ছবি: সংগৃহীত
বছর ৩২-এর সোমদত্তা। একটি বহুজাতিক সংস্থায় কর্মরতা। বিবাহিতা। বিয়ের বয়স বছর তিনেক। বেশ কিছু দিন ধরেই বিভিন্ন শারীরিক অসুস্থতার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিলেন। কাজের চাপে চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার সময় করে উঠতে পারছিলেন না। অতিরিক্ত পরিশ্রমের কারণে হতে পারে ভেবে খানিকটা এড়িয়ে যাচ্ছিলেন। শেষ পর্যন্ত পরিবারের সদস্যদের চাপে চিকিৎসকের কাছে যেতে বাধ্য হলেন। চিকিৎসক পরীক্ষা করে জানালেন যে সোমদত্তা অন্তঃসত্ত্বা। অথচ তাঁর ঋতুস্রাব বন্ধ হয়নি। অন্তঃসত্ত্বা কি না তা বোঝার প্রথম লক্ষণই হল ঋতুস্রাব বন্ধ হওয়া। সোমদত্তার ক্ষেত্রে তেমনটি হয়নি। তবে কিছু উপসর্গ দেখা দিয়েছিল।
ঋতুস্রাব বন্ধ না হলেও কী কী লক্ষণ দেখা দিলে পরীক্ষা করিয়ে নেওয়াটা জরুরি?
১) অত্যধিক ক্লান্তি: কোনও কারণ ছাড়াই সারা দিন প্রচন্ড ক্লান্ত লাগছে? হতে পারে আপনি অন্তঃসত্ত্বা। অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার প্রথম দিকে শরীর অন্য একটি প্রাণ ধারণ করার জন্য তৈরি হতে থাকে। শরীরে হঠাৎ করে প্লাসেন্টারের আগমনের কারণে বেশি করে ক্লান্ত লাগে।
কয়েকটি লক্ষণ দেখলে আপনি অন্তঃসত্ত্বা কি না তা বাড়িতেই পরীক্ষা করে নিন। ছবি: সংগৃহীত
২) রক্তক্ষরণ ও টানধরা: ঋতুস্রাব শুরু হওয়ার নির্দিষ্ট দিনের আগে হালকা রক্তক্ষরণ বা পেটে টান ধরাও অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার লক্ষণ। ভ্রূণ সঞ্চার হওয়ার প্রথম ৫ থেকে ১০ দিনের মধ্যে এমন হতে পারে। দু-এক ফোঁটা রক্তক্ষরণ দেখে অনেকে ভাবতে পারেন বুঝি ঋতুস্রাব শুরু হল। আসলে এই সমস্যার নাম ‘স্পটিং’।
৩) স্তনের পরিবর্তন: গর্ভে ভ্রূণ সঞ্চার হলে শরীরে বিভিন্ন হরমোনের পরিবর্তন হতে থাকে। ফলে স্তনও ভারী হয়ে আসতে থাকে। অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার প্রথম লক্ষণ হল নরম অথচ ভারী স্তন। হঠাৎ করে যদি এমন হয় তা হলে অতি অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ করে নিন। অথবা আপনি অন্তঃসত্ত্বা কি না তা বাড়িতেই পরীক্ষা করে নিন।
৪) বমি বমি ভাব, গন্ধের প্রতি সংবেদনশীলতা: অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার প্রথম কয়েক সপ্তাহ পেটে অস্বস্তি, বমি বমি ভাব খুবই স্বাভাবিক। শরীরে প্রোজেস্টেরন হরমোনের পরিমাণ বেড়ে গেলে তখন গা গুলিয়ে ওঠে। অন্য দিকে ইস্ট্রোজেন ও এইচসিজি হরমোনের প্রভাবে হালকা গন্ধও খুব জোরালো বলে মনে হয়। মাঝে মাঝেই বমি পায়। এ রকম সমস্যা হলে অতি অবশ্যই অন্তঃসত্ত্বা কি না তা পরীক্ষা করে নিন।
৫) ঘন ঘন প্রস্রাব: অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার প্রথম ২-৩ সপ্তাহে ঘন ঘন প্রস্রাব পাওয়া খুব স্বাভাবিক। শরীরে নতুন তৈরি হওয়া এইচসিজি হরমোন কিডনিতে রক্ত সঞ্চালন বাড়ায়। জরায়ু বড় হতে থাকলে গলব্লাডারেও তার চাপ পড়ে। ফলে ঘন ঘন প্রস্রাব পায়।