ট্রাইগ্লিসারাইড বাড়লেই হৃদ্রোগের ঝুঁকি বাড়বে। ছবি: ফ্রিপিক।
কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার বেশি খেলেই তা লিভারে গিয়ে ট্রাইগ্লিসারাইড তৈরি হয়। একধরনের চর্বি যার প্রয়োজনীয়তা আছে শরীরে। কিন্তু যদি তা মাত্রাতিরিক্ত হয়ে যায়, তখনই বিভিন্ন অসুখ-বিসুখের কারণ হয়ে ওঠে। ভাত, আলুর মতো অতিরিক্ত সুক্রোজ় জাতীয় খাবার খেলে রক্তে ট্রাইগ্লিসারাইড বাড়তে পারে। আবার অ্যালকোহল, কফি— এমন কিছু পানীয় অতিরিক্ত পরিমাণে খেলেও ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা বেড়ে যায়।
ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা বেশি থাকলে হৃদ্রোগের ঝুঁকি হতে পারে। শরীরের রক্তবহনকারী নালির দেওয়ালে ট্রাইগ্লিসারাইড জমতে থাকে। এর ফলে ওই নালিগুলি সরু হতে হতে রক্ত চলাচলও বন্ধ হয়ে যেতে পারে। হৃদ্রোগ বা ব্রেন স্ট্রোকের নেপথ্যেও কিন্তু রয়েছে অতিরিক্ত ট্রাইগ্লিসারাইড। এর কারণে কিডনির সমস্যাও হতে পারে। ট্রাইগ্লিসিরাইড যদি বেড়েই যায়, তা হলে খাওয়াদাওয়ায় নজর দিতে হবে আগে। যদি ৭ দিন নিয়ম করে কিছু খাবার খেতে পারেন, তা হলেই ট্রাইগ্লিসিরাইডের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে।
১) সয় প্রোটিন বেশি করে খেতে হবে। রেড মিট খাওয়া কমান। বদলে খান সয়াবিন। টোফুও খুব উপকারী। ট্রাইগ্লিসারাইড যদি বেড়ে যায়, তা হলে কয়েক দিন সয়া মিল্ক খেয়ে দেখুন, উপকার পাবেন।
২) মাছ খেতে হবে। রুই, কাতলা, ভেটকি, পমফ্রেট, যা সহজলভ্য, সেই মাছই খান। ছোট মাছ খাওয়া খুব ভাল। মৌরলা, পুঁটি জাতীয় মাছ রোজ খেতে পারেন।
৩) ফাইবার রাখতে হবে রোজের খাবারে। তার জন্য ওট্স খাওয়ার অভ্যাস করুন। ভাত বা রুটি কম খেয়ে, সব্জি দিয়ে ওট্স বানিয়ে খান। এর ফাইবার রক্তে শর্করার মাত্রাও নিয়ন্ত্রণ করবে। ডালিয়া, কিনোয়াও খেতে পারেন। সাদা ভাতের বদলে অন্তত সাত দিন খান ব্রাউন রাইস। তফাতটা বুঝতে পারবেন।
৪) পালং শাক ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন রয়েছে। তা ছাড়া বাঁধাকপি খেতে পারেন, যাতে আছে ভিটামিন কে। ব্রোকোলিও খাওয়া যেতে পারে এই সময়ে। তবে যে কোনও সব্জিই কম তেলে রান্না করে খেতে হবে।
৫) লেবু, মুসাম্বি, আঙুর জাতীয় ফল বেশি করে খেতে হবে। এই সব ফলে রয়েছে ভিটামিন সি, ভিটামিন বি, পটাশিয়াম, ফসফরাস, ম্যাগনেশিয়াম এবং কপার যা রক্তে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়, ভাল কোলেস্টেরলের পরিমাণ বাড়ায়।
৬) বিভিন্ন রকম বাদাম খেতে পারেন। কাঠবাদাম, আখরোট, পেস্তা খাওয়া যেতে পারে। শুকনো ফল রাখুন সঙ্গে। খুচরো খিদে মেটাতে ভাজাভুজি নয়, বাদাম ও শুকনো ফল খান। এতেও দ্রুত ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা কমবে।
৭) মদ্যপানের পরিমাণ যেন মাত্রা না ছাড়ায়। অতিরিক্ত মদ্যপান ট্রাইগ্লিসারাইড বাড়িয়ে দিতে পারে। ধূমপানের অভ্যাস ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা বেড়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ। তাই সুস্থ থাকতে ধূমপান কম করুন। ট্রাইগ্লিসারাইড কমানোর জন্য গ্রিন টি বেশ উপকারী। কফি খাওয়া একেবারে ছাড়তে হবে।
এই প্রতিবেদন সচেতনতার উদ্দেশ্যে লেখা হয়েছে। ট্রাইগ্লিসারাইড বেড়ে গেলে কী কী খাবেন আর কী নয়, তা চিকিৎসক ও পুষ্টিবিদের থেকে জেনে নেওয়াই ভাল।