খাবার হজমের সময়ে ইউরিক অ্যাসিড তৈরি হয়। ছবি: শাটারস্টক।
পায়ের আঙুলে ব্যথা, গোড়ালিতে কিংবা নানা অস্থিসন্ধি ফুলে গিয়ে অসহ্য যন্ত্রণা— এই সব শারীরিক অসুবিধা আমাদের কাছে নতুন নয়। বরং কর্মব্যস্ত জীবন ও পরিবর্তিত খাদ্যাভ্যাস যে সব অসুখকে আরও বড় আকারে ডেকে আনছে, তার মধ্যে অন্যতম রক্তে ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ বেড়ে যাওয়া।
খাবার হজমের সময়ে ইউরিক অ্যাসিড তৈরি হয়। এটা মূত্রের স্বাভাবিক উপাদান। মাত্রাতিরিক্ত প্রোটিন খেলে বা ওজন বাড়লে কখনও কখনও ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ বেড়ে যায়। বাড়তি ইউরিক অ্যাসিড শরীরের অস্থিসন্ধি ও মূত্রনালীতে থিতিয়ে পড়ে সমস্যার সৃষ্টি করে। থিতিয়ে পড়া ইউরিক অ্যাসিড ক্রিস্টালের আকার নেয়। এটি গাঁটে ব্যথা ও প্রস্রাবের সংক্রমণ ডেকে আনে। এ ছাড়া, কিডনিতে পাথরও জমতে পারে। শরীরে এই রোগ ধরা পড়লে খেয়াল রাখতে হবে, এমন খাবার খাওয়া চলবে না, যাতে ওজন বেড়ে যায়। ইউরিক অ্যাসিড বাড়লে পর্যাপ্ত পরিমাণে জল খেতে হবে। দিনে সাড়ে ৩ থেকে ৪ লিটার জল খেলে, ইউরিক অ্যাসিড মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।
মূলত হাড় ও কিডনির উপরেই ইউরিক অ্যাসিড বেশি প্রভাব ফেলে। খাওয়াদাওয়ায় একটু হ্রাস টানলেই এই সমস্যা এড়ানো সম্ভব। ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ যাতে নিয়ন্ত্রণে থাকে, তার জন্য দৈনিক খাদ্যতালিকা থেকে বাদ দিতে হবে কয়েকটি খাবার। সেগুলি কী কী?
স্যাচুরেটেড ফ্যাট আছে, এমন খাবার এড়িয়ে চলুন।
১) সবেদা অনেকেরই প্রিয় ফল। তবে শরীরে যদি বাসা বেঁধে থাকে ইউরিক অ্যাসিড, তা হলে এই ফল বেশি না খাওয়াই ভাল। কারণ সবেদায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফ্রুকটোজ। ফ্রুকটোজ শরীরে ইউরিক অ্যাসিড বাড়িয়ে দিতে পারে।
২) স্যাচুরেটেড ফ্যাট আছে, এমন খাবার এড়িয়ে চলুন। ইউরিক অ্যাসিডে সুস্থ থাকতে রেড মিট, উচ্চ ফ্যাটযুক্ত দুগ্ধজাত খাবার পাতে রাখবেন না।
৩) নিয়মিত মদ্যপান করেন? ইউরিক অ্যাসিড থাকলে এখনই মদ্যপানের অভ্যাস ছেড়ে দিন। অতিরিক্ত অ্যালকোহল শরীরে ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ বাড়িয়ে দিতে পারে।
৪) প্রতি দিনের খাদ্যতালিকায় প্রোটিনের পরিমাণ কমান। সামুদ্রিক মাছ, মুরগির মাংসের বদলে পাতে বেশি করে রাখুন ফল, সবুজ শাকসব্জি। নিয়ন্ত্রণে থাকবে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা।
৫) অনেকেই হয়তো জানেন না, তেঁতুল বাড়িয়ে দিতে পারে ইউরিক অ্যাসিডের সমস্যা। ভিটামিন সি-তে সমৃদ্ধ এই ফল স্বাস্থ্যকর হলেও ইউরিক অ্যাসিডের সমস্যায় ভোগা রোগীদের জন্য উপকারী নয়।