরিয়া ছড়াতে শুরু করেছিল জাপানে। প্রথমে এক জন বা দু’জন সংক্রমিত রোগীর খোঁজ মিলছিল, কিন্তু এখন তা এক হাজার ছাড়িয়ে গিয়েছে।

Advertisement

এই ব্যাক্টেরিয়া খুবই সংক্রামক ও প্রাণঘাতী বলেই দাবি করেছেন কিকুচি। তাঁর মতে, এটি খুব দ্রুত বিভাজিত হয়ে সংখ্যায় বাড়তে পারে। মানবশরীরে এই ব্যাক্টেরিয়া ঢুকে যদি বংশবিস্তার করতে শুরু করে তা হলে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে মৃত্যু হতে পারে। আগে থেকেই যাঁরা বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত, তাঁদের ক্ষেত্রে এই ব্যাক্টেরিয়ার সংক্রমণ প্রাণঘাতী হতে পারে।

জাপানের স্বাস্থ্য দফতরের রিপোর্ট বলছে, গত বছরও মাংসখেকো স্ট্রেপটোকক্কাল ব্যাক্টেরিয়ায় আক্রান্ত হয়েছিলেন অনেক মানুষ। এ বছর সেই সংখ্যাটা আরও বেড়েছে। জাপানি গবেষক কিকুচি বলছেন, শরীরে ব্যাক্টেরিয়া ঢুকলে সবচেয়ে আগে পা ফুলে যাওয়ার লক্ষণ দেখা দেয়। পায়ে ব্যথা, পায়ের পাতা ফুলে যাওয়া, পায়ের আঙুলেও ক্ষত দেখা দিতে পারে। তার পর ব্যথা শুরু হয় হাঁটুতে। পাশাপাশি সারা গায়ে র‌্যাশ, গলা ব্যথার উপসর্গও দেখা দিতে থাকে। ধীরে ধীরে বুকে চাপের মতো অনুভূতি হয়। আচমকা কমে যেতে পারে রক্তচাপ। তীব্র শ্বাসকষ্ট শুরু হতে পারে। তলপেটে ব্যথা হতেও দেখা গিয়েছে অনেকের। ব্যাক্টেরিয়ার সংক্রমণ নিয়ে অনেক রোগীই ভর্তি আছেন হাসপাতালে, যাঁদের রোগের লক্ষণ দেখা দেওয়ার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই শরীরের নানা অঙ্গ বিকল হয়ে গিয়েছে।

জাপানে প্রাণঘাতী ব্যাক্টেরিয়ার সংক্রমণ নিয়ে উদ্বিগ্ন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও। এই ব্যাক্টেরিয়াকে প্রতিরোধ করার উপায় খুঁজে বের করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন গবেষকরা। মার্কিন সেন্টার ফর ডিজিজ় কন্ট্রোল তাদের রিপোর্টে জানিয়েছে, ‘স্ট্রেপটোকক্কাল টক্সিক শক সিনড্রোম’ নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে, সকলের শরীরে একই রকম রোগের লক্ষণ দেখা দিচ্ছে না। এমন অনেক রোগীকে পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে, ব্যাক্টেরিয়ার সংক্রমণে তাঁদের কিডনি বিকল হয়ে গিয়েছে। এমনকি হার্টের সমস্যা হতেও দেখা গিয়েছে।

করোনা পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন ধরনের ভাইরাস ও ব্যাক্টেরিয়ার বাড়বাড়ন্ত হয়েছে। তাদের কিছু প্রাণঘাতী, কিছু নয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ, যে কোনও রকম ব্যাক্টেরিয়ার সংক্রমণ থেকে বাঁচতে হলে জনবহুল জায়গায় মুখে মাস্ক পরতেই হবে। এই ধরনের ব্যাক্টেরিয়া মানুষের থুতু বা লালা, হাঁচি, কাশির মাধ্যমে ছড়াতে পারে। তাই পারস্পরিক দূরত্ব মেনে চলাও জরুরি। পাশাপাশি এর কবল থেকে বাঁচতে ভাল করে হাত ধোওয়া, পরিচ্ছন্ন থাকাও খুব জরুরি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement