ওজন কমছে না? ছবি: সংগৃহীত।
ঘরে-বাইরে বাড়তে থাকা কাজের চাপ, উদ্বেগজনিত সমস্যা নতুন নয়। সরকারি-বেসরকারি যে সংস্থাতেই কাজ করুন না কেন, মানসিক টানাপড়েনের মধ্যে দিয়ে যেতে হয় কম-বেশি সকলকেই। শুধু কর্মক্ষেত্রই নয়, পারিবারিক জীবন, সাংসারিক জীবন, কারও কারও ক্ষেত্রে আবার শারীরিক সমস্যাও মানসিক চাপ বৃদ্ধির কারণ হতে পারে। শারীরিক অন্যান্য জটিলতার মতো মানসিক সমস্যা চোখে দেখা যায় না বলে তা নিয়ে খুব একটা মাথা ঘামান না অনেকে। মানসিক চাপ বেড়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ হল শরীরে কর্টিসল হরমোনের ক্ষরণ বৃদ্ধি।
রক্তে কর্টিসল হরমোনের পরিমাণ বেড়ে গেলে কী হতে পারে?
১) মানসিক চাপ বাড়িয়ে দিতে পারে, এমন হরমোন হল কর্টিসল। তার মাত্রা বেশি হয়ে গেলে উচ্চ রক্তচাপ, টাইপ-২ ডায়াবিটিস, অস্টিয়োপোরোসিসের মতো সমস্যা বেড়ে যেতে পারে।
২) কর্টিসল হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে গেলে বিপাকহার কমে যায়। পাশাপাশি এই হরমোনের প্রভাবে ঘন ঘন খিদে পায়। তাই হঠাৎ ওজন বেড়ে যেতে পারে কর্টিসল হরমোনের প্রভাবে।
৩) কর্টিসল শুধু মানসিক চাপ বাড়িয়ে দেয় না। অনিদ্রাজনিত সমস্যার জন্যেও দায়ী এই হরমোন।
অনিদ্রাজনিত সমস্যার জন্যেও দায়ী কর্টিসল হরমোন। ছবি: সংগৃহীত।
৪) কর্টিসল হরমোন অধিক ক্ষরণ প্রভাব ফেলে যৌনজীবনের উপরেও। এই হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে গেলে পুরুষদের লিঙ্গত্থানে সমস্যা হয়, শরীরে শুক্রাণুর সংখ্যা কমে যায়, যৌন ইচ্ছেও কমে যায়। মহিলাদের শরীরে কর্টিসল হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে গেলে ঋতুস্রাব অনিয়মিত হয়ে পড়ে, ফলে সন্তান ধারণে সমস্যা হয়।
৫) কর্টিসল হরমোরেন ক্ষরণ বেশি হলে হালকা চোট লাগলেও শরীরে কালসিটে পড়ে যায়। ছাড়া এই হরমোনের প্রভাবে মুখ কিংবা ঘাড়ের কাছে লোমের আধিক্য বাড়ে।
কর্টিসল হরমোনের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে কী কী করবেন?
১) সারা দিন বদ্ধ ঘরের মধ্যে বসে থাকলে মনমেজাজ এমনিতেই খারাপ হয়। তবে চিকিৎসকেরা বলছেন, সূর্যের আলো কর্টিসল হরমোনের ক্ষরণ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। তাই দিনের মধ্যে মাত্র আধ ঘণ্টা গায়ে রোদ লাগাতেই হবে।
২) হরমোন ক্ষরণের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে নিয়মিত শরীরচর্চা করতে বলেন চিকিৎসকেরাই। খুব পরিশ্রমসাধ্য ব্যায়াম না হলেও নিয়মিত হাঁটা, স্ট্রেচ করা, সাইকেল চালানো বা সাঁতার কাটার মতো কসরত কর্টিসল ক্ষরণের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে।
৩) মানসিক চাপ বা উদ্বেগ নিয়ন্ত্রণে রাখতে ডিপ ব্রিদিং অভ্যাস করতে বলেন অনেকেই। সুখাসনে বসে, শান্ত এবং গভীর ভাবে শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়ার পদ্ধতিকেই ডিপ ব্রিদিং বলা হয়। এই অভ্যাসে স্নায়ুর উত্তেজনা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে থাকে।