ওজন বাড়ানোর পাঁচ টোটকা!
বয়স এবং উচ্চতা অনুযায়ী সঠিক ওজন থাকাই সুস্বাস্থ্যের লক্ষণ। অতিরিক্ত ওজন যেমন স্বাস্থ্যের জন্য খারাপ, তেমনই স্বাভাবিকের চেয়ে কম ওজন থাকাও ঠিক নয়। ওজন ঝরানোর জন্য যেখানে বহু মানুষ শরীরচর্চা ও কড়া ডায়েট মেনে চলছেন, অনেক মানুষ এমনও আছেন যাঁরা ওজন বাড়ানোর জন্য ভীষণ চেষ্টা করছেন। তবে ওজন বাড়াতে গিয়ে কোনও অসুখ যেন আপনার শরীরে বাসা না বাঁধে, নজরে রাখতে হবে সেই দিকটিও।
আপনার ‘বডি মাস ইনডেক্স’ (বিএমআই) যদি ১৮.৫ এর নীচে থাকে, তা হলে মনে করা হয় ওজন স্বাভাবিকের থেকে কম। বিএমআই যদি ২৫-এর বেশি হয়, তা হলে আপনার ওজন স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি বলে মনে করা হয়। বিএমআই ৩০-এর বেশি হয়ে গেলে তা ওবেসিটির লক্ষণ বলে গণ্য করা হয়।বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে, যাঁদের ওজন স্বাভাবিকের তুলনায় কম, তাঁদের সময়ের আগে মৃত্যুর আশঙ্কা স্থূলদের তুলনায় ৫০ শতাংশ বেশি। এমন মানুষের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকে। ভাইরাস ও ব্যাক্টেরিয়া সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে। তাঁদের মধ্যে হাড়জনিত অসুখের প্রবণতাও বেশি। এমনকি, অনেকের ক্ষেত্রে বন্ধ্যত্বের সমস্যাও দেখা যায়।
কোন কোন রোগ শরীরে বাসা বাঁধলে ওজন হঠাৎ কমে যেতে পারে?
টাইপ-১ ডায়াবিটিসের ক্ষেত্রেও রোগীদের ওজন কমে যাওয়ার মতো সমস্যা হয়। এ ছাড়া, মানসিক অবসাদ কিংবা ক্যানসার শরীরে বাসা বাঁধলেও ওজন কমে যেতে পারে। থাইরয়েডের মাত্রা বেড়ে গেলে বিপাকহার অনেক বেড়ে যায়, সে ক্ষেত্রে ওজন কমে যেতে পারে।
ডায়াবিটিস থাকলে শরীরের ক্ষতি না করে ওজন বাড়াবেন কী করে?
১) ওজন বাড়াতে হলে সারা দিনে আপনি যত ক্যালোরি ঝরাচ্ছেন, তার তুলনায় ৩০০-৫০০ ক্যালোরি বেশি গ্রহণ করতে হবে। ওজন বাড়াতে চাইলে অবশ্যই উচ্চ ক্যালোরিযুক্ত খাবার বেশি করে খেতে হবে। রোজের ডায়েটে কাঠবাদাম, কাজুবাদাম, আখরোট, পেস্তা, চিনাবাদাম, খেজুর, কিশমিশ, আলুবখরা, ফুলক্রিম দই, পনির, ক্রিম, মুরগির মাংস, ডিম, মাছ, আ্যভোকাডো, পিনাট বাটারের মতো খাবার রাখতে পারেন।
প্রতীকী ছবি
২) যাঁদের ওজন কম, তাঁদের অবশ্যই মোট ক্যালোরির শতকরা ৫০-৬০ ভাগ শর্করা গ্রহণ করতে হবে। ডায়াবিটিস থাকলে মাথায় রাখতে হবে যে সব কার্বহাইড্রেটে ‘গ্লাইসেমিক ইনডেক্স’-এর মাত্রা কম, তেমন খাবার খেতে হবে। সারা দিন ছয় ভাগে ভাগ করে খাবার খান। একবারে অনেকটা কার্বোহাইড্রেট রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে। খাবার খাওয়ার আগে জল খাওয়া চলবে না। তা হলেই পেট ভরে যাবে আর বেশি খেতে পারবেন না।
৩) ফ্যাট জাতীয় খাদ্যের তুলনায় প্রোটিন বেশি পরিমাণে খেতে হবে। প্রোটিন পেশির ওজন বাড়াতে সাহায্য করবে। পেশি মজবুত হবে। কর্মদক্ষতাও বাড়াবে। বেশি ফ্যাট খেলে আপনার শরীরে মেদ জমবে, যা স্বাস্থ্যের পক্ষে একেবারেই ভাল নয়।
৪) দুধ খেতে হবে বেশি করে। দুধ খেতে সমস্যা হলে তার পরিবর্তে দই খান।
৫) ওজন বাড়ানোর সময়ে একসঙ্গে অনেক খাবার খাওয়া উচিত নয়। একসঙ্গে অনেকটা খাবার খাওয়ার পরিবর্তে অল্প অল্প করে খাবার বেশি বার খেতে থাকুন। তাতে খাবার হজম হবে সঠিক ভাবে। রোজ নিয়ম করে শর্করার মাত্রা পরিমাপ করতে হবে।