মরসুম বদলের জ্বর না কি ডেঙ্গি বাসা বেঁধেছে শরীরে? ছবি: সংগৃহীত।
রাজ্য জুড়ে ফের বেড়েছে ডেঙ্গির দাপট। এই মরসুমে ভাল থাকার একটাই উপায়— মশার হাত থেকে বাঁচা। শহরাঞ্চলের বাসিন্দাদের মশারির সঙ্গে আড়ি বহু দিন। ডেঙ্গির প্রকোপ বেড়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ এটিও। তাই জ্বর হলে ফেলে না রাখাই ভাল। আপাত ভাবে দেখলে সাধারণ জ্বরের সঙ্গে ডেঙ্গির জ্বরের খুব বেশি তফাত নেই। মরসুম বদলের জ্বর না কি ডেঙ্গি বাসা বেঁধেছে শরীরে, তা বুঝে ওঠার আগেই তাই অনেকটা দেরি হয়ে যাচ্ছে। সাধারণ ভাইরাল জ্বরের সঙ্গে ডেঙ্গিকে গুলিয়ে ফেলে অবহেলা করে অনেক সময়ে রোগীর গুরুতর সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা থাকে।ভাইরাল জ্বরের ক্ষেত্রে সর্দি, গলাব্যথা, শরীরে হালকা ব্যথা, দুর্বলতার মতো উপসর্গ থাকতে পারে। তবে ডেঙ্গি রোগীদের জ্বরের তীব্রতা অনেক বেশি হয়। জ্বর আসার ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সারা গায়ে লাল লাল ফুসকুড়ি হতে থাকে। এর সঙ্গে গাঁটে গাঁটে যন্ত্রণাও শুরু হয়। অনেকের ক্ষেত্রে বমিও শুরু হয়। তাই জ্বরের সঙ্গে এই লক্ষণগুলি দেখলেই সতর্ক হোন। বাড়াবাড়ি রকমের সমস্যা না হলেও ডেঙ্গি রোগী বাড়িতে রেখেও সুস্থ করা যায়।
এই সময় রক্তে প্লাজমা ও অণুচক্রিকার মাত্রা কমে যায়। ছবি: সংগৃহীত।
ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হলে কী করে রোগীর যত্ন নেবেন?
১) ডেঙ্গি হলে শরীরে জলের ঘাটতি হয়। চিকিৎসকের পরামর্শে জ্বরের ওষুধ খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বারে বারে জল ও জলীয় খাবার খেতে হবে। শরবত, ফলের রস, পাতলা ঝোল, ডাল, স্যুপ, লিকার বারে বারে দিতে হবে রোগীকে।
২) এই সময় রক্তে প্লাজমা ও অণুচক্রিকার মাত্রা কমে যায়। তাই ডায়েটে বেশি করে মরসুমি ফল, ভিটামিন-সি সমৃদ্ধ ফল ও শাক-সব্জি বেশি করে রাখতে হবে রোগীর ডায়েটে।
৩) প্রতি ৩ ঘণ্টা অন্তর অন্তর জ্বর মাপুন। ডেঙ্গি হলে রক্তচাপ কমে যাওয়ার প্রবণতা বাড়ে। তাই রোজ নিয়ম করে সেটাও মাপতে হবে। জ্বর হলে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া প্যারাসিটামল ওষুধ দেবেন না।
৪) কোভিডের মতো ডেঙ্গি রোগীকেও নিভৃতবাসে থাকতে হবে। এই সময় মশারি ব্যবহার করাই শ্রেয়।
ডেঙ্গিত শক সিনড্রোম থেকে জলশূন্যতা তৈরি হয় শরীরে। এই রকম হলে সঙ্গে সঙ্গে পাল্স রেট অনেকটা বেড়ে যায় এবং রক্তচাপ খুব কমে যায়। শরীর ঠান্ডা হয়ে যায়। শ্বাস-প্রশ্বাস খুব দ্রুত চলে। রোগী অস্থির হয়ে ওঠেন। তখন সময় নষ্ট না করে কাছেপিঠের হাসপাতালে ভর্তি করানো উচিত।