ফিটিকিরি দেওয়া জলে স্নান করলে কী হবে? ছবি: সংগৃহীত।
খাওয়ার জল পরিস্রুত করতে ফিটকিরি ব্যবহার করার চল বহু পুরনো। জলের মধ্যে থাকা জীবাণু দূর করতে এই উপাদানটি বেশ কাজের। দাড়ি কামাতে গিয়ে নতুন ব্লেডে কেটে-ছড়ে গেলেও ফিটকিরির ব্যবহার আজও রয়েছে। কারণ, ফিটকিরি নাকি প্রাকৃতিক অ্যান্টিসেপটিক হিসাবে কাজ করে! আয়ুর্বেদেও এই উপাদানটির যথেষ্ট কদর রয়েছে। চিরাচরিত এই টোটকাগুলি তো সকলেই জানেন। কিন্তু, এই উপাদানটির কিন্তু আরও অনেক গুণ রয়েছে। জেনে নিন সেগুলি কী কী?
১) ব্যথাবেদনা এবং ক্লান্তি দূর করে:
অতিরিক্ত ঘামলে শরীর ক্লান্ত হয়ে পড়ে। এই ক্লান্তি দূর করতে স্নানের জলে ফিটকিরি মিশিয়ে নেওয়া যেতে পারে। শরীরচর্চা করার পর যদি পেশিতে ব্যথা হয়, সে ক্ষেত্রেও এই টোটকা বেশ কাজে দেয়।
২) ঘামের দুর্গন্ধ দূর করে:
বোতল বোতল সুগন্ধি শেষ হয়ে যাচ্ছে, কিন্তু ঘামের দুর্গন্ধ যাচ্ছে না। ঘামের পরিমাণও দিন দিনে বেড়েই চলেছে। স্নানের জলে ফিটকিরি মিশিয়ে নিলে এই সমস্যা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে থাকবে। ঘামে দুর্গন্ধ সৃষ্টিকারী ব্যাক্টেরিয়ার বাড়বাড়ন্ত বশে রাখতে ফিটকিরি সাহায্য করে।
৩) ত্বক টান টান থাকে:
বয়সের সঙ্গে সঙ্গে পেশি দুর্বল হয়ে পড়ে। চামড়া ঝুলে যায়। ত্বকের টান টান ভাব ধরে রাখতে নিয়মিত ফিটকিরির জল দিয়ে স্নান করতে হবে। ত্বকের উন্মুক্ত রন্ধ্র বা ওপেন পোরস-এর সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে এই টোটকা।
প্রদাহজনিত ব্যথাবেদনা নিরাময়ে ফিটকিরি সাহায্য করে। ছবি: সংগৃহীত।
৪) প্রদাহজনিত সমস্যা দূর করে:
ফিটকিরির মধ্যে রয়েছে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান। যা প্রদাহজনিত ব্যথাবেদনা নিরাময়ে সাহায্য করে। ত্বকে অ্যালার্জি বা র্যাশজনিত কোনও সমস্যা হলে তা-ও নিরাময় করে ফিটকিরি।
৫) ক্ষত নিরাময় করে:
ফিটকিরি কিন্তু প্রাকৃতিক অ্যান্টিসেপটিক হিসাবেও কাজ করে। শরীরের কোথাও অল্প কেটে-ছড়ে গেলে ফিটকিরি মেশানো জলে ক্ষতস্থান ধুয়ে ফেলা যেতে পারে। অতিরিক্ত রক্তপাত হলে ফিটকিরি তা-ও বন্ধ করে দিতে পারে। ত্বকে কোনও রকম সংক্রমণ হলেও ফিটকিরি মেশানো জলে স্নান করতে বলেন চিকিৎসকেরা।
স্নানের জলে কতটুকু ফিটকিরি মিশিয়ে স্নান করবেন?
গরম থেকে মুক্তি পেতে অনেকেই স্নানের জলে কয়েক টুকরো বরফ মিশিয়ে নেন। তবে, ব্যথাবেদনা কমাতে চাইলে ঈষদুষ্ণ জলে স্নান করাই শ্রেয়। এক বালতি ঈষদুষ্ণ জলে ১ থেকে ২ চা চামচ ফিটকিরি গুঁড়ো মিশিয়ে নিতে হবে। কিন্তু সঙ্গে সঙ্গে স্নান করা যাবে না। জলের সঙ্গে ফিটকিরি পুরোপুরি মিশে যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। মোটামুটি আধ ঘণ্টা পর ওই জলে স্নান করা যেতে পারে।