চোখ ভাল রাখার সহজ উপায় ছবি: সংগৃহীত
কম্পিউটার ও ল্যাপটপের প্রসারের সঙ্গে সরকারি ও বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত একটি বড় সংখ্যক কর্মীকে কাজ করতে চোখ রাখতে হয় বৈদ্যুতিন পর্দায়। এমনকি, শিক্ষাঙ্গনেও পড়াশোনার মাধ্যম হিসাবে ক্রমশ ল্যাপটপ, মোবাইল কিংবা ট্যাবলেট গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। আর এই সব কিছুর বাইরে তো মোবাইল রয়েছেই। অবসর যাপন কিংবা নেটমাধ্যমে সামাজিকতা রক্ষা, দিনের একটি বড় সময় কাটে মোবাইলের পর্দায় চোখ রেখে। ফলে সব মিলিয়ে ক্রমশই বাড়ছে বৈদ্যুতিন পর্দায় চোখ রাখার গড় সময়। বৈদ্যুতিন পর্দায় চোখ রাখার সময়ের এই অস্বাভাবিক বৃদ্ধি মারাত্মক বিপদ ডেকে আনতে পারে চোখ ও অন্যান্য ইন্দ্রিয়ের। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দীর্ঘ সময় ধরে চোখের উপর চাপ পড়ার ফলে দেখা দিতে পারে মাথা যন্ত্রণা, অস্বচ্ছ দৃষ্টি, ঘাড়ের ব্যাথা, চোখের শুষ্কতা ও মনোযোগের সমস্যার মতো সমস্যা। দেখা দিতে পারে স্নায়ুরোগ ও অনিদ্রার সমস্যাও। তাই নিয়মিত চোখের যত্ন নেওয়া অত্যন্ত প্রয়োজন।
প্রতীকী ছবি। ছবি: সংগৃহীত
১। নির্দিষ্ট দূরত্ব রক্ষা: বিশেষজ্ঞদের মতে, বৈদ্যুতিন পর্দা থেকে চোখের ব্যবধান হতে হবে অন্তত ২৫ ইঞ্চি। এর থেকে কম দূরত্বে চোখের উপর অতিরিক্ত চাপ পড়ে। বিশেষত দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করলে অনেকটাই বাড়ে সমস্যা। পাশাপাশি, চোখের থেকে বৈদ্যুতিন পর্দা রাখতে হবে একটু নীচে।
২। ২০-২০ নিয়ম: শরীর সুস্থ রাখতে যেমন নিয়মিত শরীরচর্চার প্রয়োজন তেমনই চোখ ভাল রাখতেও করতে হবে চোখের ব্যায়াম। এই ক্ষেত্রে মেনে চলতে পারেন ২০-২০ নিয়ম। এই নিয়ম অনুসারে কুড়ি মিনিট একটানা পর্দার দিকে তাকিয়ে থাকার পর অন্তত কুড়ি সেকেন্ড কুড়ি ফুট দূরত্বের কোনও বস্তুর দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে। পাশাপাশি, বারবার চোখের পলক ফেলাও জরুরি।
৩। ঠিক পর্দা: যাঁদের বৈদ্যুতিন পর্দায় চোখ রাখা ছাড়া উপায় নেই, তাঁদের জন্য ক্ষেত্রে ঠিক পর্দা বেছে নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। অতিরিক্ত ছোট পর্দা ও অস্বাভাবিক আলো চোখের উপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। পাশাপাশি, পর্দার হরফও বড় মাপের হওয়াই বাঞ্ছনীয়। যথোপযুক্ত আলো রয়েছে এমন স্থানে রাখতে হবে কম্পিউটার বা ল্যাপটপ।
৪। পর্যাপ্ত জল: দীর্ঘ ক্ষণ কম্পিউটারের পর্দায় একটানা তাকিয়ে থাকলে দেখা দিতে পারে ‘কম্পিউটার ভিশন সিনড্রোম’। কম্পিউটার বা ল্যাপটপের পর্দা যেহেতু দ্রুত পরিবর্তিত হয়, তাই বারবার কেন্দ্রিভূত করতে হয় দৃষ্টি। এতে চোখের পেশী ও স্নায়ুর উপর চাপ পড়ে। এক ভাবে পর্দার দিকে তাকিয়ে থাকলে কমে চোখের পলক পড়ার সংখ্যা। ফলে দ্রুত শুকিয়ে যায় চোখ। তাই নিয়মিত চোখে জল দেওয়া ও নিয়মিত জল পান করা অত্যন্ত জরুরি।
৫। চক্ষু পরীক্ষা: যাঁরা নিয়মিত কম্পিউটার বা ল্যাপটপে কাজ করেন, তাঁদের নিয়মিত চোখ পরীক্ষা করাতে হবে। পাশাপাশি, এখন বিশেষ ধরনের চশমা পাওয়া যায় যা বৈদ্যুতিন পর্দা থেকে নির্গত ক্ষতিকর রশ্মি থেকে চোখকে রক্ষা করে। প্রয়োজনে পড়তে হবে নীল ও অতিবেগুনি রশ্মি প্রতিরোধক চশমা।